জেলায় আগাম শীতকালীন সবজির দাম ভালো পাওয়ায় চাষির মুখে হাসি ফুটে উঠেছে। সদর উপজেলা, বাঘারপাড়া ও মনিরামপুরসহ ৮টি উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মাঠে নানা রকমের শীতকালীন সবজি চাষ ও বাজারজাতে চাষিরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। জেলার বিভিন্ন উপজেলার কয়েকটি মাঠ আগাম শীতকালীন সবজিতে ভরপুর। দামও বেশি পাওয়ায় চাষিদের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে। তারা বলছেন, বর্তমানে সবজি বেশি দামে বিক্রি করতে পারায় আর্থিকভাবে লাভবান হবেন।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এবার জেলার ৮ উপজেলায় ৭হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে আগাম শীতকালীন সবজির চাষ হয়েছে। শানতলা, চুড়ামনকাটি, ছাতিয়ানতলা, হৈবতপুর, আব্দুলপুর, নুরপুর, দৌলতদিহি, বাগডাঙ্গা, দোগাছিয়া, সাজিয়ালী, তীরেরহাট, মানিকদিহি, মথুরাপুর, শাহাবাজপুর, কাশিমপুর, বিজয়নগর, বালিয়াঘাট, নাটুয়াপাড়া ললিতাদাহ, বালিয়াডাঙ্গা, বেনেয়ালী, ডহেরপাড়া, লাউখালীসহ বিভিন্ন এলাকার মাঠ আগাম শীতকালীন সবজিতে ভরে গেছে। আগাম শীতকালীন সবজির মধ্যে ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, মুলা, টমেটো, লাউ, লাল শাক, সবুজ শাক, বেগুন, পটল, উল্লেখযোগ্য। একাধিক সবজি চাষি বাসস’র এ প্রতিনিধিকে জানান, এবার আগাম শীতকালীন সবজির আবাদ ভালো হয়েছে। বর্তমান বাজার মূল্য বেশি থাকায় তারা সবজি বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ফুলকপি ৮০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০ টাকা, শিম ১০০ টাকা,লাউ সাইজভেদে ৪০ থেকে ৬০ টাকা, মুলা প্রতিকেজি ৪৫-৫০ টাকা, টমেটো ৬০ থেকে ৮০ টাকা, লাল শাক ও সবুজ শাক ৬০ টাকা ৭০ টাকা বেগুন ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আগাম শীতকালীন সবজির ভালো দাম পাচ্ছেন পাচ্ছেন বলে জানান চাষিরা।
যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অফিস সূত্রে জানা গেছে,সারা দেশের মধ্যে সবজির একটি বড় অংশ উৎপাদিত হয় যশোরে। গ্রীষ্মকালীন, আগাম শীতকালীন ও শীতকালীন এ তিন ভাগে বারো মাস সবজির চাষ হয়ে থাকে এখানে। জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সবজির চাষ হয় যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি, হৈবতপুর ও কাশিমপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার মাঠে। এছাড়া বাঘারপাড়া ও মণিরামপুরের বিভিন্ন এলাকায়ও সবজির চাষ ভালো হয়ে থাকে।এবার যশোর সদর উপজেলায় আগাম শীতকালীন সবজির চাষ হয়েছে ২ হাজার ২শ’ ৫০ হেক্টরে। এর মধ্যে সবজি খ্যাত হৈবতপুর, চুড়ামনকাটি, লেবুতলা, কোদালিয়া ও কাশিমপুর এলাকায় আগাম শীতকালীন সবজির চাষ বেশি হয়েছে।বাকি ৭ উপজেলায় ৫ হাজার ৪শ’ হেক্টর জমিতে আগাম শীতকালীন সবজির চাষ হয়েছে। এ জেলার সবজির ব্যাপক চাহিদাও রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তারা।
যশোর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক মো: মঞ্জুরুল হক জানান, যশোর সবজির জেলা হিসেবে সারা দেশে পরিচিত। এখানকার সবজির সুনাম অনেক। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে তা ছড়িয়ে পড়ছে দেশ বিদেশের বাজারে। তিনি আরো জানান, এবার ৭হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে আগাম শীতকালীন সবজি চাষ হয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে। দাম ভালো পাওয়ায় চাষিরা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।এ বছর শীত মৌসুমে ১৭ হাজার হেক্টর জমিতে সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।সবজির দাম ভালো পাওয়ায় আগামীতে চাষিরা আরও বেশি জমিতে সবজি চাষে আগ্রহী হবেন বলে তিনি জানান।