রবিবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৩৯ অপরাহ্ন

স্যুট-কোট পরে ইভিএমে কারচুপি করা যায়: বদিউল আলম মজুমদার

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শনিবার, ৫ নভেম্বর, ২০২২

রংপুরে নাগরিক সংলাপের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার ইভিএম এমন একটা দুর্বল যন্ত্র যে এটা দিয়ে স্যুট-কোট-টাই পরে ভদ্রলোকরা জালিয়াতি করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেন, ইভিএমের চেয়ে বড় সমস্যা নির্বাচন কমিশন নিয়ে। কারণ, নির্বাচন কমিশনের ওপর মানুষের আস্থা নেই। সুতরাং তাদেরকে যদি ইভিএম দেওয়া হয় তাহলে সেটা আমাদের আরও বড় সংকটের দিকে ঠেলে দেবে।
গতকাল শুক্রবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে রংপুর নগরীর আরডিআরএস বেগম রোকেয়া মিলনায়তনে নাগরিক সংলাপে যোগ দিতে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নির্বাচন কমিশন বলছে যে ইভিএম দিয়ে জালিয়াতি করা যায় এটা কেউ প্রমাণ করতে পারেনি। আমরা কমিশনকে বারবার বলছি, কেউ কিন্তু অভিযোগ করেনি যে বাইরের কেউ ইভিএমে জালিয়াতি করতে পারে। যদিও নির্বাচন কমিশনের যোগসাজশে তা অসম্ভব। আমরা বলছি যে, ইভিএম এমন একটা দুর্বল যন্ত্র, নিকৃষ্ট যন্ত্র যে, এটা দিয়ে স্যুট-কোট-টাই পরে ভদ্রলোকরা জালিয়াতি করতে পারে। তিনি বলেন, এটা দিয়ে জালিয়াতি করতে পারে মূলত নির্বাচন কমিশন, তাদের কর্মকর্তা, তাদের কারিগরি টিম এবং নির্বাচন কেন্দ্রে বা বুথে দায়িত্বে থাকা প্রিসাইডিং অফিসাররা।
সুজন সম্পাদক বলেন, ইভিএমের বড় আরেক দুর্বলতা হলো, ভোট হয় ইলেকট্রিক্যাল আর ফলাফল তৈরি হয় ম্যানুয়ালি। এখানে অনেক সুযোগ আছে কারসাজির। সুতরাং এই ইভিএম আমাদের জন্য সঠিক নয়। আর বর্তমান বাজারমূল্যে এবং অর্থনৈতিক মন্দায় নয় হাজার কোটি টাকা দিয়ে ইভিএম কেনা কোনোভাবেই সমুচিত হবে না।
তিনি বলেন, আমরা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পক্ষে। আমরা এমন একটা আইনি কাঠামো চাই। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের মাধ্যমে আমাদের আইনকে অস্ত্রে পরিণত করা হয়েছে, আমাদের সংবিধানকে অস্ত্রে পরিণত করা হয়েছে। যার ফলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। বদিউল আলম মজুমদার আরও বলেন, আমরা চাই এমন একটা পরিবেশ সৃষ্টি হোক, এমন একটা সাংবিধানিক কাঠামো আমাদের সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হোক, যার মাধ্যমে প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিরপেক্ষতা নিশ্চিত হবে। নির্বাচন কমিশন তার প্রতিশ্রুতির প্রমাণ করতে পারবে।
গাইবান্ধায় উপনির্বাচন বন্ধ করায় কমিশনকে সাধুবাদ জানালেও সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে না পারায় সমালোচনা করেন সুজন সম্পাদক। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব নির্বাচন বন্ধ করা না। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করা।
বদিউল আলম মজুমদার আরও বলেন, কোনো দলীয় সরকারের আমলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। কেননা আমরা দেখেছি অতীতের যত নির্বাচন হয়েছে তার মধ্যে দলীয় সরকারের আমলে নির্বাচনগুলো সুষ্ঠু হয়নি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলের নির্বাচনগুলো সুষ্ঠু হয়েছে। তবে নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হবে নাকি নির্বাচনকালীন সরকারের মাধ্যমে হবে তা নির্ধারণ করবে রাজনৈতিক দলগুলো। আমরা শুধু সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কাজ করছি। তাছাড়া সংবিধান সংস্কার করে ইসির অধীনে থাকা সংস্থাগুলো শক্তিশালী করলেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। এরপর আরডিআরএসের বেগম রোকেয়া মিলনায়তনে ‘কেবল অর্থনৈতিক সংস্কার নয়, সংকট সমাধানে প্রয়োজন রাজনৈতিক সংস্কার’ শীর্ষক নাগরিক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। সংলাপে সুজন রংপুর জেলার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন সভাপতিত্ব করেন। এসময় সুজনের রংপুর মহানগর সভাপতি ফখরুল আনাম বেঞ্জু, সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) নাসিমসহ সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com