বিএনপি নয়, ক্ষমতাসীনরাই অগ্নিসন্ত্রাসের মূল হোতা বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বুধবার বিকালে তিনটি সমমনা রাজনৈতিক দলের সাথে সংলাপ শেষে সরকারের মন্ত্রী-নেতাদের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ অভিযোগ করেন। মির্জা ফখরুল বলেন, চলমান আন্দোলনের যে ধারাবাহিকতা শুরু হয়েছে এবং তার যে গতি, প্রতিদিন তা বাড়ছে- এটাতে ভীত হয়ে তারা (ক্ষমতাসীনরা) আগের যে বিষয়গুলো সেই বিষয়গুলোকে নিয়ে আসছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে যেটা সত্য কথা, সেটা হচ্ছে, এই যে অগ্নিসন্ত্রাসের মূল হোতা কিন্তু আওয়ামী লীগ নিজেই, সরকার নিজেই।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের লোকেরাই অগ্নিসন্ত্রাসের সাথে জড়িত। বাসে অগ্নিসংযোগ নিশ্চয় সবার মনে আছে। সেই বাসের মালিক ছিল আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য, স্বেচ্ছাসেবক পার্টির প্রধান। চৌদ্দগ্রামে এরকম একটি ঘটনায় বেগম খালেদা জিয়াকে আসামি করে যে মামলাগুলো দেয়া হয়েছিল, পরে সব কিছুর মূলে দেখা যায় ছাত্রলীগ-যুবলীগ-আওয়ামী লীগের লোকেরাই জড়িত। বিএনপি কোনো সন্ত্রাসের সাথে জড়িত নয় দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা (বিএনপি) একটা মুক্ত লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি, আমরা নির্বাচন করা দল। কখনোই অগ্নিসন্ত্রাস বা সন্ত্রাস করে আমরা ক্ষমতায় যাইনি, যেতে চাই না। তিনি বলেন, এতোগুলো সমাবেশ হয়েছে প্রত্যেকটা সমাবেশে আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপরে কী রকম অত্যাচার-নির্যাতন হয়েছে! কিন্তু আমাদের দল থেকে কোনো রকমের কোনো সন্ত্রাস বা উস্কানি দেয়া হয়নি। তারাই উস্কানি দিয়ে সন্ত্রাস সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। অর্থাৎ তারা এই চলমান আন্দোলনকে আবার ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার পায়তারা করছে। ‘কোনো ছাড় দেয়া হবে না’ সরকারের মন্ত্রীদের এরকম বক্তব্যের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ছাড় কেউ কাউকে দেয় না। দাবি আদায় করে নিতে হয়। শেষ পর্যন্ত এই ধরনের ফ্যাসিস্ট সরকারের দেখা যায় যে, তাসের ঘরের মতো সমস্ত পরে যায়। ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত এরশাদের একই ধরনের কথাবার্তা ছিলো, বডি ল্যাংগুয়েজ ছিলো। ৬ তারিখে কিন্তু ধপাস। বুধবার বিকেল ৪টায় মাইনরিটি জনতা পার্টি, বিকাল সাড়ে ৪টায় বাংলাদেশ ন্যাপ ও বিকাল ৫টায় সাম্যবাদী দলের সাথে সংলাপে বসেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সংলাপে মাইনোরিটি জনতা পার্টির চেয়ারম্যান সুকৃতি কুমার মন্ডল, বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান এম এন শাওন সাদেকী এবং বাংলাদেশ সাম্যবাদী দলেরে সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নুরুল ইসলাম নিজ নিজ দলের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। মাইনোরিটি জনতা পার্টির প্রতিনিধি দলে ছিলেন দিলীপ কুমার দাস, মোহাম্মদ আবদুল হাই, কমলেশ কুমার দাস, নিরদ বরণ মজুমদার, অশোক কুমার সরকার, ভবতোষ মুখার্জী সুবীর, শন্তু নাথ দাস, পল্লব চ্যাটার্জী, উজ্জ্বল চন্দ্র দাস, শেখর চন্দ্র সরকার, সুমন কুমার সরকার, কেয়া সেন ও মিঠুর ভট্টচার্য। বাংলাদেশ ন্যাপের প্রতিনিধিরা হলেন পরেশ চন্দ্র সরকার, আব্দুল বারিক, নুরুজ্জামান, মেহেদি হাসান এবং ওমর ফারুক। সাম্যবাদী দলের অন্য সদস্যরা হলেন সুরাইফুল ইসলাম মাহফুজ, সাইফ উদ্দিন মাহমুদ, এরশাদ আলী, মেহেবুব মিয়া, আবু তাহের, শামসুল হক, আব্দুল গনি খান, সুমন হাওলাদার ও নুরুদ্দিন ঢালী। বিএনপির মহাসচিবের সাথে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। সরকার পতন আন্দোলনের কর্মকৌশল চূড়ান্ত করতে গত সেপ্টেম্বর থেকে বিএনপি মহাসচিব ২০ দলীয় জোটের শরিক দলগুলোর সাথে দ্বিতীয় দফা সংলাপ শুরু করেন।