ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার সরকারি হাসপাতালের জরুরী রোগী পরিবহনের অ্যাম্বুলেন্সটি গত মে মাসের ১৬ তারিখ আনুমানিক রাত ৩ টার দিকে দুর্ঘটনাকবলিত হয়। কালীগঞ্জ হাসপাতাল থেকে রোগী নিয়ে যশোরে পৌছে দিয়ে ফেরার পথে বারোবাজার তেল পাম্প পার হয়ে চলন্ত ট্রাকের পেছনে ধাক্কা লেগে অ্যাম্বুলেন্সটির সামনের অংশ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার তৌহিদুর রহমান টিপু কোনোমতে প্রাণে রক্ষা পান।তখন থেকে আজ পর্যন্ত ৬৪ তম দিন পার হলেও মেরামোত করে অ্যাম্বুলেন্সটি পুনরায় চালু করা সম্ভব হয়নি। ফলে হাসপাতাল থেকে জরুরী রোগী পরিবহন মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে। কালীগঞ্জ হাসপাতালে দুইটি অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও একটি অকেজো হয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ পড়ে রয়েছে। বর্তমানে দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ অ্যাম্বুলেন্সটি দিয়েই জরুরী রোগীর স্থানান্তরের কাজ চলছিল। সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে প্রতি কিলোমিটার ১০ টাকা হারে ভাড়া নেওয়ায় রোগীরা আর্থিকভাবে সুবিধা পেতো। ফয়লা গ্রামের শফিকুর রহমান তার বড় ভাইকে নিয়ে গত রবিবার রাতে হাসপাতালে আসেন। রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় জরুরী বিভাগ থেকে ডাক্তার যশোরে রেফার্ড করেন। এসময় শফিক সরকারি অ্যাম্বুলেন্স খোঁজ করেও পাননি। একপ্রকার বাধ্য হয়ে ২০০০ টাকায় বাইরের অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে তার ভাইকে যশোর সদর হাসপাতালে নেন। শফিকুর রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে রোগী যশোর নিতে আমার ৭৫০ টাকা খরচ হতো। অ্যাম্বুলেন্স না থাকায় আমাকে বাড়িতি টাকা গুনতে হয়েছে। দুর্ঘটনায় এতদিন পরেও কেনো অ্যাম্বুলেন্সটি সরানো হলো না? গুরুত্বপূর্ণ এই ব্যাপারটি কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি এড়ায় কিভাবে? অ্যাম্বুলেন্স চালক তৌহিদুর রহমান টিপু জানান,দুর্ঘটনায় আমি অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেলেও গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর গাড়িটি দ্রুত মেরামোতের জন্য আমাদের হাসপাতালে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে কর্মরত সোহরাব হোসেনের গ্যারেজে দেই। কিন্তু সোহরাব গাড়িটির কাজ দ্রুত সম্পন্ন না করে নানা টালবাহানা করতে থাকেন। একপর্যায়ে অফিস থেকে স্যারেরা চাপ দিলে ৫৬ দিন পরে গাড়ি ঠিকমতো না মেরামোত করে হাসপাতালে দিয়ে যাই। পরবর্তীতে গাড়িটিতে রয়ে যাওয়া ত্রুটিগুলো ঠিক করতে অ্যাম্বুলেন্স আবার ঝিনাইদহের এক গ্যারেজে দেওয়া হয়েছে। আশাকরছি দুএক দিনের মধ্যে অ্যাম্বুলেন্সটি আমরা হাতে পাবো এবং রোগীর জরুরী পরিবহন সেবা দিতে পারব। গ্যারেজ মালিক সোহরাব হোসেনের সাথে কথা বলতে তার মুঠো ফোনে একাধিক বার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা: মাজহারুল ইসলাম জানান, অ্যাম্বুলেন্স দুর্ঘটনার ব্যাপারটি আমি ড্রাইভারের নিকট থেকে প্রথমে শুনে ঐ দিন সকালেই ঘটনাস্থলে গিয়ে টিএইচও স্যারকে রিপোর্ট করি। ড্রাইভার এর গাফলতি রয়েছে মর্মে স্যার গাড়িটি তাকেই দ্রুত মেরামোত করার নির্দেশ দেন।মূলত ড্রাইভার এর তত্ত্বাবধানে মেরাোত কার্যক্রম পরিচালিত হওয়ায় এবং ঐ গ্যারেজ মালিকের গাফিলতির কারণে অ্যাম্বুলেন্সটি মেরামোতে সময় লেগেছে। দ্রুততম সময়ে অ্যাম্বুলেন্সটি মেরামোত করে পুনরায় জরুরী রোগী পরিবহন সেবা চালু করা হবে।