মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৫৫ পূর্বাহ্ন

পদ্মা সেতু চালুর ফলে এবার দুর্ভোগ মুক্ত কোরবানির পশু ব্যবসায়ীরা

খবরপত্র ডেস্ক
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৭ জুলাই, ২০২২

পদ্মা সেতু চালুর ফলে কোরবানির পশু ব্যবসায়ীদেরকে এবারে পোহাতে হচ্ছে না কোনো দুর্ভোগ। আগে ফেরিতে পশুবাহী ট্রাক তুলতে গিয়ে দিতে হতো অবৈধ চাঁদা। এখন নেই সেই হয়রানি। তাই পশু ব্যবসাীয়দের চোখে-মুখে ফুটে উঠেছে তৃপ্তির প্রতিচ্ছবি।
প্রায় বছর ধরে বাণিজ্যিকভাবে শরীয়তপুরের শতাধিক গরু-ছাগলের ব্যবসায়ীরা কোরবানির পশু ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলার হাটে পশু সরবরাহ করে আসছিল। নদী পথের কারনে ওই সকল ব্যবসায়ীদেরকে পোহাতে হতো নানা দুর্ভোগ। ফেরিতে পশুবাহী ট্রাক তুলতে কোথাও-কোথাও দিতে হতো চাঁদা, পারাপারের জন্য অপেক্ষা করতে হতো ঘন্টার পরে ঘন্টা। কখনো কখনো দুই দিনও অপেক্ষা করতে হতো। ফলে অতিরিক্ত গরম ও খাদ্য সংকটের কারনে অতিযতেœ লালন-পালন করা কোরবানির পশু আসল রূপ হারাতো। যে কারনে কাঙ্খিত দামেরও হেরফের হয়ে যেতো। এছাড়াও কখনো কখনো ঘাটে নদী পারাপারের জন্য অপেক্ষমান অবস্থায় মৃত্যু হতো কোরবানির পশুর। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার ফলে এবারের চিত্র নিতান্ত ভিন্ন। শরীয়তপুরের কোন পশু ব্যবসায়ীদেরকে কোথায় দিতে হচ্ছে না চাঁদা, নষ্ট হচ্ছে না রাতের ঘুম, নির্ধারিত সময়ের আগেই অতি অল্প সময়ে নিরাপদে পৌঁছে যাচ্ছে নির্দিষ্ট হাটে। যে কারনে এ বছর পশু ব্যবসায়ীদের গুনতে হচ্ছে না রাতে থাকা খাওয়ার অতিরিক্ত ব্যয়ের বোঝা। সন্ধ্যার পর থেকেই পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের টোলপ্লাজা এলাকা মুখরিত থাকছে কোরবানির পশুবাহী ট্রাক-পিকআপ পারাপারের দৃশ্যে। ব্যবসাীয়দের চোখে-মুখে ফুটে উঠতে পরিতৃপ্তির প্রতিচ্ছবি।
শরীয়তপুর সদরের তুলাসার ইউনিয়নের চর স্বর্ণঘোষ গ্রামের গরু ব্যবসায়ী সিরাজ মুন্সি (৫৫) বলেন, গত বছরও শিবচরের বাংলাবাজার ফেরিঘাটে ঢাকায় যাওয়ার অপেক্ষায় বিকেল থেকে পরের দিন সকাল ১০টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছিল। ফলে কাঙ্খিত সময়ে ঢাকার গাবতলী হাটে পৌঁছতে না পারায় লাভের অংশ অনেক কমে গিয়েছিল। কিন্তু এবার ইতিমধ্যে তিনবার ঢাকার গাবতলী, নয়াবাজার ও খিলগাঁও (শাহজাহানপুর) পশুর হাটে পৌঁছে দিয়েছি, তাও বিনা চাঁদায়। এটা আসলে ভাবাই যায় না। যখন পদ্মা সেতু দিয়ে গরুর ট্রাক নিয়ে পার হই, তখন এটা কেবলি স্বপ্নের মতো মনে হয়। মাত্র ৭ মিনিটে ১০-১২ ঘন্টার নদীপথ পাড়ি দিলাম। এটা সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারনে। আমাদের দেশের উন্নয়নের জন্য আল্লাহ তাঁকে নেক হায়াত দান করুন।
পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের টোল ম্যানেজার মো. কামাল হোসেন বলেন, কোরবানির পশুবাহী গাড়িগুলোকে আমরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পারাপারের জন্য দু’টি লেন আলাদা করে নির্দিষ্ট করে দিয়েছি। যাতে কোন ভাবেই পশুবাহী গাড়ির কোন বিলম্ব না হয়। তাদের নিরাপত্তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সাধারণত সন্ধ্যার পর থেকে পশুবাহী গাড়ি পারাপার শুরু হয়।
জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুবোধ কুমার দাস বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় জেলার ছোট-বড় প্রায় ষোল হাজার গরুর খামারিরা এখন আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখছেন। তিন ঘন্টার ব্যবধানে ঢাকার গোহাটে পশু পৌঁছানো তাদের কাছে চিন্তার কোন ব্যাপারই না। এ সময়ে আমাদের নিয়মিত তদারকির সময় খামারিরা জানান, এত সহজ যাতায়াত আমাদের কল্পনাতেও ছিল না। গত দুই বছর করোনাভাইরাসের কারণে খামারিরা তেমন লাভবান হতে না পারলেও এবার পদ্মা সেতুর বদৌলতে ঘুরে দাঁড়ানোর ব্যাপারে বেশ উজ্জীবিত দেখাচ্ছে তাদের।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com