শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে এখন বাজাওে চলে এসেছে আধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি বিভিন রকমের কম্বল ও গরম চাদর। তবে বাঙালির শীত কাতুর হৃদয়ে লেপের স্থানই আলাদা। শীত আসারআগেই তাই লেপ-তোষক বানানোর ধুম পড়ে। লেপ-তোষকের দোকানে দেখাযায় লাল আভা। লেপের তুলো কেন লাল কাপড়েই মোড়ানো হয়? এ প্রশ্নের জবাবে উপজেলার সান্তাহার লেপ তোষক তৈরির মহাজন ইসতিয়াক হোসেন বলেন, লাল কাপড়ে লেপ তৈরি শুরুহ য় বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার নবাব মুর্শিদ কুলিখানের আমল থেকে। সেই সময়েই লাল মখমলের কাপড় দিয়ে লেপ তৈরি শুরু। মুর্শিদাবাদে লম্বা কার্পাসতুলোর চাষ হতো, সেই তুলো লাল রঙেচুবিয়ে মোলায়েম মখমলের কাপড়ে ভরা হতো। সুগন্ধির জন্য ছিটিয়ে দেয়া হতোআতর। কিন্তু মখমল ও সিল্কের দাম সাধারণেরহাতেরবাইরে। তাই সাধারণ মানুষ লাল কাপড়েই তুলা ভরা শুরু করেন।এই গল্প প্রচলিত রয়েছে ধুনুরিদেও একাংশের মধ্যেও। সেই থেকে লাল কাপড়ে লেপ বানানোর রীতি চলে আসছে। শীতের আগমন এলেই ব্যস্ত হয়ে পড়েন লেপ-তোষক কারিগররা। বছরের অন্যান্য সময় তারা অলস সময় কাটালে ওবাংলা আশ্বিন মাস থেকে দোকানের তালা খুলে বসেন মহাজনরা। লেপ-তোষকের কাপড়, তুলা ও সেলাই মেশিনসহ সরঞ্জামাদী সাজিয়ে বসেন লেপ-তোষক তৈরি করতে। এবার আদমদীঘি উপজেলার কার্তিক মাস থেকে পুরোদমে বিভিন্ন লেপ-তোষকের দোকানে ধুম পড়েছে লেপ-তোষক তৈরিতে। স্থানীয় সূত্রে জানায় যায়, আদমদীঘি উপজেলা সদর, সান্তাহার, ছাতিয়ান গ্রাম, চাঁপাপুর, নসরতপুর, মুরইল, কুন্দগ্রাম, কড়ইসহ বিভিন্ন এলাকায় তিন শতাধিক লেপ-তোষকের দোকান রয়েছে। এসব দোকানে মহাজন, কারিগরসহ সহ¯্রাধিক শ্রমিক এ পেশায় নিয়োজিত রয়েছেন। আদমদীঘি সদরের মহাজন রফিকুল ইসলাম জানান, প্রায় ১০ বছর যাবত লেপ-তোষক তৈরির কাজ করছি। আগেএনালক পদ্ধতিতে লেপ-তোষক তৈরি করা হতো। এখন উন্নত মানের জুকি মেশিনে কাজ করা হয়। এতে সময় কম লাগে বড় মাপের লেপ কাপড় তুলা সুতাসহ তৈরি খরচ বাবদ গ্রাহকদেও কাছ থেকে ৩ হাজার ৮শ’ টাকা থেকে ৩ হাজার ২শ’ টাকা পর্যন্ত নেয়া হয়। গদির দাম নেয়া হয় ৪ হাজার ৮শ’ টাকা থেকে ৪ হাজার ২শ’ টাকা। শ্রমিক মজুরি লেপ- ৬৫০ টাকা ও তোষক বা গদি ৭৫০ টাকা দিতে হয়। বর্তমানে আদমদীঘি উপজেলার তিনশতাধিক প্রতিষ্ঠানে কারিগরা লেপ-তোষক তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। এবারও ধুম পড়েছে লেপ-তোষক তৈরিতে। আশ্বিন মাস থেকে ফালগুন মাস পর্যন্ত এ পেশার কারিগররা ব্যস্ত থাকলেও অবশিষ্ট মাসে কারিগররা অন্য পেশায় নিয়োজিত থাকেন। বর্তমানে খদ্দেরের সংখ্যাও কম নেই দোকানগুলোতে। খদ্দের আফজাল হোসেন জানান, তিনি ৩ হাজার ২শ’ টাকায় বড় মাপের একটি লেপ তৈরি করে নিয়েছেন।