প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিার সাথে তানাকা আকিহিতোর সৌজন্য সাক্ষাৎ
বাংলাদেশ ও জাপান উভয় দেশই জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন চায়। জাপানের পররাষ্ট্রবিষয়ক সংসদীয় ভাইস মিনিস্টার হোন্ডা তারো এবং জাপান ইন্টারন্যাশনাল কর্পোরেশন এজেন্সি (জাইকা) প্রেসিডেন্ট তানাকা আকিহিতো গত সোমবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়। পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে জাপানের সহায়তা চেয়েছেন। ‘রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার পর বেশ কয়েক বছর কেটে গেছে এবং তারা এখন আমাদের জন্য বোঝা হয়ে উঠেছে,’ তিনি যোগ করেন।
জবাবে জাপানের পররাষ্ট্রবিষয়ক সংসদীয় ভাইস মিনিস্টার হোন্ডা তারো বলেন, তাঁরাও রোহিঙ্গাদের মর্যাদাপূর্ণভাবে প্রত্যাবাসন চান।
তিনি যোগ করেন, ‘জাপান রোহিঙ্গাদের মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন চায় এবং তাঁরা (জাপান) এই ইস্যুতে বাংলাদেশকে সমর্থন করছে।’ বাংলাদেশ ও জাপানের উভয় নেতাই দুই দেশের মধ্যকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেছেন। জাপানের নেতা ও জাইকা প্রেসিডেন্ট নিজস্ব অর্থায়নে বহুল আলোচিত পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, সেতুটি বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে। শেখ হাসিনা বলেন, পদ্মা সেতু ও যমুনা নদীর ওপর নির্মিত বঙ্গবন্ধু সেতু দেশের দক্ষিণ ও উত্তরা লকে দেশের অবশিষ্ট অংশের সঙ্গে যুক্ত করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাপান বাংলাদেশের তিনটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে, মহেশখালীতে কয়লাচালিত মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্র, মেট্রোরেল এবং ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনাল, যা বাংলাদেশের উন্নয়নে বিশেষভাবে সহায়ক হবে।
জবাবে, জাইকা তিনটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সরকারের সর্বাত্মক সহায়তার প্রশংসা করে।
জাপানের নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের উত্তোরণেরও প্রশংসা করেন। বাংলাদেশি ও জাপানি উভয় নেতৃবৃন্দই ২০১৪ সালে জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের বাংলাদেশে সফরের কথা স্মরণ করেন।
শেখ হাসিনা শিনজো আবের হত্যাকা-ের নিন্দা করেন এবং তাকে বাংলাদেশের একজন মহান বন্ধু হিসেবে বর্ণনা করেন। জাপানের নেতা বলেন, শিনজো আবের বাংলাদেশ সফর বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে একটি ব্যাপক অংশীদারিত্বে উন্নীত করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭৩ সালের অক্টোবরে জাপান সফর আজকের বাংলাদেশ-জাপান সম্পর্কের ভিত্তি তৈরি করেছিল। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু জাপানের আর্থ-সামাজিক ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির একজন প্রশংসক ছিলেন এবং তিনি একটি কৃষিভিত্তিক দেশকে শিল্পোন্নত দেশে রূপান্তরের জন্য জাপানি মডেলের অনুকরণ করতে চেয়েছিলেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এবং বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি উপস্থিত ছিলেন।
সাবেক এমপি আব্বাস আলীর মৃত্যু, প্রধানমন্ত্রীর শোক
জয়পুরহাট-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্বাস আলী মণ্ডল মারা গেছেন (ইন্না… রাজিউন)। গতকাল মঙ্গলবার ভোরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৯১ বছর। আব্বাস আলী ম-লেরর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এক শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আব্বাস আলী মণ্ডল ছিলেন জাতির পিতার আদর্শের একজন নিবেদিত প্রাণ কর্মী এবং জনবান্ধব রাজনৈতিক নেতা। প্রধানমন্ত্রী মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
আব্বাস আলী মণ্ডল দীর্ঘদিন জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ২০০০ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ছিলেন। তিনি ১৯৮৬ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালে মাত্র ৬৩ ভোটে পরাজিত হন, ২০০১ সালেও নৌকা মার্কা নিয়ে নির্বাচন করেন।