সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪২ পূর্বাহ্ন

তাইওয়ান ও আন্তর্জাতিক ইস্যু গুরুত্ব পাবে

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৫ আগস্ট, ২০২২

দুইদিনের সফরে ঢাকায় আসছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই-এর ঢাকা সফরে তাইওয়ান এবং আন্তর্জাতিক ইস্যু গুরুত্ব পাবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভের স্পিকার ন্যানসি পেলোসির তাইওয়ান সফর, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, এরফলে উদ্ভূত খাদ্য ও জ্বালানি সংকট ও বাণিজ্য অসুবিধাও বড় আকারে আলোচনায় আসতে পারে বলে মনে করেন তারা। আজ শনিবার ৬ আগস্ট দুইদিনের সফরে ঢাকায় আসছেন ওয়াং ই। সফরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠক হবে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের কথা রয়েছে।
এ বিষয়ে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক লেন, ‘এ সফরটি বিভিন্নভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, ২০১৬ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর পরে এই প্রথম ওইদেশ থেকে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার জন্য নেতৃস্থানীয় একজন বাংলাদেশ সফর করছে।’ ২০১৭ এর নভেম্বরে ওয়াং ই বাংলাদেশ সফর করেছিলেন কিন্তু সেটি ছিল রোহিঙ্গাকেন্দ্রিক জানিয়ে তিনি বলেন, ওই বছরে অনেক দেশের উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিরা বাংলাদেশ সফর করেছিলেন।
গত সপ্তাহে ন্যানসি পেলোসির তাইওয়ান সফরকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘চীনের কাছে বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। তাইওয়ানকে নিজেদের অংশ হিসেবে বিবেচনা করে চীন এবং এখানে বিদেশি কোনও ধরনের রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ তারা মেনে নেবে না।’
বাংলাদেশ প্রথম থেকেই ‘এক চীন নীতি’তে বিশ্বাস করে এবং এটি বৃহস্পতিবার একটি বিবৃতির মাধ্যমে ঢাকা আবার পুনর্ব্যক্ত করেছে বলে তিনি জানান। চীন একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী শক্তি হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং এ অঞ্চলে দেশটি তাদের প্রভাব বলয় বাড়াতে চাইবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগের পাশাপাশি আরও কয়েকটি উদ্যোগ তারা নতুনভাবে ঘোষণা করেছে। এরমধ্যে রয়েছে গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ (জিডিআই) এবং গ্লোবাল সিকিউরিটি ইনিশিয়েটিভ (জিএসআই)।’ বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগে বাংলাদেশ একটি অংশীদার হলেও নতুন ঘোষণা করা জিডিআই এবং জিএসআই নিয়ে প্রকাশ্যে কোনও অবস্থান নেয়নি বাংলাদেশ বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, আমার মনে হয় চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরে বৈশ্বিক বিষয়গুলো তারা সামনে নিয়ে আসতে চাইবে। আন্তর্জাতিক বিষয় ওয়াং ই-এর সফরে গুরুত্ব পাবে এ বিষয়ে একমত পোষণ করে চীনে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মুনশি ফায়েজ আহমেদ বলেন, ‘আমার বিবেচনায় দুটি বড় বিষয় এখানে প্রাধান্য পাবে। প্রথমটি হচ্ছে দ্বিপক্ষীয় বিষয় যেখানে দুই দেশের বিভিন্ন স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়, প্রকল্প, রোহিঙ্গা ও অন্যান্য বিষয়গুলো থাকবে।’
দ্বিতীয়ত, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে উদ্ভূত বিভিন্ন সংকট যা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে প্রভাবিত করে, এমন বিষয়গুলোও আলোচিত হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে তিনি জানান। বর্তমান বিশ্বে খাদ্য ও জ্বালানি সংকট প্রকট হয়ে উঠছে এবং এরফলে সব দেশ কম-বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিভিন্ন দেশের নিষেধাজ্ঞা আরোপ যার ফলে বাণিজ্য প্রবাহ ব্যহত হচ্ছে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, ‘গোটা বিষয়টিকে যদি বিবেচনা করা হয় তবে দেখা যাবে বৈশ্বিক বিষয়গুলো দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করে থাকে।’
নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার সঙ্গে পণ্য বাণিজ্যে এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখার ক্ষেত্রে একটি জটিলতা তৈরি হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এরসঙ্গে রয়েছে ডলারের দৌরাত্ম্য যা আমাদের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এরফলে ডলারের পরিবর্তে ইউয়ানে (চীনের মুদ্রার নাম) বাণিজ্য করা সম্ভব কিনা সেটি নিয়ে হয়তো আলোচনা হতে পারে কারণ রাশিয়ার সঙ্গে এখন রুবলে অনেক দেশ বাণিজ্য করছে।’ চীনের নতুন দুটি বিষয় গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ এবং গ্লোবাল সিকিউরিটি ইনিশিয়েটিভ নিয়ে আলোচনা হওয়া স্বাভাবিক এবং চীন নিশ্চয় তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করবে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, অন্যদিকে হয়তো বেইজিং অন্যান্য উদ্যোগ যেমন ইন্দো-প্যাসিফিক বা কোয়াড নিয়ে বাংলাদেশ কি ভাবছে সেটি নিয়ে হয়তো জানতে চাইতে পারে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com