আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সর্বোচ্চ ১৫০ আসনে ইভিএম ব্যবহার করার লক্ষ্যের কথা জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। তবে তিনি এটাও বলেছেন যে, তবে পুরো বিষয়টিই নির্ভর করছে সরকারের অর্থ ছাড়ের ওপর। সে জন্য এখন পর্যন্ত বিষয়টি নিশ্চিত নয়।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে তিনি এসব কথা বলেন। সিইসি বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৫০ আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু সেটি সরকারের অর্থছাড় দেয়া বা না দেয়ার উপর নির্ভর করছে। ইভিএম কেনার প্রকল্প সরকার যথার্থ মনে না করলে এ প্রকল্প অনুমোদন না–ও দিতে পারে।ত বে এটাও ঠিক যে, ব্যালট বা ইভিএমের চেয়ে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বর্তমান কমিশনের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
বর্তমান কমিশন দায়িত্ব নেয়ার পর শুরুতেই ইভিএম সমর্থন করেনি জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা দীর্ঘ সময় নিয়ে বিভিন্ন স্তরে, বিভিন্ন পদ্ধতিতে ইভিএম বোঝার চেষ্টা করেছি। ব্যাপক আলোচনা করেছি। অংশগ্রহণমূলক আলোচনাও হয়েছে। ইভিএমের মাধ্যমে জালিয়াতি হয় এ রকম কেউ প্রমাণ করতে পারেনি। সবাই একমত হয়েছেন যে, ইভিএম দিয়ে হ্যাকিং সম্ভব নয়।
এক প্রসঙ্গে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, বিভিন্ন দূতাবাস সংশ্লিষ্টরা নির্বাচন নিয়ে নানা মত দিচ্ছেন। কিন্তু নির্বাচন প্রভাবিত করে এমন কথা তারা বলেননি। তারা যথেষ্ট প্রশিক্ষিত কূটনীতিক। নির্বাচন প্রভাবিত করার মতো কোনো কথা অন্তত তারা আমাদের বলবেন না। এরইমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়নভূক্ত দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতরা সিইসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তাদের বেশিরভাগই অংশগ্রহণমূলক, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশা করেছেন।
কোনো দূতাবাস আমাদের প্রভাবিত করেনি:
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, কোনো দূতাবাস আমাদের প্রভাবিত করেনি। তারা কেবল সুন্দর ও অংশগ্রহণমূলক জাতীয় নির্বাচনের আশাবাদ ব্যক্ত করেছে।
গতকাল মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের (ইএমএফ) সঙ্গে এক বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের কাছে এমন মন্তব্য করেন।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, বিভিন্ন দূতাবাসের কথা ওনারা (ইএমএফ সদস্যরা) বলেছেন, কথা প্রসঙ্গে এটাও বলি যে ওনারা আমাদের প্রভাবিত করেননি। ওনারা ডিপ্লোমেট। ওনারা অত্যন্ত প্রশিক্ষিত। কখনোই নির্বাচন নিয়ে প্রভাবিত করার মতো কোনো কথা ওনারা বলেননি। কখনো বলবেনও না। আমাদের সঙ্গে অন্তত বলবেন না। সিইসি বলেন, ওনারা (কূটনীতিকরা) আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন সুন্দর হবে, অংশগ্রহণমূলক হবে; এই আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। বিদেশি কূটনীতিকরা শুধু আমাদের সঙ্গেই না, এর আগেও যে কমিশনগুলো এসেছিল তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। এটা এক ধরনের সৌজন্য সাক্ষাৎ। সেজন্যই ওনারা আসেন, অনেক সময় ওনারা সহযোগিতার আশ্বাস দেন। আমরা এখনো ওনাদের কাছে কোনো সহায়তার প্রস্তাব দিইনি যে আপনাদের অ্যাসিস্ট্যান্স আমাদের প্রয়োজন।
এরইমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়নভূক্ত দেশগুলোর রাষ্ট্রদূত/কূটনীতিকরা সিইসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তাদের বেশিরভাগই অংশগ্রহণমূলক, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশা করেছেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী বছরের ডিসেম্বর থেকে ২০২৪ সালের জানুয়ারির প্রথম দিকে অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনকে ঘিরে নানা প্রস্তুতিমূলক কর্মযজ্ঞ শুরু করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তবে বিএনপিসহ বেশকিছু দল কয়েকটি দাবিতে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এই রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছে বলে মনে করছে বিভিন্ন মহল।