শেরপুর জেলার শ্রীবরদী উপজেলার ২নং রাণীশিমূল পাইলট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ সোহাগ কর্তৃক ইউপি সদস্যদের সাথে অনৈতিক আচরণ ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্যদের কুপ্রস্তাবসহ নীতি বহির্ভূত অন্যায় কাজের প্রতিবাদে ৩ অক্টোবর সোমবার উপজেলার বালিজুড়ি বাজারে ইউনিয়ন পরিষদের ১০ জন ইউপি সদস্যের উপস্থিতিতে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা, চেয়ারম্যানের বিভিন্ন প্রকল্পে অনিয়ম, মহিলা ইউপি সদস্যদের অনৈতিক প্রস্তাব, আত্মীয়স্বজন দিয়ে পরিষদ চালানোসহ নানা অভিযোগ করেন। এ সময় তারা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে চেয়ারম্যানের বহিষ্কার দাবি করেন।
এ সময় ইউপি সদস্যরা লিখিত অভিযোগে বলেন, আমরা ২নং রানীশিমুল পাইলট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল হামিদ সোহাগের নির্যাতনে অতিষ্ঠ। তিনি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ইউনিয়নে বিভিন্ন অপকর্ম ও প্রকল্পে অনিয়ম শুরু করেছেন। তারা বলেন, চেয়ারম্যানের অপকর্ম ও অনিয়মে বাঁধা দেয়ায় চেয়ারম্যানের ভাই ও আত্মীয়রা ইউপি সদস্যদের মারধর ও হুমকি দেন। এছাড়া বিভিন্ন সময় স্কুল কলেজের কিশোরী ছাত্রী ও নারী ইউপি সদস্যদের অনৈতিক প্রস্তাব দেয়ার প্রতিবাদ করলে হাত পা কাটা ও গুম করে দেয়ার হুমকি প্রদান করেন।
৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মজিবর রহমান বলেন, এই চেয়ারম্যান দুশ্চরিত্র লোক। তিনি বিভিন্ন সময় ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে জন্ম নিবন্ধন ও বিভিন্ন কাগজপত্রে স্বাক্ষর নিতে আসা কিশোরী ছাত্রীদের বাজে মন্তব্য ও অনৈতিক প্রস্তাব দেন। তাই ভয়ে এখন কেউ কেউ পরিষদে আসাই বাদ দিয়েছেন।
সংরক্ষিত নারী সদস্য সাহারা বেগম বলেন, ওই চেয়ারম্যান আমাদেরও অনৈতিক প্রস্তাব দেয়। তার কথায় রাজি না হওয়ায়, পরিষদে ঢুকতে দেয় না। সবার সামনে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করেন। ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মুস্তাক মিয়া বলেন, চেয়ারম্যান তার স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে সব প্রকল্পে অনিয়ম করেন। তার আত্মীয়দের নিয়ে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেন। এসবের বিরুদ্ধে কিছু বলতে গেলে সে আমাদের মারধর করেন, আবার আমাদের পরিষদ থেকেও বের করে দেন।
১নং ওয়ার্ডের নারী সদস্য কারিনা বলেন, টিসিবি পণ্যের অনিয়ম নিয়ে বিরোধিতা করতে গেলে চেয়ারম্যান ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. মজিবর রহমানকে মারধর করে। ওই সময় সংরক্ষিত মহিলা সদস্য সাহারা বেগম ফিরফার করতে গেলে চেয়ারম্যান দুজনকেই কিলঘুষি, চর থাপ্পর মারিয়া ইউপি পরিষদ কার্যালয় থেকে বাহির করে দেয়। চেয়ারম্যানের দুর্নীতি অনিয়ম ও ইউপি সদস্যদের মারধর করায় উপজেলা চেয়ারম্যান, নির্বাহী অফিসার ও শেরপুর জেলা প্রশাসক বরাবর আমরা অভিযোগ দায়ের করেছি। আমরা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কাছে চেয়ারম্যানের দুর্নীতি, অনিয়ম ও মারধরের বিচার প্রার্থনা করছি এবং দুর্নীতিবাজ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা জানিয়ে বহিষ্কারের আবেদন জানাই।
এ বিষয়ে ২নং রাণীশিমুল ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ সোহাগের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। তিনি দাবি করেছেন একটি মহল তার নির্বাচনের পর থেকেই আমার পেছনে লেগেছে। তাদের যোগসাজশেই আমার এই ইউপি সদস্যরা আমার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন।