নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেছেন কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধী। গত মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) চাণক্যপুরীর হোটেল আইটিসি মৌর্যে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। দ্য হিন্দুর খবরে এ কথা বলা হয়। কংগ্রেস জানায়, তারা বেশ কয়েকটি বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা করেছেন।
চার দিনের সফরে সোমবার নয়াদিল্লি পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি তার ভারতীয় সমকক্ষ নরেন্দ্র মোদির সাথে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করেছেন। যেখানে উভয়পক্ষ বাণিজ্য এবং নদীর পানি বণ্টনসহ গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন। শেখ হাসিনা ২০১৯ সালে শেষবার ভারতে গিয়েছিলেন।
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধন করলেন দুই প্রধানমন্ত্রী: উদ্বোধন করা হলো বাগেরহাটের রামপালে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট সক্ষমতার সুপার ক্রিটিক্যাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র মৈত্রী পাওয়ার প্লান্টের ১ নম্বর ইউনিট। গতকাল দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যৌথভাবে ভার্চুয়ালি কয়লাচালিত এ বিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধন করেন।
এর আগে দিল্লির হায়দরাবাদ হাউজে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা করেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতে দুই দেশের প্রতিনিধিরা সাতটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করেন। এমওইউ সইয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে ভিডিও ডকুমেন্টারির মাধ্যমে পাঁচটি প্রকল্পের উন্মোচন, উদ্বোধন ও ঘোষণা দেয়া হয়। প্রকল্পগুলোর একটি হলো রামপালে মৈত্রী তাপভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট। নির্মাণকাজ শেষে গত ১৫ আগস্ট থেকে ওই ইউনিটটি পরীক্ষামূলকভাবে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে। দুই প্রধানমন্ত্রী যৌথভাবে এ ইউনিট উদ্বোধন করেন। বাগেরহাটের রামপালে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট সুপার ক্রিটিক্যাল কয়লাচালিত তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রটি আনুমানিক ২০০ কোটি ডলার ব্যয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে ভারত ১৬০ কোটি ডলার রেয়াতি ঋণ দিচ্ছে। ভিডিও ডকুমেন্টারিতে রূপসা রেলসেতু উদ্বোধনের কথা জানানো হয়। ৫ দশমিক ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ ওই সেতু খুলনা ও মোংলা বন্দরকে রেলপথের মাধ্যমে সংযুক্ত করবে। রূপসা নদীতে রেলসেতু নির্মাণের কাজ গত জুলাইয়ে শেষ হয়েছে। সংযোগ রেললাইনসহ এ সেতুর মোট দৈর্ঘ্য ৫ দশমিক ১৩ কিলোমিটার হলেও মূল রেলসেতুর দৈর্ঘ্য ৭১৬ মিটার। স্টিলের তৈরি এ সেতুর নির্মাণসামগ্রী ভারত থেকে সড়ক, সমুদ্র ও অভ্যন্তরীণ নদীপথে আমদানি করা হয়েছিল। ভারত সরকারের ঋণে নির্মিত এ সেতুর ফলে খুলনা থেকে মোংলার পথে পণ্য পরিবহনে সুবিধা মিলবে।
এছাড়া বাংলাদেশ সড়ক ও জনপথ বিভাগকে ২৫টি প্যাকেজে সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ এবং নির্মাণ সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি সরবরাহ করার ঘোষণা দিয়েছে ভারত। ৩১ কোটি ২৪ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার ব্যয়ে খুলনা-দর্শনা রেললাইন সংযোগ প্রকল্প উন্নয়নের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। পার্বতীপুর-কাউনিয়া রেললাইন বিদ্যমান মিটার গেজ লাইনকে ডুয়াল গেজ লাইনে রূপান্তরের জন্য ১২ কোটি ৪ লাখ ১০ হাজার ডলার ব্যয়ে প্রকল্প ঘোষণা দেয়া হয়। প্রকল্পটি আন্তঃসীমান্ত রেলের সঙ্গে রেলের সংযোগ স্থাপন করবে এবং দ্বিপক্ষীয় রেল সংযোগ বাড়াবে। এছাড়া বাংলাদেশের সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের জন্য নির্মাণসামগ্রী ও যন্ত্রপাতি হস্তান্তর, খুলনা-দর্শনা রেলপথ ও পার্বতীপুর-দর্শনা রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পেরও উদ্বোধন ঘোষণা করেন দুই প্রধানমন্ত্রী।