কলসীতে করে বিরামপুর শহরের দোকানে দোকানে পানি বেচে সংসার চালান বৃদ্ধা আঞ্জুয়ারা(৫৫)। তিনি সকালে ৫ কিলোমিটার দূর থেকে সপ্তাহের দু’দিন বিরামপুর হাটে এসে টিউবওয়েল ঠেসে পানি তুলে সন্ধা পর্যন্ত বিক্রি করে রোজগার করেন মাত্র ২০০ টাকা। আঞ্জুযারা বেগম জানান, তার পিতার জমি-জমা থাকলেও পিতা তাকে কিছুই দিয়ে যাননি। একারণে পিতার পরিত্যাক্ত জমিতে ঘর তুলে স্বামী ও তিন কন্যা সন্তান নিয়ে বসবাস করছিলেন। প্রায় ৩০ বছর আগে তার স্বামী মৃত্যু বরণ করে। তখন ৩ মেয়েকে প্রতিপালনে তিনি দিশেহারা হয়ে অন্যের বাড়িতে ঝি-এর কাজ শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি অসুস্থতার কারণে ঝি-এর কাজ ছেড়ে দেন। বিরামপুর শহরে সপ্তাহে দু’দিন বড় হাট বসে। এই হাটে হোটেল, মিষ্টি ও চায়ের অস্থায়ী দোকানে পানি সরবরাহের কাজ শুরু করেন। প্রায় ১২ বছর ধরে টিউবওয়েল ঠেসে পানি তুলে দোকানে দোকানে বিক্রি করে আসলেও তার মজুরি বাড়েনি। ৫টি দোকানে দিনভর পানি দিয়ে মজুরি পান মোট ১৫০ টাকা এবং একটি দোকানদার দেয় ১০০ টাকা। প্রতি হাটে এই ২৫০ টাকা মজুরি পেলেও বাড়ি থেকে যাতায়াতে তার ৫০ টাকা খরচ হয়। হাট প্রতি মজুরি ২০০ টাকা এবং বিধবা ভাতার টাকায় এক কন্যা সন্তানকে নিয়ে কোন রকমে জীবিকা নির্বাহ করেন। অসুস্থতার কারণে কলসীতে করে পানি সরবরাহ তার জন্য কষ্টকর হলেও জীবিকার তাগিদে এছাড়া তার কোন গত্যন্তর নেই। তবে বসে থাকার কোন কাজ পেলে তিনি বাঁকি জীবন স্বস্তিতে কাটাতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এ বিষয়ে বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পরিমল কুমার সরকার বলেন, ঐ নারী আমাদের নিকট আবেদন করলে তাকে দোকান করে দেওয়া বা আর্থিক সহায়তা দিয়ে স্বাবলম্বী করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।