বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব
দক্ষিনাঞ্চলের মানুষের বহুল প্রতিক্ষিত পিরোজপুরের কঁচা নদীর উপর বেকুটিয়া পয়েন্টে নির্মিত বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব অষ্টম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু উদ্বোধন করা হয়েছে। রবিবার বেলা ১১টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে সেতুর উদ্বোধন ঘোষণা করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাত ১২.০১ মিনিটের সময় সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে। উদ্বোধন উপলক্ষে সেতুর কাউখালির কুমিরমরা প্রান্ত ও পিরোজপুরের বেকুটিয়া প্রান্তে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। পিরোজপুর প্রান্তে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমানের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী অ্যাডভোকেট শ. ম. রেজাউল করিম এমপি, পিরোজপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম এ আউয়াল, জেলাপুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান, পিরোজপুর পৌর মেয়র হাবিবুর রহমান মালেকসহ বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান উপস্থিত রয়েছেন। এদিকে সেতুর কাউখালী প্রান্তে কাউখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার খালেদা খাতুন রেখার সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন পিরোজপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন মঞ্জুসহ বিভিন্ন সরকারি কর্মচারী-কর্মকর্তা, বিভিন্ন দপ্তর প্রধান ও বিভিন্ন স্তরের সাধারণ মানুষ। পিরোজপুর জেলার বরিশাল-খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের বেকুটিয়ায় কঁচা নদীর ওপর নির্মিত এই সেতু উদ্বোধনের মাধ্যমে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কোটি-কোটি মানুষের আরও একটি স্বপ্ন পূরণ হলো। এর মাধ্যমে বিভাগীয় শহর বরিশালের সঙ্গে বিভাগীয় শহর ও শিল্পনগরী খুলনার সড়ক যোগাযোগে কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকছে না। কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত এবং গভীর সমুদ্রবন্দর পায়রার সঙ্গে দেশের ২য় সমুদ্রবন্দর মোংলা ও সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোলের সঙ্গে এবং সর্বপরি পিরোজপুরের সঙ্গে ঢাকার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ২০১৮ সালের ০১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঁচা নদীর ওপর বরিশাল-পিরোজপুর-খুলনা সড়কের বেকুটিয়া পয়েন্টে সেতু নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে সেতুর আনুষ্ঠানিক কাজ শুরু হয়। করোনা মহামারীর মধ্যেও নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে এই সেতু নির্মান কাজ শেষে করে চীনের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ‘চায়না রেলওয়ে ১৭তম ব্যুরো গ্রুপ কোম্পানী লিমিটেড’। সেতুটি নির্মান শেষে গত ০৭ আগস্ট ২০২২ তারিখে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই’র উপস্থিতিতে ঢাকাস্থ চীনা দুতাবাসের ইকনোমি মিনিষ্টার বাংলাদেশর সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে সেতুটি হস্থান্তর দলিলে স্বাক্ষর করেন। প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ মূল সেতুটির উভয় প্রান্তে ৪৯৫ মিটার ভায়াডাক্টসহ সেতুটির দৈর্ঘ প্রায় ১৫শ’ মিটার। ৯টি স্প্যান ও ৮টি পিয়ার বিশিষ্ট ১৩.৪০ মিটার প্রস্থ সেতুটির পিরোজপুর ও বরিশাল প্রান্তে ১ হাজার ৪৬৭ মিটার সংযোগ সড়কসহ পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা নির্বিঘ্ন রাখতে আরো ২টি ছোট সেতু ও বক্স কালভার্ট নির্মিত হয়েছে। আর এ সেতু নির্মানে খরচ হয়েছে ৮৯৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৬৫৪ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছে চীন সরকার। বাকি ২৪৪ কোটি টাকা নিজস্ব অর্থায়নে।