ক’দিনের তীব্র গরমে দিনাজপুরের হিলির জনজীবনে হাঁসফাঁস। অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে সকল পেশাজীবী সহ স্থানীয়দের। একটু প্রশান্তির খোঁজে সবাই, বাড়ছে গরম জনিত রোগ জ্বর, সর্দি ও কাশি। চাহিদা বাড়ছে ঠা-া পানি এবং কদর বাড়ছে আখের রস। সোমবার (১৮ জুলাই) দুপুরে হিলি বন্দর বাজার সহ বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা যায়, প্রচ- তাপদহে মানুষ বিপাকে, একটু ছাঁয়ার খোঁজে ছুটছে সবাই। ফাঁকা গাছের ছাঁয়ার নিচে বসছেন অনেকেই। প্রচ- গরমে ঘামছে মানুষ, খুঁজছে ঠা-া পানি, শরবত। সবচেয়ে বিপাকে পড়ছে খেটে খাওয়া দিনমজুর ও রিকশা-ভ্যান চালকরা। রৌদ্রদগ্ধ হচ্ছেন তারা, জীবিকার তাগিদে ছুটছেন তারা। এদিকে রৌদ্রতেজে কদর বেড়েয় চলছে আখের রস। বাজারের বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট আখ মাড়াই মেশিন নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ব্যবসায়ীরা। আর পিপাসা মেটাতে আসছে সবাই। হাত দ্বারা মেশিন ঘুরিয়ে রস বেড় করছেন ব্যবসায়ী। প্রতি গ্লাস ১০ টাকা করে নিচ্ছেন। দেখা যায় এক গ্লাস আখের রস পাবার জন্য সবাই তার দোকানের পাশে ভিড় জমাচ্ছে। আখের রস খেতে আসা রকিবুল ইসলাম বলেন, প্রচ- গরম অস্থির হয়ে যাচ্ছি, পিপাসাও লেগেছে তাই আখের রস খাচ্ছি। দুই গ্লাস খেলাম। রস খেতে আসা কয়েক জন বলেন, এতো গরম এর আগে কখনও দেখিনি। গা ঘামে পানি পড়ছে, কোথাও কোন ঠা-া পাচ্ছি না। আখের রস খাচ্ছি অনেকটা ভাল লাগছে। আখ ব্যবসায়ী সোহেল রানা বলেন, সপ্তাহ ধরে প্রচুর গরম পড়ছে। মানুষের রসের চাহিদাও খুব বৃদ্ধি পেয়েছে। সকাল থেকে শুরু হয় রাত পর্যন্ত মানুষকে রস বানিয়ে দিতে হচ্ছে। ১০ টাকা করে গ্লাস নিচ্ছি। রস খেতে আসা জনি শেখ বলেন, ১০ থেকে ১২ দিন যাবৎ জ্বর, সর্দি আর কাশিতে ভুগছি। কোন কিছু খেতে পারছি না। হয় তো আখের রস খেতে পারবো কিংবা খেলে ভাল লাগবে তাই আখের রস খেতে আসছি। দুই গ্লাস খেলাম একটু ভাল লাগছে। এবিষয়ে হাকিমপুর (হিলি) স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা শ্যামল কুমার দাস বলেন, কয়েকদিনের তীব্র গরমে হাসপতালে জ্বর, সর্দি ও কাশির রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। মুলত গরমে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়ে যায়। তবে এবার তার চিত্র উল্টো। ভাইরাস জনিত জ্বর সর্দি কাশিতে প্রায় মানুষ ভুগছেন। আমরা এই মুহুর্তে রোগীদের প্যারাসিটামল ট্যাবলেট ও সর্দির ট্যাবলেট খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি। এছাড়াও যারা ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের নির্দেশ দিচ্ছি তারা যেন সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে চলাফেরা করে। ঠা-া বিশুদ্ধ পরিষ্কার পানি পান করে এবং বাজার-ঘাটে আখের রস যেন এক গ্লাসে সবাই পান না করে। প্রয়োজনে আলাদা বোতল ও গ্লাস ব্যবহার করতে হবে।