সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:২১ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
পুঁইশাক চাষে সফল সুফিয়া, আগ্রহী হচ্ছে অন্য কৃষকরাও অতিরিক্ত টোল আদায় করলেই ইজারা বাতিল-ভোলায় উপদেষ্টা সাখাওয়াত কৃতি ফিরোজীকে বাঁচাতে সাভারে চ্যারিটি কনসার্ট আওয়ামী লীগের সাথে দ্বন্দ্ব নাই, যারা অন্যায় করেছে তাদের বিচার চাই-আব্দুল আউয়াল মিন্টু জলঢাকায় গণঅধিকার পরিষদের গণসমাবেশ সোনারগাঁওয়ে মাসব্যাপি লোককারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব শুরু শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানে ৮৯তম জন্মদিন উপলক্ষে আগৈলঝাড়া বিএনপি’র উদ্যোগে আনন্দ র‌্যালি পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্ষতিগ্রস্তুদের অবস্থান কর্মসূচি জামালপুর পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড বিএনপির আয়োজনে দুস্থদের মাঝে কম্বল বিতরণ ভুট্টা চাষে দেশের শীর্ষে চুয়াডাঙ্গা: ৫৯,৬৫৬ হেক্টর জমিতে আবাদ

বিশ্ব মন্দা মোকাবেলায় আত্মবিশ্লেষণের বিকল্প নেই

ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২১ অক্টোবর, ২০২২

বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের বার্ষিক সভায় বহুপাক্ষিক সংস্থা, ব্রেটন উড প্রতিষ্ঠানদ্বয়ের প্রধান দু’জনই বিশ্ব মন্দার ভয়াবহতার আশঙ্কা প্রকাশ করে এ-ও বলেছেন, যুদ্ধ না থামাতে পারলে বিশ্ব অর্থনীতির পঙ্গুত্ব ঠেকানো যাবে না। কোভিড-১৯-এর বিশ্বব্যাপী আর্থসামাজিক মানবিক বিপর্যয়ের ধকল কাটিয়ে উঠতে যেখানে সবাই হিমশিম খাচ্ছে; সেখানে প্রায় এক বছর হতে চলল- ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ গোটা বিশ্বকে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে দেখছে সবাই। জ্বালানি সঙ্কট ও খাদ্যাভাব দেশে দেশে দারুণ সঙ্কটময় পরিস্থিতির আভাস মিলছে। ঠিক এ সময় বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষও দুর্ভিক্ষের কবলে পড়া থেকে সবাইকে সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে।
বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নকামী অর্থনীতিতে এ মুহূর্তে সবপক্ষকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন ও সব প্রয়াস-প্রচেষ্টার সমন্বয়ের মাধ্যমে মন্দা মোকাবেলায় অয়োময় প্রত্যয়দীপ্ত হওয়ার পরিবেশ তৈরির আবশ্যকতা অনস্বীকার্য। বিশেষ করে করোনা-উত্তর পরিবেশ-পরিস্থিতিতে অচল অর্থনীতি সচল তথা পুনরুদ্ধার প্রয়াসে ‘নিজের দিকে নিজে তাকানো’র মতো এ অনিবার্য মুহূর্তে। বিশ্বব্যাপী মহামারী করোনার এ প্রাদুর্ভাবের সময়ে প্রত্যেক দেশ ও অর্থনীতিকে পরনির্ভরশীলতার পরিবর্তে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার অনিবার্যতা দেখা দিচ্ছে। ঠিক এ মুহূর্তে একজন রাজনৈতিক কর্মী কিংবা সরকারি কর্মচারীর পারিতোষিক তার সম্পাদিত কাজের পরিমাণ বা পারদর্শিতা অনুযায়ী না হয়ে কিংবা কাজের সফলতা-ব্যর্থতার দায়-দায়িত্ব বিবেচনায় না এনে যদি দিতে হয়, অর্থাৎ- কাজ না করেও সে যদি বেতন পেতে পারে, উপরির ধান্দায় রাষ্ট্রীয় স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে দু’হাতে শোষণ শাসনে তোষণে সে যদি নামে এবং তা যদি ঠেকানো না যায়, দলীয় কর্মী, সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী, দায়-দায়িত্বহীন শিক্ষক, চিকিৎসক, পেশাজীবী, শিল্পী- কমবেশি সবাই যদি ফ্রাঙ্কেনস্টাইন স্টাইলে চলতে থাকে তাহলে মধ্যবিত্ত-নি¤œবিত্ত মানুষ বা জনগণ যাবে কোথায়? দক্ষতা অর্জনের প্রত্যাশা আর দায়িত্ববোধের বিকাশভাবনা মাঠে মারা যাওয়ার মতো পরিবেশে ব্যর্থতার বজরা ভারী হতে থাকলে যেকোনো উৎপাদন ব্যবস্থা কিংবা উন্নয়ন প্রয়াস ভর্তুকির পরাশ্রয়ে যেতে বাধ্য। দারিদ্র্য প্রপীড়িত জনবহুল কোনো দেশে পাবলিক সেক্টর বেকার ও অকর্মণ্যদের জন্য যদি অভয়ারণ্য কিংবা কল্যাণরাষ্ট্রের প্রতিভূ হিসেবে কাজ করে তাহলে সেখানে অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে। বিশ্ব কেন, দেশে মন্দা মোকাবেলা হয়ে উঠতে পারে সুদূর পরাহত। করোনা-উত্তরকালে বেকারত্ব বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে যদি বিপুল জনগোষ্ঠীকে জনশক্তিতে পরিণত করা না যায় উপযুক্ত কর্মক্ষমতা অর্জন ও প্রয়োগের পরিবেশ সৃষ্টি করে, তাহলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে সর্বত্র। তাহলে উন্নয়ন কর্মসূচিতে বড় বড় বিনিয়োগও ব্যর্থতায় পর্যবসিত হতে পারে। চাকরিকে সোনার হরিণ বানানোয় তা পাওয়া ও রাখতে অস্বাভাবিক দেনদরবার চলাই স্বাভাবিক। দায়-দায়িত্বহীন চাকরি পাওয়ার সুযোগের অপেক্ষায় থাকার ফলে নিজ উদ্যোগে স্বনির্ভর হওয়ার আগ্রহেও অনীহা চলে আসে। মানবসম্পদ অপচয়ে এর চেয়ে বড় নজির আর হতে পারে না। দরিদ্রতম পরিবেশে যেখানে শ্রেণী নির্বিশেষে সবার কঠোর পরিশ্রম, কৃচ্ছ্রতা সাধন ও আত্মত্যাগ আবশ্যক সেখানে সহজে ও বিনাক্লেশে কিভাবে অর্থ উপার্জন সম্ভব সেদিকে ঝোঁক বেশি হওয়াটা সুস্থতার লক্ষণ নয়। এখনো নির্বাচনে প্রার্থীর পরিচয়ে যে অঢেল অর্থব্যয় চলে তা যেন এমন এক বিনিয়োগ যা অবৈধভাবে অধিক উসুলের সুযোগ আছে বলেই। শোষক আর পুঁজিবাদী উৎপাদন ব্যবস্থায় বঞ্চিত নিপীড়িত শ্রমিক শ্রেণীর স্বার্থ উদ্ধারে নিবেদিত চিত্ত হওয়ার বদলে ট্রেড ইউনিয়ন নেতৃত্ব নিজেরাই যখন উৎপাদনবিমুখ আর শ্রমিক স্বার্থ উদ্ধারের পরিবর্তে আত্মস্বার্থ উদ্ধারে ব্যতিব্যস্ত হয়ে শোষণের প্রতিভূ বনে যায় তখন দেখা যায় যাদের তার প্রতিনিধিত্ব করছে তাদেরই তারা প্রথম ও প্রধান প্রতিপক্ষ। প্রচ- স্ববিরোধী এ পরিবেশ ও পরিস্থিতিতে উৎপাদন, উন্নয়ন তথা শ্রমিক উন্নয়ন সবই বালখিল্যের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। একটি ভালো সঙ্গীত সৃষ্টিতে গীতিকার, সুরকার, গায়ক ও বাদ্যযন্ত্রীর সমন্বিত প্রয়াস যেমন অপরিহার্য; তেমনি দেশ বা সংসারের সামষ্টিক অর্থনীতির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা বা পুনরুদ্ধারে সব পক্ষের সহযোগিতা ছাড়া সুচারুরূপে সম্পাদন সম্ভব নয়। আধুনিক শিল্প ও বাণিজ্য ব্যবস্থাপনার বেলাতেও এমনকি যেকোনো উৎপাদন ও উন্নয়ন উদ্যোগেও ভূমি, শ্রম ও পুঁজি ছাড়াও মালিক শ্রমিক সব পক্ষের সমন্বিত ও পরিশীলিত প্রয়াস প্রচেষ্টাই সব সাফল্যের চাবিকাঠি বলে বিবেচিত হচ্ছে। মানবসম্পদ উন্নয়নকার্যক্রমের মাধ্যমে দক্ষতা ও কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি ছাড়াও সমন্বিত উদ্যোগের প্রয়াসে সুসমন্বয়ের আবশ্যকতা অপরিহার্য। স্থান কাল পাত্রের পর্যায় ও অবস্থান ভেদে উন্নয়ন এবং উৎপাদনে সবাইকে একাত্মবোধের মূল্যবোধে উজ্জীবিত করাও সামগ্রিক সামষ্টিক ব্যবস্থাপনার একটি অন্যতম উপায় ও উপলক্ষ। মানুষের দায়িত্ববোধ দিয়ে কর্তব্যকর্ম সুচারুরূপে সম্পাদনের মাধ্যমে সমাজ সমৃদ্ধি লাভ করে। আবার এই মানুষের দায়িত্বহীনতায় সমাজের সমূহ ক্ষতি সাধিত হয়। মানবসম্পদ না হয়ে সমস্যায় পরিণত হলে সমাজের অগ্রগতি তো দূরের কথা; সমাজ মুখ থুবড়ে পড়তে বাধ্য। মানুষের উদ্ভাবনী শক্তি সভ্যতার বিবর্তনে সহায়তা হয়। মানুষের সৃষ্ট দুর্ভিক্ষ, সহিংস সন্ত্রাসী কার্যকলাপ কিংবা যুদ্ধ ও মারণাস্ত্রের ব্যবহারে মানুষের ধ্বংস অনিবার্য হয়ে ওঠে। মানবতার জয়গান মানুষই রচনা করে আবার মানবভাগ্যে যত দুর্গতি তার স্রষ্টাও সে। মানুষের সৃজনশীলতা, তার সৌন্দর্যজ্ঞান, পরস্পরকে সম্মান ও সমীহ করার আদর্শ অবলম্বন করে সমাজ এগিয়ে চলে। পরমতসহিষ্ণুতা আর অন্যের অধিকার ও দাবির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার মাধ্যমে সমাজে বসবাস করার পরিবেশ সৃষ্টি হয়। অন্যের অন্যায় অনিয়মের নজির টেনে নিজেদের অপকর্মের দৃষ্টান্তকে ব্যাখ্যার বাতাবরণে ঢাকার মতো আত্মঘাতী ও প্রবঞ্চনার পথ পরিহার করে বরং সবার সহযোগিতা ও সমন্বিত উদ্যোগের আবহ সৃষ্টি করতে পারলে সমাজ নিরাপদ বসবাসযোগ্য হয়ে ওঠে। সমাজবিজ্ঞানীরা তাই মানুষের আর্থসামাজিক সার্বিক উন্নয়নকে দেশ জাতি রাষ্ট্রের সব উন্নয়নের পূর্বশর্ত সাব্যস্ত করে থাকেন। সমাজের উন্নতি, অগ্রগতি ও কল্যাণ সৃষ্টিতে মানুষের সার্বিক উন্নতি অপরিহার্য শর্ত। আগে সমাজ না আগে মানুষ- এ বিতর্ক সর্বজনীন। মানুষ ছাড়া মনুষ্যসমাজের প্রত্যাশা বাতুলতামাত্র। সুতরাং একেকটি মানুষের উন্নতি সবার উন্নতি, সমাজের উন্নতি।
একেক মানুষের দায়িত্ববোধ, তার কা-জ্ঞান তার বৈধ-অবৈধতার উপলব্ধি ও ভালো-মন্দ সীমা মেনে চলার চেষ্টা-প্রচেষ্টার মধ্যে পরিশীলিত পরিবেশ গড়ে ওঠা নির্ভর করে। রাষ্ট্রে সব নাগরিকের সমান অধিকার ও দায়িত্ব নির্ধারিত আছে; কিন্তু দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতা অধিকার আদায়ের সম্ভাবনা ও সুযোগকে নাকচ করে দেয়। পণ্য ও সেবা সৃষ্টি না হলে চাহিদা অনুযায়ী ভোগের জন্য সম্পদ সরবরাহে ঘাটতি পড়ে। মূল্যস্ফীতি ঘটে, সম্পদ প্রাপ্তিতে প্রতিযোগিতা বাড়ে। পণ্য ও সেবা সৃষ্টি করে যে মানুষ সেই মানুষই ভোক্তার চাহিদা সৃষ্টি করে। উৎপাদনে আত্মনিয়োগের খবর নেই- চাহিদার ক্ষেত্রে ষোলআনা; টানাপড়েন তো সৃষ্টি হবেই। অবস্থা ও সাধ্য অনুযায়ী উৎপাদনে একেকজনের দায়িত্ব ও চাহিদার সীমারেখা বেঁধে দেয়া আছে; কিন্তু এ সীমা অতিক্রম করলে টানাপড়েন সৃষ্টি হবেই। ওভারটেক করার যে পরিণাম দ্রুতগামী বাহনের ক্ষেত্রে, সমাজে সম্পদ অর্জন ও ভোগের ক্ষেত্রে সীমা অতিক্রমণে একই পরিবেশ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়ে থাকে। সমাজে নেতিবাচক মনোভাবের বিস্তার, অস্থিরতা ও নাশকতার যতগুলো কারণ এ যাবৎ আবিষ্কৃত হয়েছে, তার মধ্যে সম্পদের অবৈধ অর্জন ও এতদুপলক্ষে নির্মম প্রতিযোগিতা, নিজের ব্যাপারে ষোলআনা জরুরি ভাবলেও অন্যের অধিকার অস্বীকার, বর্জন ও আত্মত্যাগ স্বীকারে অস্বীকৃতি মুখ্য।
এ কথা ঠিক, বহমান বর্তমান বিশ্বে ক্রমে অর্থনীতিই রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণের পথে নিয়ে যাচ্ছে। কেননা, মানুষের দৈনন্দিন জীবন যাপন থেকে শুরু করে সব পর্যায়ে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিনোদন, অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান- সব কিছুতে নীতিনির্ধারণে অর্থ নিয়ামক ভূমিকায়। এখন রাষ্ট্র্র পরিচালনা থেকে শুরু করে রাজনীতি, এমনকি রাজস্ব আহরণ, ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতের সিদ্ধান্ত হচ্ছে আর্থিক ক্ষমতাবানের প্রভাবের এবং সক্ষম সম্ভাবনার নিরিখে। রাজনৈতিক নেতৃত্ব নীতিনির্ধারণ করে অর্থনৈতিক জীবন যাপনকে জবাবদিহির আওতায় এনে সুশৃঙ্খল, সুশোভন, সুবিন্যস্ত করবে এটিই ঠিক; কিন্তু নীতিনির্ধারকের পাশে থেকে যদি ভক্ষক হয়ে নিজে অর্থনৈতিক টানাপড়েন বাধাবিঘœ নিয়ন্ত্রণ সৃষ্টির কারণ হয়, তখন আমজনতার অর্থনৈতিক জীবন যাপন পোষিত হওয়ার পরিবর্তে দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। নীতিনির্ধারক নেতৃত্ব যদি নিজস্ব তাগিদে ও প্রয়োজনে নিজস্ব উপায়ে সম্পদ এবং স্বার্থ সংগ্রহে আত্মসাতে ব্যাপৃত তখনো নৈতিক নেতৃত্বের এখতিয়ার ও ক্ষমতা খর্ব হয়। আইনসভায় নীতিনির্ধারক বিধিবিধান তৈরি করবেন সবার জন্য প্রযোজ্য করে, নিরপেক্ষভাবে, দূরদর্শী অবয়বে; কিন্তু সেই আইন প্রয়োগে নীতিনির্ধারক নিজেই নিজেদের স্বার্থ, দলীয় দৃষ্টিভঙ্গির কারণে, প্রতিপক্ষরূপী বিরুদ্ধবাদীদের বঞ্চিত করতে, অন্তর্ভুক্তির পরিবর্তে বিচ্ছিন্নতায় স্বেচ্ছাচারী অবস্থান গ্রহণ করে তখন ওই আইনের প্রয়োগে নিরপেক্ষতা নিয়ে সংশয়-সন্দেহ সৃষ্টি হতে পারে। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি উৎপাদনে সম্পদে সংসার-সমাজসহ নীতিনির্ধারককে যেমন একটি রূপময়, বেগবান, ঐশ্বর্যম-িত ও আনন্দঘন সক্ষমতা দান করে, রাজনৈতিক নীতিনির্ধারকের ভুল পদক্ষেপের কারণে অর্থনৈতিক উন্নয়নের সম্ভাবনাকে, সমৃদ্ধির সক্ষমতা ও সুযোগকে তেমনি প্রশ্নবিদ্ধ-পক্ষপাতযুক্ত করে ফেলে, দুনীতিগ্রস্ত করে ফেলে। এ ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার পরিবেশ হয় বিপন্ন এবং এর ফলে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের সম্ভাবনা শুধু দ্বিধাগ্রস্ত নয়, হয় বাধাপ্রাপ্তও। দেখা গেছে, নির্বাচন ঘনিয়ে এলে দেশে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগে ভাটা পড়ে, যা সার্বিক বিনিয়োগ পরিস্থিতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলে। বিনিয়োগ ঘাটতি পুষিয়ে নিতে সরকারের শেষ সময়ে প্রকল্প পাসের গতি বাড়ে। গণতন্ত্রে অর্থনৈতিক উন্নয়নের রূপকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের অঙ্গীকার থাকে রাজনৈতিক নেতৃত্বের। নির্বাচনী ইশতেহারে অর্থনৈতিক উন্নয়ন কর্মসূচির নানা প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করে রাজনৈতিক দল। ভোটারকে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়- ক্ষমতায় গেলে এ জাতীয় উন্নয়নের বন্যায় ভেসে যাবে দেশ; কিন্তু ক্ষমতায় যাওয়ার পর নেতৃত্ব তা যদি যথাযথ বাস্তবায়ন করতে না পারে; তাহলে ব্যর্থতার ও অভিযোগের তীর নিক্ষিপ্ত হয় খোদ রাজনীতির প্রতি, এর নেতিবাচকতার দিকে।
লেখক : উন্নয়ন অর্থনীতির বিশ্লেষক
ইমেইল :mazid.muhammad@gmail.com




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com