প্রবল বিরোধিতা ও বিক্ষোভের মুখে শ্রীলংকায় ক্ষমতার পালাবদল হলো। মুদ্রাস্ফীতি, খাদ্য ও জ্বালানির তীব্র সংকটের মুখে সৃষ্ট ব্যাপক জন-অন্তোষ ও গণবিক্ষোভে গোতাবায়া রাজাপাকসের দেশ ছেড়ে পালিয়ে ক্ষমতা ত্যাগের পর যে শূন্যতা তৈরি হয়েছিল, তা পূরণে ২০ জুলাই শ্রীলংকান পার্লামেন্টে সংসদ সদস্যরা ভোটের মাধ্যমে রনিল বিক্রমাসিংহেকে নতুন প্রেসিডেন্ট হিসাবে বেছে নিল! রনিল বিক্রমাসিংহে নির্বাচিত হলেও বিক্ষুব্ধ জনতা প্রেসিডেন্ট হিসাবে তাকে মেনে যে নেয়নি, বিভিন্ন গণমাধ্যমেই তা প্রকাশ পেয়েছে। তুমুল বিক্ষোভের পর মাহিন্দা রাজাপাকসের পদত্যাগের পর গোতাবায়া জটিল পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য রনিলকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে যখন বেছে নিয়েছিল, বিক্ষোভকারীরা তৎক্ষণাৎ গোতাবায়ার সঙ্গে রনিলেরও পদত্যাগ চেয়েছিল। দেশের অর্থনৈতিক ও খাদ্য সংকটের জন্য যে রাজাপাকসের পরিবারকে দায়ী করে নজিরবিহীন বিক্ষোভ হয়েছিল, রনিল ছিল তাদেরই ঘনিষ্ঠ একজন। রনিলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীরা যত বিক্ষোভই দেখাক না কেন, শ্রীলংকার সংবিধান অনুযায়ী রনিল বিক্রমাসিংহেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করা হয়েছে। এখানে জনগণের করার কিছু ছিল না।
রনিল প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর জনতা পুনরায় বিক্ষোভ শুরু করতে পারে আশঙ্কা করে ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই সেনাবাহিনী নামিয়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের কাছেই গল ফেস ময়দানে যেসব তাঁবুতে বিক্ষোভকারী অবস্থান করতেন, সামরিক বাহিনী, পুলিশ ও স্পেশাল টাস্কফোর্স রাতের আঁধারে অভিযান চালিয়ে আন্দোলনকারীদের সেখান থেকে বিতাড়িত করে জায়গাটি দখলে নেয়। নিরাপত্তা বাহিনীর এমন বর্বোরচিত অভিযানকে সে দেশের জনগণ ভালোভাবে গ্রহণ করেনি। শ্রীলংকানরা মনে করেন, প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নিয়ে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার ১২ ঘণ্টার মধ্যে রনিল এ হামলা চালালেন। তারা রনিলের এ অভিযানকে দমন-পীড়নের নতুন যুগে প্রবেশের সূচনা বলে অভিহিত করেছেন। রনিল বিক্রমাসিংহে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় বিক্ষোভকারীদের বুক যেন ভেঙে গেছে। রাতের পর রাত জাগা বিক্ষোভকারীদের নিদ্রাহীন লাল চোখে যেন জমে উঠেছে রাজ্যের হতাশা। বিভিন্ন সামাজিক মিডিয়ায় তাদের এ হতাশার প্রতিচ্ছবি ভেসে উঠেছে। ‘ভেস্তে গেছে আমাদের সব প্রচেষ্টা। আমরা হেরে গেছি, হেরে গেছে শ্রীলংকা’। বিক্ষোভকারীরা দুঃখ ভারাক্রান্ত কণ্ঠে বলেছেন, রাজনীতিবিদদের কাছে ভালো কিছু আশা করেছিলাম। তারা জনগণের কথা একটুও ভাবেন না। যারা না খেয়ে অথবা আধাবেলা খেয়ে কষ্ট পাচ্ছেন, তাদের প্রতি রাজনীতিবিদদের কোনো অনুভূতি নেই। আমরা হতাশ, কিন্তু বিস্মিত নই। আমরা রাজাপাকসের শাসনের মানবসৃষ্ট সংকটে ভুগছি। যার জন্য রনিল বিক্রমাসিংহেও সমভাবে দায়ী। আমরা তাই রনিলের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিবাদ অব্যাহত রাখব, থামব না। এখন আমাদের আন্দোলনের নতুন কৌশল ঠিক করতে হবে।
রনিল বিক্রমাসিংহে রাজনীতিতে প্রবেশের আগে ১৯৭২ সালে অ্যাডভোকেট হিসাবে আইন ব্যবসা শুরু করেন। তিনি ১৯৭৭ সালে রাজনীতিতে প্রবেশ করেই ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির টিকিটে বিয়াগামা নির্বাচনি এলাকা থেকে সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন। ওই বছর তার চাচা জুলিয়াস রিচার্ড জয়াবর্ধন নতুন সরকার গঠন করলে তিনি পররাষ্ট্রবিষয়ক উপমন্ত্রী হন। পরবর্তীকালে বিভিন্ন সময়ে তিনি একাধিক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৯ সালে তিনি সংসদনেতা মনোনীত হন। ১৯৯৩ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট রানাসিংহে প্রেমাদাসা তামিল টাইগার্সের হাতে বোমা বিস্ফোরণে নিহত হলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জি.বি. বিজেতুঙ্গাকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট করা হয়। এ সুযোগে রনিল বিক্রমাসিংহে প্রথমবারের মতো শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রী হন। কথিত আছে, শহুরে মধ্যবিত্তের মধ্যে তার জনসমর্থন বেশি। তিনি বরাবর নিজেকে পরিচ্ছন্ন রাজনীতিক হিসাবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করলেও দুর্নীতির অভিযোগ তার পিছু ছাড়েনি। যদিও এসব অভিযোগ থেকে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আসছেন। ভাগ্য তার এতই খারাপ যে, ছয় ছয়বার প্রধানমন্ত্রী হলেও একবারও তিনি মেয়াদ শেষ করতে পারেননি। রাজনীতিতে তিনি শত্রু-মিত্র নির্বিশেষে সবার সঙ্গেই ভালো সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছেন। বিশেষ করে, রাজাপাকসে পরিবার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হওয়া সত্ত্বেও বছরের পর বছর তিনি তাদের সঙ্গে সখ্য বজায় রেখেছেন। ২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে রাজাপাকসে পরিবারকে দুর্নীতি, মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে বিচারের মুখোমুখি হওয়া থেকে বাঁচিয়ে দেওয়ার অভিযোগ আছে রনিল বিক্রমাসিংহের বিরুদ্ধে। তার আমলে রাজাপাকসে পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত শুরু হলেও পরে তা থেমে যায়; শেষ পর্যন্ত সেটি নিষ্ফলা তদন্তে রূপলাভ করে। কথিত আছে, তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর রনিলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। সেসময় বন্ড কেলেঙ্কারিতে তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ডুবতে বসলে মাহিন্দা রাজাপাকসে রনিলের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। রনিলের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার কখনো কণ্টকমুক্ত ছিল না। ২০২০ সালের নির্বাচনে রাজাপাকসেদের দল এসএলপিপির কাছে শোচনীয় পরাজয়ের পর ধরে নেওয়ার হয়েছিল যে, রনিল বিক্রমাসিংহের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের বুঝি এখানেই শেষ। পরাজয়ের ফলে তার দলীয় সভাপতির পদ ছাড়ার জন্য দলের নেতারা দাবিও তুলেছিলেন। অথচ ভাগ্যের কী খেলা, তারই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ গোতাবায় নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য সেই রনিলকে ফিরিয়ে আনেন প্রধানমন্ত্রী পদে!
ভারত মহাসাগরে আধিপত্য বিস্তারের ইঁদুর দৌড়ে চীন এবং ভারত বহুদিন ধরে প্রাণান্তর চেষ্টা চালিয়ে আসছে। কৌশলগত ভৌগোলিক অবস্থান বিবেচনা করে গত এক যুগেরও বেশি সময় শ্রীলংকার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করে আসছে দেশ দুটি। চীন তামিল টাইগারদের দমনে সামরিক সাহায্য ও আর্থিক ঋণ প্রদানের মাধ্যমে শ্রীলংকার সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলে। হাম্মানটোটা সমুদ্রবন্দরসহ বেশ কয়েকটি দৃশ্যমান বড় প্রকল্পে অর্থ জোগান দিয়ে চীন শ্রীলংকায় ভারতকে অনেকটা কোণঠাসা করে ফেলেছিল। কিন্তু ঋণের বোঝা টানতে গিয়ে শ্রীলংকা বর্তমানে যে কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে, তাতে সম্পর্কের হাওয়া যেন ভারতের অনুকূলে বইতে শুরু করেছে। রনিল বিক্রমাসিংহের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় সম্পর্কের এ পরিবেশ যেন ভারতের দিকে আরও ঝুলে পড়েছে। রনিল বরাবরই ভারতসমর্থিত রাজনৈতিক ব্যক্তি হিসাবে সে দেশে পরিচিত। এ মহাসংকটে ভারতও যেন শ্রীলংকার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কটা ঝালাই করে নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। ভারত অর্থনৈতিক সাহায্য ছাড়াও শ্রীলংকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোনদিকে মোড় নেয়, তা বিবেচনায় নিয়ে সতর্ক পদক্ষেপ নিচ্ছে বলেই মনে হচ্ছে। শ্রীলংকায় ভারতের রাজনৈতিক কোনো অভিলাষ নেই, তা বোঝানোর জন্য কিছুদিন আগেই কলম্বোয় অবস্থিত ভারতের হাইকমিশন থেকে এক বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, সরকার নয়, ভারত দৃঢ়ভাবে রয়েছে শ্রীলংকার জনগণের সঙ্গে। গণতন্ত্রের সঙ্গে। ভারতের অবস্থান সে দেশের সংবিধানের পক্ষে। শ্রীলংকার সমৃদ্ধি ও উন্নতিই ভারতের কাম্য। শ্রীলংকার প্রতি ভারতের বর্তমান মনোভাব লক্ষ করলে বোঝা যায়, আধিপত্য বিস্তারে ভারত এযাবৎ যে কৌশল ব্যবহার করে আসছিল, তা থেকে কিছুটা সরে এসেছে। কারণ, ভারতে মূলত তার অর্থনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলে। ভারত প্রতিবেশী রাষ্ট্রের জনগণের চেয়ে, তাদের স্বার্থ রক্ষা করতে পারবে এমন রাজনৈতিক নেতা ও দলের প্রতিই সমর্থন দিয়ে থাকে। দক্ষিণ এশিয়ায় (পাকিস্তান বাদে) অপরাপর প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের বিষয়ে বিশ্লেষণ করলেই এর সত্যতা পাওয়া যাবে।
শ্রীলংকায় ভারতের এ উৎসাহী মনোভাব শ্রীলংকানদের ভেতর মিশ্র অনুভূতির সৃষ্টি করেছে। সে দেশের অনেকেই মনে করেন, শ্রীলংকায় ভারতের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতির অর্থ হলো, দেশটির সার্বভৌমত্ব দুর্বল হওয়া। তারা মনে করেন, নিজেদের স্বার্থ হাসিলে ভারত বর্তমান পরিস্থিতিকে ব্যবহার করছে। সম্প্রতি সরকারবিরোধী আন্দোলনের সময়ে বিক্ষোভকারীরা গোতাবায় ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়ার পাশাপাশি ভারতের বিরুদ্ধেও স্লোগান দিয়েছে। বিক্ষোভকারীরা বিক্ষোভের সময়,Don’t sell the country to India and the USA Ges India don’t exploit Sri LankaÕs situation ইত্যাদি। ভারতবিরোধী যে স্লোগানই দেওয়া হোক না কেন, শ্রীলংকার এ মহাসংকটে ভারত যদি সৎ উদ্দেশ্য নিয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়, তাহলে শ্রীলংকানদের বর্তমান মনোভাবের পরিবর্তন হতেও পারে। সরকারের পালাবদলের পর প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে মন্ত্রিপরিষদও নতুন করে গঠিত হলো। রনিল বিক্রমাসিংহের নেতৃত্বে নতুন সরকার শ্রীলংকার অর্থনৈতিক দুরবস্থা দূর করতে কতদিন নেয়, তা এখন দেখার বিষয়। রনিল বিক্রমাসিংহের হাতে এমন কোনো জাদুর কাঠি নেই যে, রাতারাতি বর্তমান পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তন করতে পারবেন। এ যেন তার জন্য এক অগ্নিপরীক্ষা! এ মুহূর্তে দেশের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনাই হবে প্রাথমিক কাজ। তার পরপরই দেশের জ্বালানি সমস্যার সমাধান করা, খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করা, সর্বোপরি দেশের অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান করা। এ উদ্দেশ্যে তিনি চলমান জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও এক মাস বাড়িয়েছেন, যাতে দেশটির সামরিক বাহিনী লোকজনকে আটক করতে পারে, জনসমাবেশ সীমিত করা ও মানুষের ব্যক্তিগত সম্পত্তি তল্লাশির ক্ষমতা পায় সেনাবাহিনী। রনিল ইতোমধ্যে শ্রীলংকায় বিক্ষোভের নেতৃত্ব দেওয়া ধানিজ আলীসহ অন্যান্য নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের আটক করেছেন। রনিল বিক্রমাসিংহে একজন অভিজ্ঞ রাজনীতিক। উদ্ভূত পরিস্থিতি নিজের সুবিধার জন্য কাজে লাগিয়ে তিনি এত দূর এসেছেন। গত মে মাসে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ভারসাম্য ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছেন। বর্তমানে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরও পশ্চিমা দেশগুলোর পাশাপাশি চীন ও ভারতের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখতে পারবেন বলে অনেকেই আশা করেন। ২০১৫-২০১৯ সালে ক্ষমতায় থাকাকালীন চীনকে সঙ্গে নিয়ে ভালো কাজ করেছিলেন তিনি। ভারতের সঙ্গেও গড়ে তুলেছিলেন উষ্ণ সম্পর্ক। এখন অন্যান্য রাষ্ট্রের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রেখে, প্রয়োজনীয় বৈদেশিক অর্থ জোগাড় করে, অর্থনৈতিক সংকটের খাদ থেকে দেশকে উদ্ধার করাই হবে রনিল বিক্রমাসিংহের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে বিভোক্ষকারীদের উচ্ছেদ করে, আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া কিছু নেতাকে আটক করে কিংবা জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়িয়ে, দেশকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার যতই চেষ্টা করা হোক না কেন, পরিস্থিতির সামগ্রিক উন্নতি হতে এখনো অনেক দেরি আছে। বাস্তব পরিস্থিতি হলো, সে দেশে এখনো কমেনি নিত্যপণ্যের দাম এবং মানুষের হতাশা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা প্রতিটি তেলের পাম্পে প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে মানুষ। সরবরাহের ঘাটতির জন্য পণ্যের মূল্য এখনো আকাশছোঁয়া। রনিল যদি মানুষের এ সংকটের আশু সমাধানের কোনো পথ দেখাতে না পারেন, তাহলে পুনরায় জনরোষ তৈরির আশঙ্কা আছে। জনগণের ভেতর ক্ষোভের যে আগুন একবার জ্বলে উঠেছে, রনিলের ক্ষমতা দখলের মধ্য দিয়ে এ আগুন একেবারে নিভে গেছে ভাবা ঠিক হবে না। বরং বলা যায়, এ ক্ষোভের আগুন আপাতত তুষের নিচে চাপা পড়ে আছে। জনগণের ইচ্ছা ও চাহিদার বিপরীত কিছু হলে পুনরায় আগুনের লেলিহান শিখা জ্বলে উঠবে। মনে রাখতে হবে, যুদ্ধের ময়দান থেকে প্রত্যাহার মানে যুদ্ধে পরাজয় নয়। বরং নতুন কোনো রণকৌশল নিয়ে পুনরায় পূর্ণ প্রস্তুতিতে ঝাঁপিয়ে পড়া। এ আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী অধিকাংশই তরুণ। তারা দৃঢ়, সংকল্পবদ্ধ। তাদের রয়েছে সাহস। রনিলের যে কোনো ভুল পদক্ষেপে ঐক্যবদ্ধ নেতৃত্বের অধীনে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়তে এসব তরুণের সময় লাগবে না। একেএম শামসুদ্দিন : অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা