ঢাকার আশুলিয়ায় নাইটিংগেল মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা অন্য কলেজে মাইগ্রেশনের দাবী জানিয়ে দিনভর অবস্থান কর্মসূচী পালন করেছে শিক্ষার্থীরা। এসময় প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষকে তার কক্ষে অবরোদ্ধ করে রাখে। পরে পুরো প্রতিষ্ঠানেই তালা ঝুলিয়ে দেয় বিক্ষুব্দ শিক্ষার্থীরা। বুধবার সকাল সাড়ে ১০ টা থেকে সন্ধ্যা ৫টা পর্যন্ত আশুলিয়ার নরসিংহপুরে অবস্থিত নাইটিংগেল মেডিক্যাল কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে তারা প্রথমে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে এবং পরে বিক্ষব্দু হয়ে ওই কলেজের অধ্যক্ষ ডা: এএসএম রুহুল কুদ্দুসকে তার কক্ষে ও পুরো প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে দেয়। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ইমরান খান ইমন, আফরোজা বিথী, আসিফ হাসান শুভ, সাইফুল্লাহ মাহামুদ, সানজিদা সহ আরো কয়েকজন জানান, ২০১৭-১৮ইং সেশনে ৫২ জন শিক্ষার্থী জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেখে এই মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন। এখন তারা চতুর্থ বর্ষে রয়েছেন। কিন্তু মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের মিথ্যা আশ্বাস ও আদালতের কিছু কাগজপত্র দেখিয়ে ভর্তি করান, প্রথম বর্ষে বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন এনে দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিলেও এখন পর্যন্ত তা দিতে পারেনি। কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থা সংক্রান্ত সব সুযোগ-সুবিধা থেকেও তাঁদের বঞ্চিত করেছে। এই মেডিকেল কলেজে থেকে স্বাস্থ্য শিক্ষা সম্পর্কিত পরিপূর্ণ জ্ঞান অর্জন আদৌ সম্ভব নয়। শিক্ষার্থীদের অন্যত্র মাইগ্রেশনের ব্যবস্থা করার জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, সচিব এবং স্বাস্থ্য ও শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর আবেদন করেছিলাম। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত থেকে মাইগ্রেশনের অর্ডার আসলেও কলেজ কর্তৃপক্ষও একটি রিট করে আমাদের মাইগ্রেশন অর্ডার বন্ধ করে দেয়। আমরা দ্রুত এর পদক্ষেপ চাই। যেন আমাদের শিক্ষাজীবনে আলো ফিরে আসে। তাই আন্দোলনের অংশ হিসেবে আমরা প্রিন্সিপাল স্যারকে অবরোদ্ধ করে রেখেছি এবং পুরো প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে য়ো হয়েছে। আমাদের কোনো ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত তিনি অবরোদ্ধ থাকবেন। তারা আরো জানান, কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের জানান ২০১৭ সালে তাদের প্রথম ব্যাচ ধরে কলেজের সব কার্যক্রম নতুনভাবে শুরু করবে। ক্লাস শুরুর পর প্রথম বর্ষ কোনো সমস্যা ছাড়া কাটলেও দ্বিতীয় বর্ষে জানতে পারি, এই কলেজের বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন নেই, এমনকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রেশনও তখনো ছিল না। অন্যথায় ৪৫জন শিক্ষার্থীর ভবিষ্যতের পাশাপাশি ৪৫টি পরিবারের ভবিষ্যৎও অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে। তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে দাড়িয়েছে। নাইটিংগেল মেডিক্যাল কলেজের অবরোদ্ধ অধ্যক্ষ ডাঃ এ এস এম রুহুল কুদ্দুস বলেন, আমি ৫ দিন হলো প্রিন্সিপালের দ্বায়িত্ব পেয়েছি। আগে এখানে প্যাথলোজির দ্বায়িত্বে ছিলাম? রিটের একটি বিষয়ে সব কিছু আটকে আছে । আমাদের এমডি স্যার এ বিষয়ে কথা বলবেন। শিক্ষার্থীরা তার সাথে কথা বলেছেন তারাই ভালো জানে। তিনি আসবেন কি-না জানি না। এদিকে, বিকেল সারে ৪টার দিকে আশুলিয়া থানার ওসি (অপারেশন) মিজানুর রহমান ঘটনাস্থলে এসে কলেজ কর্তৃপক্ষ ও বিক্ষুব্দ শির্ক্ষীদের সাথে আলোচনা করলে সন্ধ্যা ৫টার দিকে অবরোদ্ধ অধ্যক্ষকে তার কক্ষ থেকে বের করে আনা হয় এবং তারা কর্মসূচী তুলে নেন। আশুলিয়া থানার ওসি (অপারেশন) মিজানুর রহমান জানান, শিক্ষার্থীদের হয়ে তিনি কলেজ কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছেন। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে শিক্ষার্থীদের মাইগ্রেশনের ব্যাপারে যে জটিলতা ছিল আগামীকাল (আজ) মধ্যে তা সমাধান করা হবে। সেজন্য বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে দুইজন প্রতিনিধিকে আদালতে পাঠিয়ে মাইগ্রেশনের ব্যাপারে নিশ্চিত করা হবে।