পুলিশের গুলিতে আহত ছাত্রদল সভাপতির নূরে আলমের শাহাদাত বরণ
পুলিশের সাথে সংঘর্ষে গুরুতর আহত ভোলা জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নুরে আলমের শাহাদাতের প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার ভোলা জেলায় হরতাল ডেকেছে বিএনপি। গতকাল বুধবার বিকেলে জেলা ছাত্রদল সভাপতির মৃত্যু সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। বিক্ষোভ শেষে ভোলা জেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব গোলাম নবী আলমগীর হরতালের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, পুলিশের গুলিতে নুরে আলম গুরুতর আহত হন। চার দিন পর আজ মারা যান তিনি। এছাড়াও তিনি বলেন, ভোলা থেকে শুরু হবে এই সরকার পতনের আন্দোলন।
উল্লেখ্য, গত রোববার ভোলায় কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে জেলা বিএনপি আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশ বাধা দিলে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই নিহত হন স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আব্দুর রহিম। এছাড়াও আহত হয় ১০ পুলিশসহ অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী। পুলিশের শর্টগানের গুলিতে গুরুতর আহত জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নুরে-আলমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। চার দিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর বুধবার বিকেল ৩টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
নুরে আলম গতকাল বুধবার দুপুরে রাজধানীর একটি হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এর আগে পুলিশের গুলিতে আবদুর রহিম নামে স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতা নিহত হন। এ নিয়ে ওই সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির ২ নেতা নিহত হলো।
উল্লেখ্য, বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গ্যাস, বিদ্যুতসহ নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে ৩১শে জুলাই বেলা ১১টায় ভোলা জেলা বিএনপি প্রতিবাদ সমাবেশ এবং বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করে। শহরের কালীনাথ রায়ের বাজার এলাকায় জেলা বিএনপি কার্যালয়ে সমাবেশ শেষে মিছিল করতে রাস্তায় নামে দলীয় নেতাকর্মীরা। এসময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে তাদের। সংঘর্ষে পুলিশকে লক্ষ করে ব্যাপক ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৩০ রাউন্ড টিয়ারশেল ও ১৬৫ রাউন্ড শটগানের গুলি ছোড়ে। এতে অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হলে তাদের ভোলা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের কোড়ালিয়া গ্রামের হারেছ মাতব্বরের ছেলে স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা আব্দুর রহিম মারা যান।
মাথায় গুলিবিদ্ধ গুরুতর আহত ভোলা জেলা ছাত্রদল সভাপতি নুরে আলমকে ভোলা হাসপাতাল থেকে প্রথমে বরিশাল সেবাচিমে পাঠানো হয়। সেখানকার ডাক্তাররা ব্যর্থ হয়ে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাৎক্ষণিক ঢাকায় পাঠান। তিনদিন হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকার পর আজ ৩রা আগস্ট বুধবার বেলা ৩টার কিছুক্ষণ পর ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে মানবজমিনকে নিশ্চিত করেছেন ভোলা সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আসিফ আলতাফ।