দিনের পর দিন নির্বিচারে চলছে পাহাড় কাটার মহোৎসব। পরিবেশ অধিদপ্তরসহ স্থানীয় প্রশাসনের কোনো অনুমতি ছাড়াই পাহাড় কাটা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়, বান্দরবানের আজিজ নগর উপজেলার কাটা পাহাড় নামক এলাকায় এক্সেক্যাভেটর দিয়ে ৫০ ফুট উচুঁ পাহাড় কেটে সাবাড় করে ফেলেছে দৃর্বৃত্তরা। এ পাহাড়টি বালুকৃত হওয়ায় প্রায় অর্ধ কোটি টাকার বালু বিক্রি করেছে বলে স্থানীয়রা জানান। স্থানীয় নূরুল আলম জানান, ওই এলাকার মৃত মৌলনা শরীফ উল্ল্যাহর পুত্র মুহাম্মদ হাবিবউল্লাহ পাহাড় কেটে মাটি ও বালু বিক্রি করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হওয়ায় গত এক সপ্তাহ ধরে বন্ধ রেখেছেন বলেও জানান। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক আজিজনগর ষ্টেশন থেকে মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরে পাঁচ একর আয়তনের ৫০ ফুট উঁচু পাহাড় কেটে সমতাল করা হয়েছে। পাহাড়ের চূড়ায় ও পাদদেশে নানা গাছপালা ছিল, এখন চিহৃও নেই। গতকাল বুধবার সেখানে গিয়ে এই দৃশ্য দেখা যায়। অভিযুক্ত পাহাড়খেকো হাবিব উল্ল্যাহ’র মুঠোফোনে বার বার কল দিলেও বন্ধ পাওয়া যায়? পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে যেকোনো ধরনের পাহাড় কাটা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ (সংশোধন) আইন ২০১০ অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সরকারি বা আধা সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন বা দখলাধীন বা ব্যক্তিমালিকানাধীন পাহাড় ও টিলা কর্তন বা মোচন করা যাবে না। তারপরও এমন জনবহুল এলাকায় পুরো পাহাড় কেটে ফেলায় সচেতন মহলকে হতবাক করেছে। এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর বান্দরবানের সহকারী পরিচালক ফখরুদ্দীন চৌধুরী বলেন, বিষয়টি আপনার মাধ্যমে জানলাম। আমাদের কার্যালয় থেকে কাউকে পাহাড় কাটার কোনো ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি। এটি সম্পূর্ণ বেআইনি। এ ব্যাপারে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ স্থানীয় আব্দুল্ল্যাহ বলেন, এ রকম পাহাড় কাটার ঘটনা অহরহ ঘটছে। কোথাও প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানা যায়নি। এ ব্যাপারে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ মোস্তফা জাবেদ কায়সার বলেন, পাহাড় কাটার খবর আমার জানা নেই। সত্যতা যাচাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ স্থানীয় কবির আহমদ বলেন, নিজস্ব ফায়দা লুটতে পাহাড়ের মাটি কেটে বিক্রি করেছে, নানা স্বার্থে এসব পাহাড়গুলোকে নির্বিচারে বিলীন করে দিয়েছে। জানা গেছে, সকাল থেকে রাত সমান তালে চলে পাহাড় কাটার কাজ। তবে বেশিরভাগ সময়ে নিঝুম রাতে চলে বনাঞ্চলের আবৃতে ঘেরা পাহাড় কাটার ধুম। বিগত কয়েক মাস ধরে পাহাড়টি কেটে সমতল করা হয়েছে। এ নিয়ে স্থানীয় লোকজনের মাঝে চাপা ক্ষোভ থাকলেও ভয়ে কেউ মুখ খুলতেও পারছেন না। ক্ষমতার দাপট ও প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রাতের আধাঁরে পাহাড়ের মাটি কেটে সাবাড় করে ফেলেছে। ফলে পরিবেশ মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, উঁচু পাহাড়ের মাঝখানে মাটি কেটে করা হয়েছে সমতল। পাশেই অস্থিত হারানোর পাহাড়ের ক্ষত চিহ্ন। পাহাড়ের মাটি কাটার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে অত্যাধুনিক স্ক্যাবেলেটর। যার মাধ্যমে দ্রুততার সঙ্গে পাহাড়ের মাটিগুলোকে কেটে ফেলা হয়েছে।