যমুনার পানি নতুন করে আবারো বেড়ে যাওয়ায় মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় ধলেশ্বরী নদীতে তীব্র ভাঙ্গনের দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যেই উপজেলার বরাইদ, তিল্লী, দিঘলীয়া ও হরগজ ইউনিয়নের প্রায় শতাধিক ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে আব্দুর রহমান খান উচ্চ বিদ্যালয়, ফয়জুন্নেসা উচ্চ বিদ্যালয়সহ উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজার। নদী ভাঙ্গনে কবলীতরা অন্যের বা আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। ভাঙ্গনের আশঙ্কায় ঘর সরিয়ে নিচ্ছেন অনেকেই। ভুক্তভোগীরা জানান, ধলেশ্বরীতে পানি বাড়ার সময় এবং পানি কমার সময় প্রতিবছর ওইসব এলাকায় ভাঙ্গন দেখা দেয়। গত কয়েকদিন ধরে ভাঙ্গনের তীব্রতা ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। ছনকা গ্রামের আবদুল জলিল বলেন, এ পর্যন্ত আমাদের প্রায় সাড়ে ২৫ শতাংশ জমি নদী গর্ভে বিলীন গিয়েছে। চলতি ভাঙ্গনে গেছে প্রায় ১০ শতাংশ জমি। এখন ভাঙ্গনের কবলে রয়েছে ৪০ শতাংশেরও বেশি বাড়ির জমি। ঘরগুলো সরিয়ে নিতে পারলেও জমি রক্ষার কোনো সম্ভাবনা হচ্ছে না। বাড়ির কিছু গাছ কেটে নেয়ার চেষ্টা চলছে।’ ওই গ্রামের আবুল কালাম বলেন, বন্যা না আসতেই ভয়াবহ ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। এমন ভয়াবহ ভাঙ্গন অন্য বছরগুলোতে হয়নি। বরাইদ ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার বলেন, মাত্র কয়েকদিনেই ভাঙ্গন কবলিত পাঁচটি ওয়ার্ডের প্রায় ৩০ টি ঘরবাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙ্গনের শিকার পরিবারগুলোর বেশিরভাগ আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিচ্ছেন। তাদের অনেক দুর্ভোগের মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে। এদিকে তিল্লী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম ধলা বলেন, ইতোমধ্যে ইউনিয়নের ১৫ টি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙ্গন কবলিত মানুষ অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়াও অর্ধশতাধিক বাড়িঘর ভাঙ্গন ঝুঁকিতে আছে। বরাদ্দ পেলে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য অর্থ সহায়তা দেয়া হবে। সাটুরিয়া উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শিউলি আক্তার বলেন, এ বছর ভাঙ্গনে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন বরাইদ ইউনিয়ন। এছাড়াও দিঘলীয়া, তিল্লীসহ কয়েকটি ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানিয়েছি। মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মাঈন উদ্দিন বলেন, ভাঙন রোধে বরাইদ ও তিল্লী এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। আরো নতুন ভাঙন কবলিত এলাকা চিহ্নিত করা হচ্ছে।