দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোংলা সমুদ্র বন্দর চ্যানেলে দুটি এলপিজি প্লান্টের জেটির মধ্যবর্তী স্থানে ফেরিঘাট নির্মানে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পরে বন্দর চ্যানেল সংলগ্ন ওমেরা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড এবং যমুনা স্পেসটেক জয়েন্ট ভেঞ্চার লিমিটেড জেটির মধ্যবর্তী স্থানে ফেরিঘাট নির্মান করছেন সড়ক বিভাগ। এখান থেকে ফেরি চলাচল শুরু হলে চ্যানেলে নৌযান দূর্ঘটনার ঝূকি বৃদ্ধি পাবে। সেই সাথে এলপিজি প্লান্টের নিরাপত্তা নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা। পরিবহন ফেরিঘাট নির্মান বন্ধ করতে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দিয়েছে এলপিজি অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এলওএবি)। এলওএবি-এর প্রেসিডেন্ট আজম জে চৌধুরী স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, মোংলা বন্দর চ্যানেল সংলগ্ন ২টি এলপিজি প্লান্টের মধ্যবর্তী স্থানে যাত্রী পরিবহন ঘাট স্থাপন মোংলা বন্দর এবং এই বন্দরে স্থাপতি সকল এলপিজি স্থাপনার জন্য মারাত্মক হুমকি স্বরুপ। বিষয়টি সকলকে অবহিত করার পরে লাউডোব ঘাট স্থাপনের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু ১৬ অক্টোবর থেকে আবারও ঘাট স্থাপনের কাজ শুরু করে সড়ক বিভাগ। অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিভিন্ন এলপিজি স্থাপনার মধ্যে এরকম অনিয়ন্ত্রিত যাত্রী পরিবহন ঘাট স্থাপনা সমূহের জন্য যেমন হুমকি স্বরুপ তেমনি সার্বিক বিবেচনায় মোংলা বন্দরের জন্যও বিষয়টি নিরাপদ নয়। তাছাড়া এলপিজি বহনকারী বিদেশী জাহাজও এরকম যাত্রী পরিবহন ঘাট স্থাপনে আপত্তি উথাপন করতে পারে। এছাড়া ঘাট স্থাপনের ফলে নদীর নাব্য হ্রাস পাবে। শুধু এলপিজি অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন নয়, মোংলা বন্দর ব্যবহারকারীরাও বিষয়টিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, বন্দর চ্যানেলের মধ্যে একটি যাত্রী পরিবহন ঘাট নির্মানের কাজ চলছে। শুনেছি ফেরিও চলবে এখানে। কিন্তু এ বিষয়ে বন্দর ব্যবহারকারী বা আশপাশে থাকা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কোন মতামত নেওয়া হয়নি। এটা এক ধরণের হটকারী সিদ্ধান্ত। এই ঘাট নির্মান শেষে পুরোপুরি চালু হলে এই চ্যানেলে জাহাজ চলাচল ব্যহত হবে। বড় দূর্ঘটনারও সম্ভাবনা রয়েছে। আর বন্দর চ্যানেলে একবার বড় দূর্ঘটনা ঘটলে আন্তর্জাতিকভাবে মোংলা বন্দরের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। মোংলা বন্দরের সুনাম রক্ষায় লাউডোব যাত্রী পরিবহন ঘাট নির্মান বন্ধের দাবি জানান এই ব্যবসায়ী। এলপিজি অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এলওএবি) এর সাধারণ সম্পাদক আহসানুল জব্বার বলেন, বন্দর চ্যানেলের এই স্পর্শকাতর স্থানে ফেরিঘাট হওয়া খুবই বিপদজনক। আমরা নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়, মোংলা বন্দরসহ সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরের সাথে যোগাযোগ করছি। ফেরিঘাট নির্মান বন্ধ না হলে চ্যানেলে দূর্ঘটনার ঝুকি অনেক বেড়ে যাবে বলে দাবি করেন তিনি। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (প্রশাসন) মো. শাহিনুর আলম বলেন, চ্যানেলে ঘাট বা অন্য স্থাপনা হলে ঝুঁকি হওয়া খুবই স্বাভাবিক। কেননা এটি একটি আন্তর্জাতিক বন্দর। এখানে কোন ধরণের ঘাট বা রাস্তা নির্মান এবং ফেরি চলাচলের লিখিত অনুমতি আমরা দেইনি। বাগেরহাট সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ফরিদ উদ্দিন বলেন, ফেরি চলাচলের জন্য আমরা সড়ক ও সেতু বিভাগ থেকে অনুমতি পেয়েছি। যেহেতু এই চ্যানেল দিয়ে ইঞ্জিন চালিত নৌযান চলে, আমাদের ফেরিও ইঞ্জিন চালিত এর ফলে কোন সমস্যা নেই। এছাড়া সারাদিনে ফেরি চলবে সর্বোচ্চ ১২ বার। আর চ্যানেল অনেক প্রশস্ত আছে। তাই সতর্কতার সঙ্গে চললে অসুবিধা হবে না।