আর মাত্র পক্ষকাল পরেই সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বৃহত্তর ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। ফলে মন্ডপে মন্ডপে চলছে দেবী দুর্গার প্রতিমা তৈরির কাজ। প্রতিমা তৈরির কারিগররা ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ বছর জেলায় ৪৩৪টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। জেলার ১৩টি উপজেলায় ১২টি ব্যক্তিগতসহ ৪২২টি পূজা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। একেকজন কারিগরকে তিন থেকে পাঁচটি প্রতিমা তৈরির কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। কিশোরগঞ্জের কালীবাড়ীতে প্রতিমা তৈরির কাজ করতে দেখা গেছে, দিলীপ পাল ও তার সহকারী শিল্পীরা প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন। সবাই ব্যস্ত প্রতিমার গায়ে কাদা মাটির প্রলেপ লাগাতে। আর কদিন পর এসব প্রতিমার গায়ে রঙ-তুলির আঁচড় পড়বে বলে জানান শিল্পীরা। বাবুল আচার্য্য জানান ছোটবেলা থেকেই এ পেশায় সম্পৃক্ত। পঞ্চমীর রাতের আগেই তাদের প্রতিমার সব কাজ শেষ করতে হবে। সময় মতো প্রতিমা সরবরাহ করতে দিনরাত এক করে তারা কাজ করছেন। প্রতিমা শিল্পীরা জানিয়েছেন, একটি প্রতিমা তৈরিতে শিল্পীদের ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়। প্রতিমা তৈরির জন্য লাগে মাটি, খড়, কাঠ, বাঁশ, দড়ি, পেরেক, সুতা, ধানের তুষ ও কয়েক ধরণের রঙ কিনতে তাদের এই টাকা খরচ হয়। একেকটি প্রতিমা ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। শিল্পীরা জানান, একটি প্রতিমা তৈরি করতে সময় লাগে ১০ থেকে ১৫ দিন। প্রতিমা তৈরিতে কয়েকজন শিল্পী একসঙ্গে কাজ করেন। একেকজন শিল্পী প্রতিমার এক এক কাজে হাত দেন। সবার সম্মিলিত কাজে পূর্ণতা পায় একেকটি প্রতিমা। প্রতিমা বিক্রির পর যে টাকা লাভ হয়, তা তারা সবাই মিলেই ভাগ করে নেন। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি এ্যাড. ভূপেন্দ্র ভৌমিক দোলান জানান, এ বছর নির্বিঘেœ পূজা উদাপনের জন্য প্রশাসনের পাশাপাশি পূজা উদযাপন পরিষদের নেতাকর্মীরা সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখবেন। যাতে করে পূজাকালীন সময় কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম জানান, দুর্গাপূজা উপলক্ষে সব পূজা মন্ডপে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। পূজা মন্ডপগুলো সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। পূজা মন্ডপে আনসার, ভিডিপি, পুলিশ ও র্যাবের পাশাপাশি সাদা পোশাকে থাকবেন গোয়েন্দারা। মন্ডপ এলাকায় যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। কেউ যেন কোনো প্রকার সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করতে না পারে সে জন্য সর্বদা তৎপর থাকবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ পিপিএম (বার) জানান, শান্তিপূর্নভাবে পূজা উদযাপনের লক্ষ্যে প্রত্যেকটি মন্ডপ এলাকায় নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া হবে। আয়োজকদের পাশাপাশি পুলিশের বাড়তি নজরদারী থাকবে।