ভারত জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির মাওলানা সাইয়েদ জালালুদ্দিন উমরি ইন্তেকাল করেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। গত কয়েক দিন বেশ অসুস্থ থাকার পর স্থানীয় সময় শুক্রবার রাত ৯টার দিকে তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। মাওলানা সাইয়েদ জালালুদ্দিন উমরি দিল্লীর আশ-শেফা হাসপাতাল জামেয়া নগরে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গতকাল শনিবার সকাল ১০টায় নয়া দিল্লীর জামায়াতে ইসলামীর মারকাযে অবস্থিত মসজিদে ইশাআতে ইসলামে তার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। পরে তাকে দাফন করা হয় শাহিনবাগ কবরস্তানে।
সূত্র জানায়, গত বছর তিনি করোনায় আক্রান্ত হন। তখন তিনি শারীরিকভাবে দুর্বল ছিলেন। এরপর তিনি সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন শুরু করেন। গত সপ্তাহে অসুস্থ হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায়ই তিনি ইন্তেকাল করলেন।
মাওলানা জালালুদ্দিন উমারি একজন সুপরিচিত আলেম ছিলেন। তিনি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ভারত জামায়াত ইসলামীর শরিয়াহ কাউন্সিলের চেয়ারম্যান এবং অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ডের ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তাছাড়া তিন মেয়াদে তিনি ভারত জামায়াতে ইসলামীর আমিরের দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৭ সালে প্রথমবার তিনি আমিরের দায়িত্বপ্রাপ্ত হন এবং ২০১৯ সাল পর্যন্ত এ পদে বহাল ছিলেন। এর আগে দলটির নায়েবে আমিরের দায়িত্বও পালন করেন মাওলানা জালালুদ্দিন উমারি। গত বছর তিনি ইনস্টিটিউট অব অবজেক্টিভ স্টাডিজের তরফ থেকে চতুর্দশ শাহ ওয়ালিউল্লাহ অ্যাওয়ার্ড জিতেছেন। একইসাথে বক্তা ও লেখক হিসেবে তার অবস্থান ছিল অনেক ঊর্ধ্বে। ৫০টির ওপরে তিনি গ্রন্থ ও গবেষণাপত্র রচনা করেছেন। তার গ্রন্থগুলো ইংরেজি, আরবি ও তুর্কি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। উর্দু, ফার্সি, হিন্দি, ইংরেজিসহ বেশ কয়েকটি ভাষায় তার সমান দক্ষতা ছিল। মহান এই মনীষী ১৯৩৫ সালে দক্ষিণ ভারতের তামিল নাড়ুর উত্তর আরকোট জেলার পট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন করেন স্থানীয় স্কুলে। পরে জামিয়া দারুস সালামে ভর্তি হয়ে মাদরাসা শিক্ষার হাতেখড়ি নেন এবং ১৯৫৪ সালে এখান থেকে ফজিলত সম্পন্ন করেন। আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ইংরেজির ওপর বিএ কোর্স সম্পন্ন করেন। মাওলানা সাইয়েদ জালালুদ্দিন উমরির দুই ছেলে ও দুই মেয়ে আছেন। তারা হলেন- সাইয়েদ সাফি আতহার ও সাইয়েদ আলী আশরাফ এবং নুসরাত নগর ও তালাত নগর। সূত্র : মিল্লাত টাইমস ও উর্দু ডট মুনসিফ ডেইলি ডটকম