ঝিনাইদহের মহেশপুর থানার ওসি সেলিম মিয়ার ছোয়ায় পাল্টে যাচ্ছে মহেশপুর থানার চিত্র। পুরাতন ভবন ভেঙ্গে সেখানে সবজি চাষের উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। ইতিহাস থেকে জানা যায়, ইংরেজ আমলে (১৭৫৭-১৯৪৭) খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত প্রশাসনিক কাঠামোর আমূল পরিবর্তন ঘটে। লর্ড ওয়ারেন হেস্টিংসের সময় ঝিনাইদহ জেলায় বেশকিছু পুলিশ চৌকি ছিল। সে সময় যশোর অঞ্চলে চারটি থানা ছিল তারমধ্যে ভূষনা, মির্জানগর, ধরমপুর ও খুলনার নয়াবাদ থানা। এ সময় (১৭৭২-১৭৮৫) খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে বেশকিছু পুলিশ চৌকি স্থাপন করা হয়। এরমধ্যে মহেশপুর পুলিশ চৌকি একটি। ঐতিহাসিকদের মতে ১৭৭৬ সালে এই চৌকি স্থাপন করা হয়। ১৭৯২ সালে লর্ড কর্ণ ওয়ালিসের প্রশাসনিক সংস্কার কার্যকর হলে জমিদারি পুলিশি ব্যবস্থার প্রবর্তন করেন এবং ১৭৯৩ সালে মহেশপুর ও ঝিনাইদহ পূর্ণাঙ্গ থানায় রুপ পায়। সে সময় মহেশপুর ছিল ভারতের পশ্চিম বঙ্গের বনগাঁ,মহকুমা ও যশোর জেলার অন্তর্গত। ১৮৬৩ সালে ঝিনাইদহে মহকুমা কার্যক্রম শুরু হলে তার আগে কোটচাঁদপুর ২/৩ বছর মহকুমা কার্যক্রম চালু ছিল। ওই সময় মহেশপুর থানা বনগাঁ’র অধিন না কোটচাঁদপুরের অধিন তা সঠিকভাবে জানা যায়নি। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের সময় র্যাডক্লিফ রোয়েদাদে বনগাঁ ও গায়ঘাটা থানাদ্বয় যশোর হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে চব্বিশ পরগুনার সাথে যুক্ত হয়। মহেশপুর ভূ-খন্ড পূর্ব পাকিস্থান ভুক্ত হয়ে যশোর জেলা ও ঝিনাইদহ মহকুমা অন্যতম থানায় পরিনত হয়। এর পূর্বে ১৮৫৬ সালে জমিদারদের প্রচেষ্টায় মহেশপুর মাইনার স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হয় যেটি ১৮৬৩ সালে মহেশপুর ইংরেজী উচ্চ বিদ্যালয় হিসেবে মর্যাদা পায়। এরপর ১৮৬৯ সালে ব্রিটিশ সরকারের স্থানীয় সরকার আদেশ বলে পৌরসভা গঠন আইন পাশ হওয়ার পর ওই সালের ১লা এপ্রিল প্রতিষ্ঠিত হয় মহেশপুর পৌরসভা। মহেশপুরের জমিদারগন আগে থেকেই মহেশপুরকে একটি শহরে রুপ দেয়। শিক্ষিত জমিদারগন মহেশপুরকে নগরায়নের ফলে ১৭৯৩ সালে মহেশপুর মৌজার ১একর ৫শতক জমি দিয়ে থানা রুপান্তর করেন। ১৮০৮ সালে মহেশপুর থানার পুলিশদের জন্য পাঁকা ঘর নির্মাণ করা হয়। দেশ স্বাধীনের পর ব্রিটিশ আমলের কোন ঘরের অস্তিত্ব লক্ষ্য করা যায়নি। ১৯৪৭ সালের পর যে সমস্ত ঘর তৈরী করা হয়েছিল তার অস্তিত্ব লক্ষ্য করা গেছে। সর্বশেষ পাকিস্থান আমলের সেই পুরাতন বিল্ডিং পুলিশ হেড কোয়াটারের নির্দেশনায় অপসারন করে মহেশপুর থানার বর্তমান ওসি সেলিম মিয়ার উদ্যোগে ওই স্থানে সবজির চাষ করা হচ্ছে। বর্তমান যে বিল্ডিংগুলি বিদ্যমান তা দেশ স্বাধীনের পর। ওসি সেলিম মিয়া জানান, যে স্থানে সবজির চাষ করা হচ্ছে এখানে পরিত্যক্ত ভবন ছিল, যেখানে সাপ বিচ্চু বসবাসের জায়গা। সেটি পরিষ্কার করে তারা সবজির চাষ করছে। এই কাজে উপজেলা পরিষদ, মেয়র ও স্থানীয় এমপি নানাভাবে সহযোগিতা করছেন। ওসি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। ওসি আরো বলেন সবজির চাষ ছাড়াও বৃক্ষ রোপন ও ফুল বাগান করা হবে এতে থানাটি দৃষ্টি নন্দন হবে।