সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:০৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
পুঁইশাক চাষে সফল সুফিয়া, আগ্রহী হচ্ছে অন্য কৃষকরাও অতিরিক্ত টোল আদায় করলেই ইজারা বাতিল-ভোলায় উপদেষ্টা সাখাওয়াত কৃতি ফিরোজীকে বাঁচাতে সাভারে চ্যারিটি কনসার্ট আওয়ামী লীগের সাথে দ্বন্দ্ব নাই, যারা অন্যায় করেছে তাদের বিচার চাই-আব্দুল আউয়াল মিন্টু জলঢাকায় গণঅধিকার পরিষদের গণসমাবেশ সোনারগাঁওয়ে মাসব্যাপি লোককারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব শুরু শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানে ৮৯তম জন্মদিন উপলক্ষে আগৈলঝাড়া বিএনপি’র উদ্যোগে আনন্দ র‌্যালি পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্ষতিগ্রস্তুদের অবস্থান কর্মসূচি জামালপুর পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড বিএনপির আয়োজনে দুস্থদের মাঝে কম্বল বিতরণ ভুট্টা চাষে দেশের শীর্ষে চুয়াডাঙ্গা: ৫৯,৬৫৬ হেক্টর জমিতে আবাদ

প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির দ্বন্দ্বে বিদ্যালয়ে অচলাবস্থা

প্রদীপ কুমার দেবনাথ (বেলাব) নরসিংদী
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২

নরসিংদীর বেলাব উপজেলার দক্ষিণধরু উচ্চবিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির সভাপতির বিভিন্ন বিষয়ে দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছেছে। একে অপরের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে উভয়পক্ষ ব্যবস্থা নিয়েছেন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক আবু তাহের ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবুল কালাম ভূঁইয়া। অনিয়মের অভিযোগে প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করেছেন সভাপতি। অন্যদিকে প্রধান শিক্ষকও অনিয়মের অভিযোগ তুলে সভাপতির বিরুদ্ধে শিক্ষা বোর্ডে লিখিত অভিযোগ করেছেন। এতে প্রাতিষ্ঠানিক শৃঙ্খলা ও শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি বিপাকে পড়েছেন বিদ্যালয়টির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এমপিওভুক্ত এই বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী সংখ্যা ৪৫০ জন। শিক্ষক ও কর্মচারীদের সংখ্যা ১৫ জন। বিদ্যালয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বিদ্যালয়টির একটি নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেওয়া প্রার্থীদের মধ্যে নির্বাচিত প্রার্থীদের চূড়ান্তভাবে চাকরি না দেওয়া নিয়ে দুজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। চলতি মাসে প্রধান শিক্ষক আবু তাহের ও বর্তমান পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবুল কালাম ভূঁইয়ার মধ্যে সেই দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছায়। এর আগে ২৮ জুলাই প্রধান শিক্ষকের নানা অনিয়মের জবাব চেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় পরিচালনা কমিটি। এর জবাব না দিয়ে গত ২৩ আগস্ট বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবুল কালাম ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে একটি লিখিত অভিযোগ দেন প্রধান শিক্ষক। ১২ সেপ্টে¤॥^র প্রধান শিক্ষক আবু তাহেরকে সাময়িক বরখাস্ত করেন সভাপতি আবুল কালাম ভূঁইয়া। ম্যানেজিং কমিটির নোটিশে প্রধান শিক্ষক আবু তাহেরের বিরুদ্ধে শিক্ষক ও কমিটির সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ, বিদ্যালয়ে না এসেই হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর, বর্তমান কমিটি নির্বাচিত হওয়ার পর বারবার আমন্ত্রণ পাওয়ার পরও সভায় উপস্থিত না হওয়া, বিদ্যালয়ের ল্যাপটপ-মুঠোফোনসহ বিভিন্ন জিনিস ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার, বিদ্যালয়ের রেজুলেশন ও নোটিশ খাতা বিদ্যালয়ের কাজে ব্যবহার করতে না দেওয়া ও বাসায় নিয়ে যাওয়া, বিদ্যালয়ের তাহবিল থেকে দীর্ঘদিন আগে ৩৫ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ফেরত না দেওয়া, সভাপতির সঙ্গে অশালীন আচরণ করা, নবনির্মিত ভবন থেকে বেআইনিভাবে কমিশন নেওয়া, ঈদুল আজহার সময় শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-বোনাস না দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়। অপরদিকে কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব না দিয়ে প্রধান শিক্ষক আবু তাহের গত ২৩ আগস্ট বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবুল কালাম ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। সভাপতি হওয়ার তিন মাসের মধ্যে কমিটির প্রথম সভা না করা, নোটিশ খাতা ও রেজুলেশন খাতা ব্যক্তিগতভাবে কিনে তাতে বাসায় বসে কমিটির কিছুসংখ্যক সদস্যের স্বাক্ষর রাখা, বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের ঠিকাদারের কাছ থেকে উন্নয়নের জন্য পাওয়া ৭০ হাজার টাকা সাধারণ তহবিলে জমা না দিয়ে মাত্র ১০ হাজার টাকার মাটি ভরাট করে বাকি ৬০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করা, আজীবন দাতা সদস্য হিসেবে এককালীন ১৫ হাজার টাকা জমা না দেওয়া, কিছু শিক্ষককে নিয়ে গ্রুপিং করা ও বিদ্যালয়ে শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজ করার অভিযোগ আনা হয় সভাপতির বিরুদ্ধে। কথা হলে বিদ্যালয়ের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. বাহাউদ্দীন ভূঁইয়া বলেন, প্রধান শিক্ষক আবু তাহের অনেকটা স্বৈরাচারী মনোভাব পোষণ করেন। তিনি বর্তমান পরিচালনা কমিটিকে মানেন না। তিনি সবসময় কমিটিকে ডিঙিয়ে সব কাজ একাই করতেন। কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের মধ্যে সমন্বয়হীনতার জন্যই বিদ্যালয়টিতে আজ এই অবস্থা। শিক্ষার্থীরা জানায়, সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের দ্বন্দ্বে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে চরমভাবে। ঠিকমতো চলছে না শ্রেণি কার্যক্রম, কারণে অকারণে বন্ধ থাকছে প্রতিষ্ঠান। এসব বিষয়ে কথা হলে সভাপতি আবুল কালাম ভূঁইয়া বলেন, প্রধান শিক্ষক কমিটির সঙ্গে সমন্বয় করে কোনো কাজ করেন না এবং মিটিংয়েও আসেননা। তাঁর বিরুদ্ধে কমিটি ও অন্য শিক্ষকেরা অতিষ্ঠ। অফিসে কোন কাজ করেন না। রেজুলেশন ও নোটিশ বই বাড়িতে নিয়ে কাজ করেন। এসব অনিয়মের প্রেক্ষিতে কারণ দর্শানোর নোটিশ তিনবার দেওয়া হলেও তিনি কোন জবাব দেননি । এসব কারণে কমিটি তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক আবু তাহের বলেন, ‘সভাপতির বিরুদ্ধে আমি শিক্ষা বোর্ডে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। এই অভিযোগের তদন্ত চলাকালে তিনি আমাকে কোনোভাবে সাময়িক বরখাস্ত বা অন্য কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেন না। আমার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা। আমাকে দায়িত্ব থেকে সরানোর জন্যই তাঁরা এসব অভিযোগ করেছেন।’ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ মতিউর রহমান বলেন, প্রধান প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির দ্বন্দ্বে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সভাপতির বিরুদ্ধে বর্তমানে প্রধান শিক্ষকের দেওয়া একটি অভিযোগের তদন্ত চলছে। প্রধান শিক্ষককে নোটিশের বিষয়ে তিনি জেনেছেন। তবে সাময়িক বরখাস্তের ব্যাপারে কিছু জানেন না।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com