সিলেটে জেলা বিএনপির সাবেক স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক আ ফ ম কামালকে (৪২) ব্যবসায়িক বিরোধের জেরে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে এর সত্যতা মিলেছে। ঘটনার সঙ্গে বিএনপির স্থানীয় এক নেতা জড়িত বলেও পুলিশ জানিয়েছে। এরই মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ছাত্রদল নেতা ইশতিয়াক আহমদ রাজুকে আটক করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার (৭ নভেম্বর) দুপুর ১টায় নিহতের ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এর আগে মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন এয়ারপোর্ট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইব্রাহিম হোসেন ও উপ-পরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলাম। তারা জানান, মরদেহের হাতে, বুকেসহ শরীরের একাধিক স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তবে এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি।
আ ফ ম কামাল জেলা ছাত্রদলের সাবেক প্রচার সম্পাদক ও সিলেট সদর উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি এবং ল’ কলেজ ছাত্রসংসদের নির্বাচিত জিএস ছিলেন। তার বাসা নগরের সুবিদবাজার এলাকায়। গ্রামের বাড়ি সিলেট সদর উপজেলার আলীনগর গ্রামে। সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ বলেন, সর্বশেষ তথ্য হচ্ছে কারা এই হত্যাকা-টি ঘটিয়েছে তা আমরা শনাক্ত করতে পেরেছি। ঘটনার ক্লু পাওয়া গেছে। হত্যাকারীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে। আশা করছি শিগগির তাদের গ্রেফতার করতে পারবো। তিনি আরও বলেন, নিহত কামালের ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবসা ছিল। ব্যবসা নিয়ে নগরের কয়েকজনের সঙ্গে তার বিরোধ চলছিল। এ বিরোধের জেরে গত ১৫ অক্টোবর নগরের জিন্দাবাজার এলাকার আল মারজান শপিং সেন্টারের সামনে দুপক্ষের হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে।
পুলিশের এই উপ-কমিশনার বলেন, হাতাহাতির পর ১৯ অক্টোবর কামালসহ কয়েকজনকে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন আজিজুর রহমান সম্রাট নামের এক ব্যক্তি। নগরের বড়বাজার এলাকার বাসিন্দা সম্রাট। আ ফ ম কামাল হত্যাকাণ্ডের ঘটনাও এলাকায়ই ঘটেছে। আমরা ধারণা করছি, ব্যবসা সংক্রান্ত পূর্ববিরোধের জেরে ঘটনাটি ঘটতে পারে।’
এদিকে হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ‘হত্যাকারী যে-ই হোক অবিলম্বে তাদের গ্রেফতার না করা হলে আমরা কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবো।’ এ হত্যাকাণ্ডকে পুঁজি করে রাজনৈতিকভাবে কাউকে যেন হয়রানি করা না হয় এবং বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের যেন দমন-পীড়ন করা না হয় এমন দাবিও জানান কাইয়ুম চৌধুরী। সিলেট এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মোহাম্মদ মাইনুল জাকির জাগো নিউজকে বলেন, সোমবার দুপুর ১টায় নিহতের ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মরদেহ দাফনের পর পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা হবে। ওসি আরও বলেন, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের কাছাকাছি রয়েছি। যেকোনো সময় হত্যাকারীরা গ্রেফতার হতে পারেন। পুলিশের একাধিক দল মাঠে আছে। এদিকে এ হত্যাকা-ের জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করে পোস্টার করেছে বিএনপি। রোববার রাত ৯টায় বড়বাজার এলাকায় নিজের প্রাইভেটকারে বসা ছিলেন কামাল। এ সময় মোটরসাইকেলে আসা দুর্বৃত্তরা তাকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।