অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় কক্সবাজারের টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশের ২০ বছর এবং তার স্ত্রী চুমকি কারনের ২১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। গতকাল বুধবার (২৭ জুলাই) চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ মুন্সী আবদুল মজিদের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। দুদকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাহমুদুল হক মাহমুদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আদালত চারটি ধারায় প্রদীপকে ২০ বছর এবং চুমকিকে ২১ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন। মামলায় ২৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত এ রায় দেন।’
চারটি ধারায় দণ্ডের বিষয়ে দুদকের আইনজীবী বলেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪-এর ২৬(২) ধারায় প্রদীপ কুমার দাশকে খালাস দেওয়া হয়। এ ধারায় তার স্ত্রী চুমকি কারনকে এক বছরের কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়, অনাদায়ে আরও একমাস কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ২৭ (১) ধারায় প্রদীপকে আট বছর এবং চুমকিকে আট বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২-এর ৪(২)(৩) ধারায় উভয়কেই ১০ বছর করে কারাদণ্ড এবং চার কোটি টাকার অর্থদণ্ড, অনাদায়ে দুই বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় প্রদীপ-চুমকিকে দুই বছর করে করে কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অবৈধভাবে অর্জিত তাদের সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।’ ২০২০ সালের ২৩ আগস্ট প্রদীপ ও তার স্ত্রী চুমকির বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলাটি করা হয়। দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-২-এর তৎকালীন সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন এ মামলা করেন।
মামলায় তিন কোটি ৯৫ লাখ পাঁচ হাজার ৬৩৫ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। ২০২১ সালের ২৬ জুলাই প্রদীপ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক। ওই বছরের ১ সেপ্টেম্বর এই মামলার অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন আদালত। মামলার পর থেকে পলাতক ছিলেন চুমকি। গত ২৩ মে তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত প্রদীপ বর্তমানে চট্টগ্রাম জেলা কারাগারে রয়েছেন। তার স্ত্রীও দুদকের মামলায় কারাগারে আছেন।