৫ই নভেম্বর বরিশালে গণসমাবেশ
বিএনপি দুঃশাসনের জিঞ্জির ভাঙার সংগ্রাম করছে। বাধাবিপত্তি কাটিয়ে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও খুলনায় গণসমাবেশ সম্পন্ন করতে পারায় সাংগঠনিকভাবে মনোবল আরও চাঙ্গা হয়েছে বিএনপির। ৫ই নভেম্বর বরিশাল বিএনপির সমাবেশ। কেউ গ্রুপে কেউ বা এককভাবে। কারো হাতে শুধু একটি ব্যাগ, কেউবা বাজারের ব্যাগে চিড়া-মুড়ি নিয়ে আসছেন। লক্ষ্য একটাই। ৫ই নভেম্বরের বরিশাল বিভাগীয় সমাবেশে যোগ দেয়া। এখনও ৩দিন বাকি থাকলেও হাতে সময় নিয়েই দলে দলে বরিশালে মানুষ ঢুকছেন। বিভিন্ন জেলা উপজেলার নেতাকর্মীরা ল , বাস কিংবা ট্রলারে চেপে বরিশালে আসতে শুরু করেছেন। পরিবহন ধর্মঘট বা হামলার আশংকায় যে যেভাবে পারছেন বরিশালে ঢুকতে শুরু করেছেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা বরিশাল চষে বেড়াচ্ছেন। তাদের মতে এরই মধ্যে ১০ হাজারের বেশি মানুষ বাইরের জেলা থেকে বরিশালে এসে গেছেন। এদিকে ল ধর্মঘট ডাকা নিয়ে মালিকরা দ্বিধা বিভক্ত হয়ে পড়েছেন বলে জানা গেছে। বরিশাল নগরীতে ১লা নভেম্বর মঙ্গলবার থেকেই নগরীর পথঘাটে মানুষের আধিক্য লক্ষ্য করা গেছে।
নগরীর প্রায় প্রতিটি সড়ক, অলিগলিতে ছিল যানজট যা সাধারণকেও বিস্মিত করেছে। সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত অবধি জনসমাবেশস্থল বঙ্গবন্ধু উদ্যানে উল্লেখযোগ্য মানুষ দেখা গেছে। এরা গ্রুপে গ্রুপে ভাগ হয়ে গল্পগুজব করছিল। বিএনপি অফিসের সামনেও বড় বড় জটলা। এদেরই একজন মেহেন্দিগঞ্জের রহমতউল্লাহ। তিনি জানান, মেহেন্দিগঞ্জ থেকে বরিশালে আসতে ল ছাড়া বিকল্প কোন রুট নেই। আর ল ধর্মঘট শুরু হলে সমাবেশেও আসা প্রায় দুরুহ হয়ে পড়বে। তিনি জানান, তিনি সহ ২২ জনের একটি গ্রুপ ১লা নভেম্বর বরিশালে চলে এসেছেন। সারাদিন ঘোরাফেরা, রাতে বঙ্গবন্ধু উদ্যান, মধ্যরাতে যেভাবে যার যার আত্মীয়স্বজনের কাছে ঘুমাতে যাচ্ছেন। মঙ্গলবার ল ঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, ভিন্ন এক পরিস্থিতি। ল গুলো ছেড়ে যাচ্ছে অর্ধেক বা তারও কম যাত্রী নিয়ে। কিন্তু ফিরে আসছে যাত্রী বোঝাই করে। বেলা ২টায় বরিশাল ল ঘাটে ভিড়ল এমভি আল আরাফাত নামের ল টি। এটি ভোলা থেকে এসেছে। ছবি বা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ৫০ উর্ধ এক যাত্রী জানান, ৪ বা ৫ নভেম্বর বরিশালে এসে সমাবেশে যোগ দেয়া অনেক ঝক্কি ঝামেলার ব্যাপার। আটক বা হামলার ভয়তো আছেই। সে কারণেই তিন আগেভাগে চলে এসেছেন। থাকবেন এক বন্ধুর বাসায়। একই কথা বললেন ভোলার মিজান। তিনি জানান, প্রায় শতাধিক নেতাকর্মী এরই মধ্যে বরিশাল চলে এসেছেন। আজ বা কাল সমাবশে আরও লোক আসতে থাকবে। সম্ভবত ৪ঠা নভেম্বরের আগেই সমবাশে অংশ প্রত্যাশী ৬০ থেকে ৭০ ভাগ মানুষ চলে আসবে। মঙ্গলবার শহীদ আব্দুর রব বরিশাল প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনেও কেন্দ্রীয় নেতা ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, আমাদের বহু নেতাকর্মী এরই মধ্যে বরিশালে চলে এসেছেন। কিন্তু পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে ক্ষমতাসীনদের পক্ষ থেকে আরও বেশি বাধাবিপত্তির মুখে পড়তে হবে বলে আশঙ্কা করছেন দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা। তারা বলছেন, খুলনার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের পর তারা বুঝতে পেরেছেন ২৯ অক্টোবর অনুষ্ঠেয় রংপুরের সমাবেশ ঘিরে আরও বেশি চাপ প্রয়োগ করা হতে পারে। সে কথা মাথায় রেখেই পরবর্তী কৌশল নির্ধারণের কথা ভাবা হচ্ছে। একই সঙ্গে সব বাধা উপেক্ষা করে রংপুরসহ অন্য বিভাগীয় সমাবেশগুলোতে জনসমাগম বাড়ানোর ব্যাপারে নজর দিতে বলা হয়েছে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের। এ প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দৈনিকখবর পত্রবলেন, ‘সভা-সমাবেশ করা আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। ঘোষিত কর্মসূচি বাস্তবায়নে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এরই মধ্যে তিনটি বিভাগীয় সমাবেশ সফলভাবে করতে পেরেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘সব বাধাবিপত্তি উপেক্ষা করে বিএনপির সমাবেশে লোকসমাগম দেখেই আওয়ামী লীগে আতঙ্ক ধরে গেছে। সে কারণে লোকসমাগম যেন না হয়; তার জন্য দমনপীড়নের পথে হাঁটছে সরকার। সামনেও সে চেষ্টা তারা করবে। তবে মানুষ যেভাবে জেগে উঠছে, আমার বিশ্বাস, ক্ষমতাসীনেরা ব্যর্থ হবে।’
বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা বলছেন, তিন বিভাগে গণসমাবেশ শেষে তারা দেখতে পেয়েছেন ক্ষমতাসীনদের বাধা দেওয়ার ধরন ও কৌশল এক সমাবেশের চেয়ে আরেকটিতে চরম হয়েছে। এ কারণে পরবর্তী সমাবেশগুলো সফল করা নিয়ে নেতাকর্মীদের ওপর চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে সমাবেশের পর যেভাবে মামলা দেওয়া হচ্ছে, তাতে পরবর্তী সময়ে পুলিশি হয়রানির আশঙ্কা করছেন দলের নেতাকর্মীরা। পরবর্তী কর্মসূচিগুলোতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে কি না তা নিয়েও ভাবছেন নেতারা। এ ব্যাপারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধিসহ জনসম্পৃক্ত নানা দাবিতে বিভাগীয় কর্মসূচি পালন করছি আমরা। এর আগে তৃণমূল ও ঢাকায় সভা-সমাবেশ হয়েছে। প্রত্যেকটি সভায় ক্ষমতাসীনরা বাধা দিয়েছে। এসব বাধাবিপত্তির মধ্যেই আমরা কর্মসূচি পালন করেছি। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করতে চাই। আশা করি, সরকার তা বুঝতে পারবে। যত তাড়াতাড়ি ক্ষমতাসীনরা এটি বুঝতে পারবে ততই মঙ্গল।’
বাধার কথা মাথায় রেখেই চলছে প্রস্তুতি: দলীয় সূত্র জানায়, বিভাগীয় সমাবেশ সফল করতে গত ৬ অক্টোবর থেকেই রংপুরে নানামুখী তৎপরতা শুরু করেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এ ছাড়া আগামী ৫ নভেম্বর বরিশাল, ১২ নভেম্বর ফরিদপুর, ১৯ নভেম্বর সিলেট, ২৬ নভেম্বর কুমিল্লা, ৩ ডিসেম্বর রাজশাহী এবং ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় গণসমাবেশ সফল করতে সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোতেও সাংগঠনিক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। রংপুরে বিভাগীয় সমাবেশের প্রস্তুতি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘রংপুরে গত ৬ অক্টোবর থেকে জেলায় জেলায় গণসংযোগ চলছে। ২৯ অক্টোবরের বিভাগীয় সমাবেশ সফল করতে কেন্দ্রীয় নেতারা বিভাগের আট জেলা সফর করছেন। কয়েকটি জেলায় ইতোমধ্যে সাংগঠনিক বৈঠক সম্পন্ন হয়েছে।’ তিনি আরও জানান, ১০ দিন আগে বিভাগীয় সমাবেশের স্থান রংপুর জিলা স্কুল মাঠের অনুমতি চেয়ে মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের কাছে আবেদন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদনের কপি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পুলিশ প্রশাসন জিলা স্কুল মাঠ ব্যবহারের অনুমতি না দিয়ে এর অদূরে কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে সমাবেশের জন্য মৌখিকভাবে বলেছেন। সমাবেশের নতুন স্থান নিয়ে অবশ্য দলের পক্ষ থেকে কোনো দ্বিমত নেই জানিয়ে সামসুজ্জামান সামু বলেন, তারা শহরের মূল জায়গায় সমাবেশ করতে চান। কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠটিও শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত।
বরিশাল বিভাগে গণসমাবেশ তাদারকির জন্য গঠিত কমিটির সমন্বয়কারী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন কেন্দ্রীয় নেতা ডা. জাহিদ। সেখানকার পরিস্থিতি প্রসঙ্গে দৈনিক খবরপত্রকে তিনি বলেন, ‘বরিশালের সমাবেশে জনসমাগম বাড়াতে সেখানকার প্রতিটি জেলায় জেলায় গণসংযোগ চলছে। পোস্টার লাগানো হচ্ছে। লিফলেট বিলি করা হচ্ছে। জনগণের কাছ থেকে প্রতিক্রিয়াও বেশ ভালোই পাওয়া যাচ্ছে।’ তবে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে প্রস্তুতিতে কিছুটা বাধা পড়েছে বলে জানান বিএনপির বরিশাল বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল হক নান্নু। তিনি বলেন, ‘খারাপ আবহাওয়ার কারণে জেলায় জেলায় রাস্তাঘাটে পানি উঠেছে। এজন্য কয়েকটি সভার তারিখ পরিবর্তন করতে হয়েছে। বরিশালে যে মাঠে সভা হবে সেই মাঠেও পানি উঠেছে। তবে আশা করি সমাবেশের আগেই সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।’
ছাড় দেবে না বিএনপি: বিএনপির গণসমাবেশে বাধা দেওয়ায় সরকারের সমালোচনা করে দলটির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘আমাদের এসব কর্মসূচি বাস্তবায়নে কতটা সফল আর কতটা ব্যর্থ তার চেয়েও বড় কথা হলো আমরা জনগণের সমর্থন ও সহানুভূতি আদায় করতে পেরেছি এসব কর্মসূচির মধ্য দিয়ে। এখন মহিলারা ঝাড়ু মিছিল করে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির দাবিতে। এখানেই আওয়ামী লীগের ব্যর্থতা। তারপরও তারা গায়ের জোরে ঠেকাতে চায়। এটা করতে গেলে কী পরিণতি হয় তা তো ইতিহাসে আছে বিভিন্ন সময়।’ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘ক্ষমতাসীনদের বাধা উপেক্ষা করেই আমাদের তিনটি বিভাগীয় সমাবেশ হয়েছে। বাকি সমাবেশগুলোও হবে তাদের বাধাবিপত্তি ডিঙিয়েই।’ সেইপথে এগিয়ে যাচ্ছে বিএনপি। বাধাবিপত্তি কাটিয়ে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও খুলনায় গণসমাবেশ সম্পন্ন করতে পারায় সাংগঠনিকভাবে মনোবল আরও চাঙ্গা হয়েছে বিএনপির। কিন্তু পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে ক্ষমতাসীনদের পক্ষ থেকে আরও বেশি বাধাবিপত্তির মুখে পড়তে হবে বলে আশঙ্কা করছেন দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা। তারা বলছেন, খুলনার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের পর তারা বুঝতে পেরেছেন ২৯ অক্টোবর অনুষ্ঠেয় রংপুরের সমাবেশ ঘিরে আরও বেশি চাপ প্রয়োগ করা হতে পারে। সে কথা মাথায় রেখেই পরবর্তী কৌশল নির্ধারণের কথা ভাবা হচ্ছে। একই সঙ্গে সব বাধা উপেক্ষা করে রংপুরসহ অন্য বিভাগীয় সমাবেশগুলোতে জনসমাগম বাড়ানোর ব্যাপারে নজর দিতে বলা হয়েছে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের। এ প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সভা-সমাবেশ করা আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। ঘোষিত কর্মসূচি বাস্তবায়নে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এরই মধ্যে তিনটি বিভাগীয় সমাবেশ সফলভাবে করতে পেরেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সব বাধাবিপত্তি উপেক্ষা করে বিএনপির সমাবেশে লোকসমাগম দেখেই আওয়ামী লীগে আতঙ্ক ধরে গেছে। সে কারণে লোকসমাগম যেন না হয়; তার জন্য দমনপীড়নের পথে হাঁটছে সরকার। সামনেও সে চেষ্টা তারা করবে। তবে মানুষ যেভাবে জেগে উঠছে, আমার বিশ্বাস, ক্ষমতাসীনেরা ব্যর্থ হবে।’
বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা বলছেন, তিন বিভাগে গণসমাবেশ শেষে তারা দেখতে পেয়েছেন ক্ষমতাসীনদের বাধা দেওয়ার ধরন ও কৌশল এক সমাবেশের চেয়ে আরেকটিতে চরম হয়েছে। এ কারণে পরবর্তী সমাবেশগুলো সফল করা নিয়ে নেতাকর্মীদের ওপর চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে সমাবেশের পর যেভাবে মামলা দেওয়া হচ্ছে, তাতে পরবর্তী সময়ে পুলিশি হয়রানির আশঙ্কা করছেন দলের নেতাকর্মীরা। পরবর্তী কর্মসূচিগুলোতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে কি না তা নিয়েও ভাবছেন নেতারা।
এ ব্যাপারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধিসহ জনসম্পৃক্ত নানা দাবিতে বিভাগীয় কর্মসূচি পালন করছি আমরা। এর আগে তৃণমূল ও ঢাকায় সভা-সমাবেশ হয়েছে। প্রত্যেকটি সভায় ক্ষমতাসীনরা বাধা দিয়েছে। এসব বাধাবিপত্তির মধ্যেই আমরা কর্মসূচি পালন করেছি। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করতে চাই। আশা করি, সরকার তা বুঝতে পারবে। যত তাড়াতাড়ি ক্ষমতাসীনরা এটি বুঝতে পারবে ততই মঙ্গল।’
বাধার কথা মাথায় রেখেই চলছে প্রস্তুতি: দলীয় সূত্র জানায়, বিভাগীয় সমাবেশ সফল করতে গত ৬ অক্টোবর থেকেই রংপুরে নানামুখী তৎপরতা শুরু করেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এ ছাড়া আগামী ৫ নভেম্বর বরিশাল, ১২ নভেম্বর ফরিদপুর, ১৯ নভেম্বর সিলেট, ২৬ নভেম্বর কুমিল্লা, ৩ ডিসেম্বর রাজশাহী এবং ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় গণসমাবেশ সফল করতে সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোতেও সাংগঠনিক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। রংপুরে বিভাগীয় গণসমাবেশ তদারকির জন্য গঠিত কমিটির প্রধান উপদেষ্টা ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘আমাদের নজর হচ্ছে একটি সফল সমাবেশ করার। বাধাবিপত্তির মধ্যেই তো আমরা আমাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা সমাবেশ করব আর আওয়ামী লীগ বাধা দেবে না, এমন চিন্তা আমরা করতে পারি না। ক্ষমতাসীনদের বাধাবিপত্তি উপেক্ষা করেই বাকি বিভাগীয় সমাবেশগুলো হবে। ওইসব সমাবেশ হবে সেই সব বিভাগের ইতিহাসে রেকর্ড সৃষ্টিকারী গণজমায়েত।’
তিনি আরও জানান, ১০ দিন আগে বিভাগীয় সমাবেশের স্থান রংপুর জিলা স্কুল মাঠের অনুমতি চেয়ে মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের কাছে আবেদন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদনের কপি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পুলিশ প্রশাসন জিলা স্কুল মাঠ ব্যবহারের অনুমতি না দিয়ে এর অদূরে কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে সমাবেশের জন্য মৌখিকভাবে বলেছেন। সমাবেশের নতুন স্থান নিয়ে অবশ্য দলের পক্ষ থেকে কোনো দ্বিমত নেই জানিয়ে সামসুজ্জামান সামু বলেন, তারা শহরের মূল জায়গায় সমাবেশ করতে চান। কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠটিও শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। বরিশাল বিভাগে গণসমাবেশ তাদারকির জন্য গঠিত কমিটির সমন্বয়কারী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন কেন্দ্রীয় নেতা ডা. জাহিদ। সেখানকার পরিস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বরিশালের সমাবেশে জনসমাগম বাড়াতে সেখানকার প্রতিটি জেলায় জেলায় গণসংযোগ চলছে। পোস্টার লাগানো হচ্ছে। লিফলেট বিলি করা হচ্ছে। জনগণের কাছ থেকে প্রতিক্রিয়াও বেশ ভালোই পাওয়া যাচ্ছে।’ তবে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে প্রস্তুতিতে কিছুটা বাধা পড়েছে বলে জানান বিএনপির বরিশাল বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল হক নান্নু। তিনি বলেন, ‘খারাপ আবহাওয়ার কারণে জেলায় জেলায় রাস্তাঘাটে পানি উঠেছে। এজন্য কয়েকটি সভার তারিখ পরিবর্তন করতে হয়েছে। বরিশালে যে মাঠে সভা হবে সেই মাঠেও পানি উঠেছে। তবে আশা করি সমাবেশের আগেই সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।’ ছাড় দেবে না বিএনপি: বিএনপির গণসমাবেশে বাধা দেওয়ায় সরকারের সমালোচনা করে দলটির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘আমাদের এসব কর্মসূচি বাস্তবায়নে কতটা সফল আর কতটা ব্যর্থ তার চেয়েও বড় কথা হলো আমরা জনগণের সমর্থন ও সহানুভূতি আদায় করতে পেরেছি এসব কর্মসূচির মধ্য দিয়ে। এখন মহিলারা ঝাড়ু মিছিল করে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির দাবিতে। এখানেই আওয়ামী লীগের ব্যর্থতা। তারপরও তারা গায়ের জোরে ঠেকাতে চায়। এটা করতে গেলে কী পরিণতি হয় তা তো ইতিহাসে আছে বিভিন্ন সময়।’ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘ক্ষমতাসীনদের বাধা উপেক্ষা করেই আমাদের তিনটি বিভাগীয় সমাবেশ হয়েছে। বাকি সমাবেশগুলোও হবে তাদের বাধাবিপত্তি ডিঙিয়েই।’