বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেছেন, সরকারের লাগামহীন দুর্নীতি, অনিয়ম ও বাজার সিন্ডিকেটের কারণেই মূল্যস্ফীতি এখন অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। অস্বাভাবিকভাবে বাড়ানো হয়েছে জ¦ালানী তেলের দাম। ফলে দেশে নিরব দুর্ভিক্ষ শুরু হয়েছে। তিনি অবিলম্বে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ এবং বাজারে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান। অন্যথায় ব্যর্থতার জন্য সরকারকে জনরোষের মুখোমুখী হতে হবে।
তিনি গত ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে এবং বন্দী নেতৃবৃন্দ ও ওলামায়ে কেরামের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এক বিক্ষোভ পরবর্তী সমাবেশে এসব কথা বলেন। বিক্ষোভ মিছিলটি বাড্ডা ব্রিজ থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে গুলশান লিংক রোডে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি লস্কর মোহাম্মদ তসলিম, মাহফুজুর রহমান, নাজিম উদ্দীন মোল্লা ও ডাঃ ফখরুদ্দীন মানিক, ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য ইয়াছিন আরাফাত, শুরা সদস্য মুহাম্মদ আতাউর রহমান সরকার, ফজলে আহমেদ ফজলু ও কুতুব উদ্দীন প্রমূখ।
রেজাউল করিম বলেন, সরকার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে রাজনৈতিক ও আদর্শিকভাবে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়ে বিরাজনীতিকরণের ঘৃণ্য পথ বেছে নিয়েছে। সে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবেই জুলুমবাজ সরকার কথিত বিচারের নামে জামায়াতের ৫ শীর্ষতোকে নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছে। সরকারের জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়ে এখনো কারাগারে অন্তরীণ রয়েছেন বিশ^বরেণ্য মুফাসসিরে কুরআন, সাবেক এমপি ও নায়েবে আমীর আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি মাওলানা আ ন ম শামসুল ইসলাম, সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম ও মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান। কিন্তু জুলুম-নির্যাতন চালিয়ে অতীতে কোন স্বৈরাচারি ও অনগণতান্ত্রিক শক্তির শেষ রক্ষা হয়নি, আর কারো হবেও না। তিনি প্রতিহিংসার রাজনীতি পরিহার করে অবিলম্বে কারাবন্দী সকল রাজনৈতিক নেতাকর্মীর নিঃশর্ত মুক্তির জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান। অন্যথায় দুর্বার গণআন্দোলনের মাধ্যমে জাতীয় জনগণই তাদেরকে মুক্ত করবে-ইনশাআল্লাহ।
তিনি বলেন, সরকার দেশ থেকে ইসলাম ও ইসলামী মূল্যবোধ ধ্বংস করতে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। আর সে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবেই আলেম-উলামাদের ওপর দলন-পীড়ন চালানো হচ্ছে। তারা জাতিকে ধর্মবিমূখ করার জন্য পাঠসূচি থেকে অত্যন্ত সুকৌশলে ধর্মশিক্ষা বাদ দিয়েছে। তাদের সে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্যই দেশ বরণ্যে আলেমদের বিশেষভাবে টার্গেট করা হয়েছে। আর সে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবেই সরকার দেশের শত শত বরেণ্য আলেমকে কারারুদ্ধ করে জুলুম-নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু নায়েবে নবীদের ওপর জুলুম-নির্যাতন অতীতে কারো জন্য সুখকর হয়নি বরং তাদেরকে ইতিহাসের আস্তকুড়ে নিক্ষিপ্ত হতে হয়েছে। তিনি সময় থাকতে শুভ বুদ্ধির পরিচয় দিয়ে অবিলম্বে কারারুদ্ধ আলেমদের নিঃশর্ত মুক্তি দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান। অন্যথায় তৌহিদী জনতা ঘরে বসে তামাশা দেখবে না।
তিনি আরও বলেন, সরকার জনগণের ম্যান্ডেট নির্ভর না হয়ে এখন বিদেশী প্রভূ নির্ভর হয়ে পড়েছে। এই দাবির আত্মস্বীকৃতি মিলেছে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য থেকে। প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক ভারত সফর ও দেশটিকে সব কিছু উজার করে দেয়ার মাধ্যমে সে কথা আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। তাই দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থেই এই গণবিরোধী ও অগণতান্ত্রিক সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করতে হবে। তিনি সরকার পতন ও নির্বাচনকালীন কেয়ারটেকার সরকারের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সকল রাজনৈতিক শক্তিকে রাজপথে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।