বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ০৭:৫৬ অপরাহ্ন

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৬তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৬ আগস্ট, ২০২২

‘গাহি সাম্যের গান/ মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান…।’ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এভাবেই তার লেখনিতে মানবতার জয়গান গেয়েছেন। লিখেছেন দ্রোহ ও প্রেমের কবিতা। নানা মাত্রিকতায় বাংলা সাহিত্য ও সংগীতকে করেছেন মহিয়ান, করেছেন সমৃদ্ধ। আমাদের জাতীয় জাগরণের সেই কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৬তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ।
১৯৭৬ সালের এই দিনে (১৩৮৩ বঙ্গাব্দের ১২ ভাদ্র) তিনি ঢাকায় পিজি হাসপাতালে (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) ইন্তেকাল করেন। কবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়। প্রিয় কবিকে আজ গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় মানুষ স্মরণ করবে। কবি কাজী নজরুল ইসলামের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে সব আনুষ্ঠানিক আয়োজন বন্ধ থাকলেও জাতীয় কবির মৃত্যুদিবসে কিছু আয়োজন থাকছে। জাতীয় কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ বেতার, টেলিভিশন ও বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল তার গান, নাটক প্রচার ছাড়াও বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচারের উদ্যোগ নিয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকালে কবির সমাধিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ এবং ফাতেহা পাঠ ও পরে কবির মাজার প্রাঙ্গণে আলোচনা সভা। এরপর ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে আলোচনা সভা।
বাংলা একাডেমি কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিস্তারিত কর্মসূচির আয়োজন করেছে। সকালে একাডেমির পক্ষ থেকে জাতীয় কবির সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে। বেলা ১১টায় একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে একক বক্তৃতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এতে স্বাগত বক্তৃতা করবেন একাডেমির মহাপরিচালক কবি মোহাম্মদ নূরুল হুদা। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে রয়েছে নজরুলের কবিতা থেকে আবৃত্তি এবং নজরুলগীতি পরিবেশনা।
বাংলা সাহিত্যে বিদ্রোহী কবি হিসেবে পরিচিত হলেও তিনি ছিলেন একাধারে কবি, সঙ্গীতজ্ঞ, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্রকার, গায়ক ও অভিনেতা। তিনি বৈচিত্র্যময় অসংখ্য রাগ-রাগিনী সৃষ্টি করে বাংলা সঙ্গীত জগেক মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন। প্রেম, দ্রোহ, সাম্যবাদ ও জাগরণের কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা ও গান শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে সংগ্রামে জাতিকে উদ্বুদ্ধ করেছে। মুক্তিযুদ্ধে তার গান ও কবিতা ছিল প্রেরণার উৎস। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর পরই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কবিকে সপরিবারে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। ধানমন্ডিতে কবির জন্য একটি বাড়ি প্রদান করেন। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ১৩০৬ সালের ১১ জ্যৈষ্ঠ পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাক নাম ‘দুখু মিয়া’। পিতার নাম কাজী ফকির আহমেদ ও মা জাহেদা খাতুন। দারিদ্র্যের সঙ্গে সব সময় লড়াই করলেও অন্যায়ের সাথে তিনি কখনো আপস করেননি। শির উঁচু করে শোষণ ও অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন। মাথা নত করেননি লোভ-লালসা, খ্যাতি, অর্থ, বিত্ত-বৈভবের কাছে। আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন শোষিত-বঞ্চিত মানুষের মুক্তির জন্য। মানবতার মুক্তির পাশাপাশি সামপ্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতা, কুসংস্কার, কুপমন্ডুকতার বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন সোচ্চার। তার রচিত ‘চল্ চল্ চল্’ গানটি আমাদের রণসংগীত। ‘বিদ্রোহী’ কবিতা তার বৈপ্লবিক সৃষ্টি। ১৯২২ সালে তার বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ অগ্নিবীণা প্রকাশিত হয়। শুধু কবিতাতেই নয়, গান রচনায় নজরুল অসাধারণ প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। তার ইসলামী গান, গজল কিংবা শ্যামা সঙ্গীত বাংলাগানকে করেছে সমৃদ্ধ, নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায়। তিনি প্রায় তিন হাজার গান রচনা ও সুর করেছেন। নিজেকে সম্পৃক্ত করেছেন ধ্রুপদি ধারার সঙ্গে। ছোটগল্প, উপন্যাস, গান, নাটক লিখলেও মূলত বিদ্রোহী কবি হিসেবেই তিনি বেশি পরিচিত।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com