ওয়ার্ল্ড ফুটবল সামিট-এর সঙ্গে নতুন গ্লোবাল পার্টনারশীপ উদ্বোধন করেছেন নোবেল জয়ী প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। সম্প্রতি ওই পার্টনারশীপ উদ্বোধন করে তিনি বলেছেন, পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা হিসেবে ফুটবল মানুষকে উজ্জীবিত করার এক অসাধারণ ক্ষমতা রাখে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, এই ক্ষমতাকে অবারিত করতে সামাজিক ব্যবসা সবচেয়ে কার্যকর হাতিয়ার হতে পারে।
ক্রীড়ার অনবদ্য শক্তির দিকে পৃথিবীর দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য প্রফেসর ইউনূস ২০১৮ সালে প্যারিস নগরীতে “ইউনূস স্পোর্টস হাব” প্রতিষ্ঠা করেন। এটা নিজেই একটি সামাজিক ব্যবসা। ২০২১ সালে টোকিও অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তাঁকে অলিম্পিকের ইতিহাসে দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে “অলিম্পিক লরেল” সম্মাননায় ভূষিত করা হয়। আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি ও প্যারিস অলিম্পিক ২০২৪ অর্গানাইজিং কমিটির সহযোগে ক্রীড়াজগতে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি করার উদ্যোগে তাঁর বিপুল অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁকে এই সম্মাননা প্রদান করা হয়।
প্রফেসর ইউনূস ফুটবল জগতের অন্যতম বৃহত্তম ব্যবসায়িক প্লাটফরম “ওয়ার্ল্ড ফুটবল সামিট”-এর সাথে দীর্ঘমেয়াদী পার্টনারশীপের সূচনার অনুষ্ঠানে বলেন, ওয়ার্ল্ড ফুটবল সামিট নিয়মিতভাবে নতুন আলোচনার সূত্রপাত করতে, জ্ঞানের পরিধি বিস্তৃত করতে এবং ফুটবল ও সার্বিকভাবে ক্রীড়া শিল্পকে এগিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে উদ্ভাবনার বিকাশ ঘটাতে ফুটবলের সাথে সংশ্লিষ্ট নেতৃস্থানীয় অংশীজনদের সমবেত করে থাকে। এ বছরের ২৮ ও ২৯ সেপ্টেম্বর আয়োজিত ওয়ার্ল্ড ফুটবল সামিট-২০২২ অনুষ্ঠানে এই পার্টনারশীপ আনুষ্ঠানিকভাবে তার যাত্রা শুরু করবে যেখানে সামিটের পূর্বে ও সামিট চলাকালে প্রফেসর ইউনূস ও তাঁর প্রতিষ্ঠিত “ইউনূস স্পোর্টস হাব” বিভিন্নভাবে অংশগ্রহণ করবে। প্রফেসর ইউনূস বলেন: “পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা হিসেবে ফুটবল মানুষকে উজ্জীবিত করার এক অসাধারণ ক্ষমতা রাখে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, এই ক্ষমতাকে অবারিত করতে সামাজিক ব্যবসা সবচেয়ে কার্যকর হাতিয়ার হতে পারে। ওয়ার্ল্ড ফুটবল সামিটের সাথে আমাদের এই পার্টনারশীপ এই শিল্পের বিবর্তনে একটি কার্যকর প্লাটফর্ম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে এ বিষয়ে আমি নিশ্চিত।” এই পার্টনারশীপের উদ্বোধন করতে এবং সম্পদের সুষম বন্টনের উপর ভিত্তি করে পৃথিবীকে গড়ে তোলার লক্ষ্যে তাঁর প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে প্রফেসর ইউনূস ওয়ার্ল্ড ফুটবল সামিট ২০২২-এ “মারকাস রাশফোর্ড অ্যাওয়ার্ড”-এর জন্য মনোনীত সকল অ্যাথলেটকে সামাজিক ব্যবসা কর্মসূচির আওতায় আনার অঙ্গীকার ঘোষণা দেন।
মারকাস রাশফোর্ড এমবিই-এর শিশু খাদ্য প্রচারাভিযানে ২০২১ সালে প্রথম ঘোষিত এই পুরস্কার এবং এবছর যেসকল অ্যাথলেট ও সংগঠনকে প্রদান করা হবে সবাইকে গঠনমূলক সামাজিক পরিবর্তনে তাঁদের নতুন পরিচিতিকে কাজে লাগানো হবে।
ইউনূস স্পোর্টস হাবের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ইয়োআন নগিয়ের বলেন, “ইউনূস স্পোর্টস হাব-এ আমরা এই পার্টনারশীপকে ফুটবল শিল্প ও সামাজিক ব্যবসার সম্মিলিত শক্তিকে এগিয়ে নিয়ে যাবার একটি অনবদ্য সুযোগ হিসেবে দেখছি। ক্রীড়ার মধ্যে এবং এর মাধ্যমে আমরা সম্মিলিতভাবে পৃথিবীর বিভিন্ন সমস্যার সামাজিক সমাধান তৈরীতে কাজ করবো।”
ওয়ার্ল্ড ফুটবল সামিটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা জ্যান অ্যালেসি বলেন, “ইউনূস স্পোর্টস হাব -এর মতো সংগঠনের পার্টনার হতে পেরে, যার নেতৃত্বে রয়েছেন প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের মতো বিশ্বখ্যাত মানুষ, বহু বছর ধরে আমি ব্যক্তিগতভাবে যাঁর একজন ভক্ত, আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। আমার জন্য এটা এক অনবদ্য সম্মান । সেসব সামাজিক উদ্যোক্তাদের ফুটবল ইন্ডাষ্ট্রির মূল অংশীজনদের সম্মুখভাগে থেকে ক্রীড়ার মাধ্যমে পৃথিবীকে বদলে দিচ্ছেন তাঁদের বক্তব্যকে সবার সমানে তুলে ধরতে পারার জন্য আমি গর্বিত।”