কোরবানীতে পাহাড়ী গরুর কদর অত্যন্ত বেশি। পাহাড়ী গরু,ছাগলসহ অন্যান্য পশুর চাহিদা বেশি হওয়াতে প্রতি বছরের মতো এবারো স্থানীয় চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি এখানকার কোরবানীর পশু দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে ক্ষুদ্র ও পাইকারী পশু ব্যবসায়ীরা। রাঙ্গামাটি জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বরুন কুমার দত্ত বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে (বাসস) বলেন, জেলা সদরসহ ১০ উপজেলায় এবার ষাড়,বলদ,গাভী,মহিষ,ছাগল, ভেড়াসহ অন্যান্য গবাদিপশুর চাহিদা ৩৪ হাজার ২শ ২৮টি। পুরো জেলার স্থানীয় চাহিদা মিটিয়েও আরো প্রায় ৫হাজারের মতো উদ্বৃত্ত থাকে বলে জানান এ কর্মকর্তা। তবে উদ্বৃত্তের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলেও জানান তিনি। জেলা প্রাণিসম্পদ রাঙ্গামাটি জেলা অফিসের তথ্যমতে রাঙ্গামাটির ১০টি উপজেলায় মোট খামারীর সংখ্যা ২হাজার ৬শত ২৫জন এবং এসব খামারে পশুর সংখ্যা রয়েছে প্রায় ৩৮হাজার ৬শত ২৪টি।
রাঙ্গামাটি জেলা সদরের স্থানীয় বড় খামারীর মালিক মোঃ সাইফুল আলম বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে (বাসস) জানান, তার খামারে মোট ২০টির মতো গরু রয়েছে। এর মধ্যে কিছু গরু থেকে দুধ সংগ্রহ করে তিনি প্রতি মাসে প্রায় লক্ষাধিক টাকা আয় করেন আর অন্যান্য গরু পালন করে বড় হওয়ার পর তা বাজারে বিক্রি করেন। প্রতি বছর কোরবানীতেও তিনি তার খামার থেকে গরু বাজারে বিক্রি করে থাকেন বলে জানান।
এবার কোরবানী উপলক্ষে সাইফুল ইতিমধ্যে ২টি গরু বিক্রি করেছেন। তার মধ্যে ১টি বিক্রি করেছেন ৮৫ হাজার টাকা এবং অন্যটি প্রায় ১লক্ষ ৩০হাজার টাকার মতো। গরুর খামার করে তিনিসহ আশেপাশের অনেক ব্যবসায়ী এখন স্বাবলম্বী বলে জানান সাইফুল। রাঙ্গামাটি পৌরসভার সেনিটারী ইন্সপেক্টর ফিরোজ আল মাহমুদ সোহেল বাসসকে জানান, এবার রাঙ্গামাটি শহরে পৌরসভার পক্ষ থেকে একটি গরুর হাট বসানো হয়েছে। এ হাটে রাঙ্গামাটি শহরসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে খামারীরা গবাদি পশু বিক্রির জন্য নিয়ে আসে। জেলার স্থানীয় পশুর চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি এখান থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় গবাদি পশু বিক্রির জন্য পাইকারী ব্যবসায়ীরা নিয়ে যান। পৌরসভার ১টি পশুর হাট ছাড়াও শহরের রিজার্ভবাজারেও আরো ১টি পশুর হাট বসে।
জেলার পাশাপাশি রাঙ্গামাটির ১০টি উপজেলাতেও এখন জমে উঠেছে কোরবানীর পশুর হাট। এর মধ্যে কাপ্তাই, কাউখালী, রানীর হাট, লংগদু,মারিশ্যা, মাইনী, বাঘাইছড়ি, বিলাইছড়ি, সদরের সাপছড়ি, ঘাগড়া, বরকলসহ বিভিন্ন স্থানে জমে উঠেছে হাট। এসব এলাকা থেকেও বিক্রির জন্য জেলায় গবাদি পশু নিয়ে আসছে খামারীরা।
কাপ্তাই উপজেলায় নতুন বাজার এলাকার গরু ব্যবসায়ী সালাম জানান,সারা বছর পাহাড়ে জঙ্গলে গরু ছেড়ে দিয়ে লালন-পালন করি। পশুরা পাহাড়ের ঘাস,লতাপাতা খেয়ে অনেক ভালোভাবেই বেড়ে উঠে। এবার কোরবানীতে পশুর দাম ভালো পাবেন বলে আশা খামারী সালামের। এসব হাটে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকার পাহাড়ী গবাদি পশু ক্রয়-বিক্রি করা হচ্ছে। বর্তমানে দাম কিছুটা বেশি হলেও ঈদের ২/৩দিন আগে দাম আরো কিছুটা শিথিল হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।