বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০৬:৫৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
তীব্র গরমে কালীগঞ্জে বেঁকে গেছে রেললাইন, ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক মেলান্দহ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হাজী দিদার পাশা জনপ্রিয়তায় এগিয়ে শ্রীপুর পৌরসভার উদ্যোগে খাবার পানি ও স্যালাইন বিতরণ অভিবাসী কর্মীদের পুনঃএকত্রীকরণে কর্মশালা রায়পুরায় উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থিতা ঘোষণা আলী আহমেদের কমলগঞ্জের মিরতিংগা চা বাগানে অবস্থান কর্মসূচি ও প্রতিবাদ সভা অব্যাহত পলাশবাড়ীতে প্রচন্ড গরমে ঢোল ভাঙ্গা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে তরমুজ বিতরণ জুড়ীতে টিলাবাড়ি ক্রয় করে প্রতারিত হওয়ার অভিযোগ আনারসের পাতার আঁশ থেকে সিল্ক কাপড় তৈরির শিল্পকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে-সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি রাউজানে পথচারীদের মাঝে যুবলীগের ফলমূল ও ছাতা বিতরণ

বাংলাদেশ যাতে দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি না হয় সেজন্য প্রস্তুত থাকুন : প্রধানমন্ত্রী

বাসস:
  • আপডেট সময় বুধবার, ১২ অক্টোবর, ২০২২

দীর্ঘস্থায়ী রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং চলমান কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে বাংলাদেশ যাতে কখনোই দুর্ভিক্ষ ও খাদ্যের অপ্রতুলতার মতো কোনো পরিস্থিতির মুখোমুখি না হয় সেজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীকে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘ আমাদের মাটি ও মানুষ আছে। তাই এখন থেকেই আমাদের উদ্যোগ নিতে হবে, বাংলাদেশ যাতে কখনো দুর্ভিক্ষ বা খাদ্য সংকটে না পড়ে। আমরা আমাদের খাদ্য উৎপাদন বাড়াব।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বুধবার সকালে ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার ১৪২৫ ও ১৪২৬’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন। তিনি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে কৃষি মন্ত্রণালয় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন। শেখ হাসিনা করোনা পরিস্থিতির মধ্যে আবার রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধ এবং একে কেন্দ্র করে স্যাংশনের প্রসঙ্গ টেনে দেশে প্রতি ইঞ্চি জমিকে চাষাবাদের আওতায় এনে উৎপাদন বাড়ানোয় তাঁর আহবান পূণর্ব্যক্ত করেন। বিশ্ব বাজারে প্রতিটি পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং পরিবহণ ব্যয় অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে তিনি আমদানী নির্ভরতা কমিয়ে আনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তাঁর সাম্প্রতিক যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র সফরে রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের অন্তেষ্টিক্রিয়া এবং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদানকালে উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান এবং সংস্থার প্রধানদের সঙ্গে আলোচনায় আগামী বছর বিশ্ব একটি ভয়াবহ খাদ্য সংকটের দিকে যেতে পারে বলে সকলের উদ্বেগ-উৎকন্ঠার কথাও উল্লেখ করেন । যুদ্ধের কারণে সারাবিশে^র সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে উল্লেখ করে জাতিসংঘে প্রদত্ত ভাষণে তাঁর যুদ্ধ বন্ধ করার উদাত্ত আহবানের পাশাপাশি শিশুদের জন্য খাদ্য, চিকিৎসা, শিক্ষার পাশাপাশি উন্নত জীবন নিশ্চিত করার ব্যবস্থা গ্রহণের আহবানের কথাও অনুষ্ঠানে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি মনে করেন না যে যুদ্ধ এত তাড়াতাড়ি বন্ধ হয়ে যাবে। কারণ অস্ত্র বিক্রীর কারণে যুদ্ধ চালিয়ে রাখতে পারলে কিছু দেশ লাভবান হয়। অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন কৃষিমন্ত্রী ড. মুহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক, মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এবং কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম, পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে শারমিন আক্তার বিজয়ীদের পক্ষে তার অনুভূতি ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাফল্য ও এর কার্যক্রমের ওপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে কৃষিমন্ত্রী কৃষি গবেষণা ও সম্প্রসারণ, সমবায়, উদ্বুদ্ধকরণ, প্রযুক্তি উদ্ভাবন, বাণিজ্যিক চাষ, বনায়ন, গবাদি পশু পালন এবং মাছ চাষে অবদানের জন্য ৪৪ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার ১৪২৫ ও ১৪২৬ বিতরণ করেন।
নির্বাচিত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে তিনটি স্বর্ণ, পঁচিশটি ব্রোঞ্জ এবং ষোলটি রৌপ্য পদক বিতরণ করা হয়।
বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কার দিলেন প্রধানমন্ত্রী: দেশের ৪৪ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কার দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বুধবার (১২ অক্টোবর) এই পুরস্কার তুলে দেন তিনি। কৃষিক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ও অনুকরণীয় অবদান রাখায় ১৪২৫ বঙ্গাব্দের জন্য ১৫ এবং ১৪২৬ বঙ্গাব্দের জন্য ২৯ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কার দেওয়া হলো। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে যুক্ত হন। অনুষ্ঠানস্থলে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীংয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মতিয়া চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
১৪২৫ বঙ্গাব্দে পুরস্কার পেলেন ১৫ জন। এরমধ্যে স্বর্ণপদক পেয়েছেন একজন। তিনি হলেন বগুড়ার শেরপুরের প্রাণিসম্পদ দফতরের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মো. রায়হান। কৃষি উন্নয়নে জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও উদ্বুদ্ধকরণ প্রকাশনা ও প্রচারণামূলক কাজে তিনি এই পদক পেয়েছেন। রৌপ্যপদক পেয়েছেন সাত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। এরা হলেন, পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি উদ্ভাবন বা ব্যবহার ক্যাটাগরিতে পিরোজপুরের নাজিরপুরের বদরুল হায়দার বেপারী ও কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ার উপ-সহকারী কৃষি অফিসার হামিদুল হক। পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও ব্যবহারে কৃষিতে নারীর অবদানের ক্ষেত্রে ঝিনাইদহ সদরের শারমিন আক্তার, প্রতিষ্ঠান বা সমবায় বা কৃষক পর্যায়ে উচ্চমানসম্পন্ন বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ, বিতরণ ও নার্সারি স্থাপনে অবদানের জন্য পাবনার আটঘরিয়ার দুলাল মুখা। বাণিজ্যিকভিত্তিক খামার স্থাপনে সাভারের কোব্বাদ হোসাইন ও রাজশাহীর গোদাগাড়ির মনিরুজ্জামান মনির এবং প্রতিষ্ঠান ক্যাটাগরিতে পদক পাচ্ছে প্যারামাউন্ট এগ্রো লিমিটেড।
ব্রোঞ্জপদক পেলেন সাত জন। এরা হলেন, কৃষি গবেষণায় রাজশাহীর তানোরের নুর মোহাম্মদ, পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি উদ্ভাবন বা ব্যবহার ক্যাটাগরিতে পিরোজপুরের ভা-ারিয়ার বারেক হাওলাদার, কৃষি উন্নয়নে জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও উদ্বুদ্ধকরণ প্রকাশনা ও প্রচারণামূলক কাজে রংপুরের বুড়িহাটের হর্টিকালচার সেন্টারের মজিদুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের শফিকুল ইসলাম, নওগাঁর পোরশা উপজেলার গৌতম কুমার সাহা, রাজশাহীরর পুঠিয়ার মোছা. পূর্ণিমা বেগম ও ঢাকার নবাবগঞ্জের নিপু ট্রেডার্স।
১৪২৬ বঙ্গাব্দের জন্য পুরস্কার পেয়েছেন ২৯ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান। এরমধ্যে স্বর্ণপদক পেয়েছেন দুই জন। এরা হলেন, পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি/উদ্ভাবন/ব্যবহার ক্যাটাগরিতে রাজশাহীর গোদাগাড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম এবং বাণিজ্যিক ভিত্তিতে গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগি চাষে পাবনার ঈশ্বরদীর আমিরুল ইসলাম। রৌপ্যপদক পেয়েছেন ৯ জন। এরা হলেন, ঢাকার শেরেবাংলা নগরের মুহাম্মদ রকিবুল আহসান রনি, যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আইয়ুব হোসেন, খুলনার খালিশপুরের হালিমা বেগম, যশোরের ঝিকরগাছার নাসরিন সুলতানা, সিলেটের আব্দুল হাই আজাদ বলা, মাদারীপুর হর্টিকালচার সেন্টারের উপ-পরিচালক সাইফুল ইসলাম, ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার রফিকুল ইসলাম, খুলনার ডুমুরিয়ার আবুল হোসেন সরদার, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁর বাবুল হোসেন।
ব্রোঞ্জপদক পেয়েছেন ১৮ জন। এরা হলেন, দিনাজপুরের বিরল উপজেলার সাবেক কৃষি কর্মকর্তা মাহবুবার রহমান, ঝিনাইদহের কালিগঞ্জের মকবুল হোসেন, সিরাজগঞ্জের সহিদুল ইসলাম, খাগড়াছড়ির মহালছড়িরর হ্লাশিং মং চৌধুরী, ময়মনসিংহের গৌরীপুরের গাজী মামুদ, সিরাজগঞ্জের কামারখন্দের মাহবুবুল ইসলাম, টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারের রিনা বেগম, নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলা কৃষি অফিসার মোমরেজ আলী, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রোস্তম আলী, পাবনার ঈশ্বরদীর শাহীনুজ্জামান, বান্দরবানের তোওয়াব্রোয়াও ম্রো, ফেনীর মজিবুল হক, মুন্সীগঞ্জের সিরাজ খান, টাঙ্গাইলের মধুপুরের ছানোয়ার হোসেন, রাঙ্গামাটির রাজস্থলির আবদুল আউয়াল, গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরের শাকিল মিয়া, নড়াইলের তনিমা আফরিন এবং দিনাজপুরের রাখী দে। পুরস্কারপ্রাপ্তদের সনদপত্র, পদক ও নগদ অর্থ দেওয়া হয়েছে। স্বর্ণপদক প্রাপ্তরা এক লাখ টাকা, রৌপ্যপদক প্রাপ্তরা ৫০ হাজার টাকা ও ব্রোঞ্জপদক প্রাপ্তরা ২৫ হাজার টাকা পেয়েছেন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com