উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের হস্তক্ষেপে ২৪ ঘন্টার মধ্যে পাবনা মানসিক হাসপাতালের চিকিৎসাসেবাসহ সকল ধরনের কার্যক্রম শুরু করেন। গতকাল রোববার পাবনা মানসিক হাসপাতালের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা: রতন কুমার রায়ের নির্দেশে আউটডোরে রোগী ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ করে দেন। সকালে স্বাস্থ্য বিভাগের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তা আবার পুনরায় সকল কার্যক্রম চালু করেন। আদালতের নিষেধাজ্ঞায় পণ্য ক্রয় করতে না পারায় রোগীদের খাদ্য ও ওষুধ সংকট দেখা দিয়েছে। বর্তমানে স্থানীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে বাকীতে খাদ্য সামগ্রী সরবরাহ চালু রেখেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। জানা যায়, ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য পাবনা মানসিক হাসপাতালের পথ্যসহ বিভিন্ন দ্রব্য ক্রয়ের জন্য ২০২১ সালের ২৪ মে মানসিক হাসপাতালের পরিচালক (স্মারক নং ২০২১/১২০১) দরপত্র আহ্বান করেন। এদিকে রোজ এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওই দরপত্র শিডিউলে কিছু ভুলভ্রান্তি ও পরিচালক অন্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগসাজশে কাজ দেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে মর্মে আদালতে একটি নিষেধাজ্ঞা জারির আবেদন করে। আদালত দরপত্রের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করলে হাসপাতালের পথ্য সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। আদালতে বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পথ্য ক্রয়ে পুনঃদরপত্র আহ্বান করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে ভর্তীকৃত রোগীদের খাদ্য সরবরাহ নিয়ে বিপাকে পড়েছে মানসিক হাসপাতাল প্রশাসন। এদিকে দরপত্র নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হলে ২০২১-২২ অর্থবছরে রোগীদের পথ্য সরবরাহের জন্য স্থানীয় আদেশে পূর্বনিযুক্ত ঠিকাদার খাদ্য সরবরাহ করেন কিন্তু ২০২১-২২ অর্থবছর অতিক্রান্ত হলে বিপাকে পড়ে যায় হাসপাতাল প্রশাসন। কারণ দ্বিতীয়বারের জন্য আদেশ দিতে হলে হাসপাতাল প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমুতির প্রয়োজন। সে কারণে হাসপাতাল প্রশাসন ভর্তীকৃত রোগীদের জন্য হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারী সমন্বয়ে কমিটি করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে বাকিতে খাদ্য দ্রব্য ক্রয় করে আসছে। কিন্তু বকেয়া বিল পরিশোধ না করায় সরবরাহকারীরা খাদ্য দিতে অপরাগতা প্রকাশ করে। এদিকে হাসপাতালের নিয়মে পরিচালক বছরের বিনা টেন্ডারে ১০ লাখ টাকার বেশি খাদ্য ও পথ্য ক্রয় করতে পারবে না। বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার লিখিত ভাবে জানানো হলেও কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরত্ব না দেওয়ায় পরিচালক নতুন রোগী ভর্তি বন্ধ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন বলে হাসপাতালের পরিচালক এটিএন বাংলাকে জানান। এ নিয়ে পরিচালক আইনি জটিলতা থেকে রক্ষা পেতে নতুন রোগী ভর্তি বন্ধ করে দেন। পাবনা মানসিক হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডাঃ রতন কুমার রায় বলেন, আমি একাধিকবার হাসপাতালের টেন্ডারের বিষয় নিয়ে আমাদের উদ্ধতন কর্তপক্ষের দফতরে গিয়েছি। দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও সমস্যার সমাধানে কোন উদ্যোগ গ্রহন করেনি কর্তৃপক্ষ। বাধ্য হয়ে আমি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি। উল্লেখ্য দেশের মানসিক রোগীদের চিকিৎসা ও পূর্ণবাসনের লক্ষ্যে ১৯৫৭ সালে শীতলাই হাউজে পাবনা মানসিক হাসপাতাল অস্থায়ীভাবে স্থাপন করা হয়। স্থাপনের ২ বছর পর ১৯৫৯ সালে হাসপাতালটি হেমায়েতপুরে ১১১ দশমিক ২৫ একর জায়গার উপরে স্থানান্তরর করা হয়। প্রাথমিক অবস্থায় হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা ছিলো ৬০টি যা বেড়ে এখন দাঁড়িয়েছে ৫০০টি।