পুরো দাম নিয়েও পরিমাণে কম অকটেন দেওয়ার অভিযোগে রাজধানীর কল্যাণপুরের সোহরাব সার্ভিস স্টেশন নামের একটি পেট্রলপাম্পকে এক লাখ টাকা জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) এ জরিমানা করা হয়। এর মধ্যে অভিযোগ দায়ের করা বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা শেখ ইশতিয়াক আহমেদ পেয়েছেন ২৫ হাজার টাকা। জরিমানার অর্থ পেয়ে ইশতিয়াক বলেন, ভোক্তা অধিকার আমাকে পুরস্কৃত করেছে। গতকাল আমি আরেকটা পাম্পে গিয়েছিলাম, সেখানে একজন ভোক্তা পাম্প কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞেস করেন তেলের পরিমাণ ঠিক আছে কি না? এটাই আমার কাছে বড় পাওয়া ছিল। আমি পুরস্কারটা কালই পেয়েছি। সবাই সচেতন হয়েছেন।
আগেও এমন প্রতারাণার শিকার হয়েছিলেন জানিয়ে ইশতিয়াক বলেন, প্রতিবাদের ধারণাটা ভেতর থেকেই এসেছে। বিভিন্ন সময় ভোক্তা অধিকারের অভিযান দেখেছি। কিন্তু তাদের কোনো ফোন নম্বর আমার কাছে ছিল না। পরে ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে তাদের নম্বর সংগ্রহ করেছি। আশা করি ৯৯৯ সম্পর্কে আমরা যেভাবে জানি ভোক্তা অধিকারও সেভাবে জনপ্রিয় হবে। এদিকে, নিজেদের দোষ স্বীকার করে ফিলিং স্টেশনটির ম্যানেজার বেলায়েত হোসেন বলেন, এটা একটা অনাকাঙ্ক্ষিত ভুল। আগে এমন হয়নি, এখানে কোনো দুর্নীতি হয়নি। আমাদের ভুল হয়েছে।
এর আগে জরিমানা ঘোষণার সময় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, শুনানিতে স্পষ্ট প্রমাণিত হয়েছে পেট্রলপাম্পটি ভোক্তা অধিকার আইনের ৪৫ ধারা ও ৪৮ ধারা লঙ্ঘন করেছে। এই দুই আইনে যে অর্থদ- আছে, ৫০ হাজার করে যে জরিমানা আছে, তাদের সেই জরিমানা করেছি। সেই অনুযায়ী এক লাখ টাকা হয়, আর অনিয়ম প্রমাণিত হওয়ায় অভিযোগকারী ২৫ শতাংশ জরিমানা পেয়েছেন।
তিনি বলেন, ভোক্তারা সচেতন হচ্ছে এটা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা বাজারে যে অভিযান চালাই তা যথেষ্ট নয়। যারা প্রতারণার স্বীকার হচ্ছেন তাদের ভোক্তা অধিকারের কাছে অভিযোগ করার পরামর্শ দেন তিনি।
এ এইচ এম সফিকুজ্জামান আরও বলেন, গত ১ আগস্ট ইশতিয়াক ভোক্তা অধিকারে ফোন দিয়েছিলেন। তবে সেটা কেন রিসিভ করা হয়নি সেই বিষয়ে আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি। একজনকে কারণ দর্শাতে বলেছি।
বিভিন্ন কারণে ভোক্তা অধিকারের শুনানিতে দেরি হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনেকে সঠিক কাগজপত্র দিতে পারেন না। আমি বলবো না আমাদের লোকবলের সংকট আছে, সরকার যেটা দিয়েছে সেটা দিয়ে আমাদের যুদ্ধ করতে হয়। তবে শুনানি, অভিযান ছাড়াও আমাদের অনেক কাজ করতে হয়। আমরা লোকবল বাড়ানোর জন্য আবেদন করেছি। গত সোমবার (১ আগস্ট) অকটেন কম দেওয়ার অভিযোগে পেট্রলপাম্পটির সামনে আট ঘণ্টা দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করেন ভুক্তভোগী ব্যাংক কর্মকর্তা ইশতিয়াক আহমেদ। পরদিন মঙ্গলবার বিষয়টি নিয়ে ভোক্তা অধিকারে অভিযোগ করেন তিনি। বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) অভিযোগকারী ইশতিয়াক এবং পেট্রলপাম্প কর্তৃপক্ষকে নিয়ে শুনানির দিন ধার্য করে ভোক্তা অধিদপ্তর। একই সঙ্গে শুনানি শেষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়।
ইশতিয়াক আহমেদের অভিযোগ, পাম্প থেকে ৫০০ টাকার ভাউচার দেওয়া হলেও ওই পরিমাণ তেল তাকে দেওয়া হয়নি। তিনি মোটরসাইকেল থেকে তেল বের করে মাপার কথা বললেও পাম্প কর্তৃপক্ষ তাতে সাড়া দেয়নি। প্রতিবাদে একটি সাদা কাগজে ‘সঠিক পরিমাণে তেল চাই’ লিখে ওই পাম্পের সামনে অবস্থান নেন ওই ব্যাংক কর্মকর্তা।