সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিশ্বের ২৭টি দেশ থেকে গত পাঁচ মাসে (১ এপ্রিল থেকে ১ সেপ্টেম্বর) দেশে ফেরত এসেছেন এক লাখ দুই হাজার ২২৬ জন প্রবাসী। তাদের মধ্যে পুরুষ ৯৪ হাজার ২১০ জন ও নারী আট হাজার ১৬ জন। এদের অর্ধেকেরই বেশি মাত্র দুটি দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরব থেকে ফেরত এসেছেন। ফেরত আসাদের কেউ বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করে আউটপাস, কেউ করোনার কারণে কাজ না বা চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়া আবার কেউ ভিসার মেয়াদ না থাকায় সাধারণ ক্ষমার আওতায় দেশে ফেরত এসেছেন। প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, বিদেশফেরত কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে অনেকেরই ফিরে আসার কারণ জানা গেছে। আবার কারও কারও ফিরে আসার কারণ জানা যায়নি।
২৭টি দেশের মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ফেরত আসেন ৩১ হাজার ৩৯৪ জন (পুরুষ ২৯ হাজার ৭৩২ জন ও নারী এক হাজার ৬৬২ জন)। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ না থাকায় তারা কর্মীদের পাঠিয়ে দিয়েছে। কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তাদের আবার নেয়ার কথা বলে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে। অনেকেই বলছেন তারা ছুটিতে এসেছেন। সৌদি আরব থেকে ২২ হাজার ৪২৭ জন (পুরুষ ১৯ হাজার ৮২৯ জন ও নারী দুই হাজার ৫৯৮ জন) ফেরত আসেন। বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করে আউটপাস নিয়ে তারা দেশে আসেন।
মালদ্বীপ থেকে আট হাজার ৮২৩ জন (পুরুষ আট হাজার ৭৬৬ ও নারী ৫৭ জন) ফেরত আসেন। পর্যটননির্ভর দেশ হওয়ায় করোনার কারণে কাজ নেই তাই মালিক/কোম্পানি তাদের ফেরত পাঠিয়েছে। কুয়েত থেকে আট হাজার ২৩৭ জন (পুরুষ আট হাজার ১৩৪ জন ও নারী ১০৩ জন) ফেরত আসেন। আকামা বা ভিসার মেয়াদ না থাকায় বা অবৈধ হওয়ায় সাধারণ ক্ষমার আওতায় ফেরত আসেন আবার অনেক কর্মী বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করে দেশে ফিরেছেন। কাতার থেকে ফেরত এসেছেন আট হাজার ২২১ জন (পুরুষ সাত হাজার ৬১৫ জন ও নারী ৬০৬ জন)। কাজ নেই তাই ফেরত এসেছেন। ওমান থেকে ফেরত এসেছেন ছয় হাজার ৭১৫ জন (পুরুষ ছয় হাজার ১৫৩ জন ও নারী ৫৬২ জন)। বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করে আউটপাস নিয়ে তারা দেশে আসেন। মালয়েশিয়া থেকে ফেরত এসেছেন তিন হাজার ৪৩৫ জন (পুরুষ তিন হাজার ২৩৩জন ও নারী ২০২ জন)। কাজ নেই তাই ফেরত এসেছেন। দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ফেরত এসেছেন ১০০ জন এবং তাদের সবাই পুরুষ। চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় তারা দেশে ফিরে আসেন। ইরাক থেকে ফেরত এসেছেন তিন হাজার ১০১ জন (পুরুষ তিন হাজার ৯৬ জন ও নারী পাঁচজন)। কাজ নেই তাই ফেরত এসেছেন তারা। শ্রীলঙ্কা থেকে ফেরত এসেছেন ১৩৫ জন এবং তাদের সকলেই পুরুষ। কাজের মেয়াদ শেষে তারা ফেরত আসেন।
তুরস্ক থেকে ফেরত আসেন দুই হাজার ৯৯৮ জন। (পুরুষ দুই হাজার ৭৩৯ জন ও নারী ২৬০ জন)। কী কারণে ফেরত আসেন তা উল্লেখ করা হয়নি। লেবানন থেকে ফেরত আসেন দুই হাজার ১৮৫ জন (পুরুষ এক হাজার ৪০১ জন ও নারী ৭৮৪ জন)। কী কারনে ফেরত আসেন তার উল্লেখ নেই। জর্দান থেকে ফেরত এসেছেন এক হাজার ৩৯২ জন (পুরুষ ২৭২ জন ও নারী এক হাজার ১২০ জন)। তাদের সবাই গার্মেন্টস শ্রমিক। চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় ফিরে এসেছেন তারা। সিঙ্গাপুর থেকে ফেরত এসেছেন এক হাজার এক হাজার ৬০৪ জন (পুরুষ এক হাজার ৬০০ জন ও নারী চারজন)। কাজের বা চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় তারা দেশে ফেরত আসেন। বাহরাইন থেকে ফেরতে এসেছেন ৭৪৬ জন এবং তাদের সকলেই পুরুষ। বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করে আউটপাস নিয়ে দেশ আসেন। এছাড়া অসুস্থ ও চাকরি হারিয়ে অনেকেই ফেরত আসেন।
ইতালি থেকে ফেরত এসেছেন ১৫১ জন। তাদের সকলেই পুরুষ। ৬ জুলাই বাংলাদেশ থেকে যাওয়া ১৫১ জন বাংলাদেশ কর্মীকে করোনা সন্দেহে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। এদের সকলকেই সেনাবাহিনীর অধীন কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়। ভিয়েতনাম থেকে ফেরত এসেছেন ১২২ জন এবং তাদের সকলেই পুরুষ। কাজের মেয়াদ শেষে তারা দেশে ফিরে আসেন। রাশিয়া থেকে ১০০ জন ফেরত আসেন। তাদের সকলেই পুরুষ। কী কারণে ফেরত আসেন তা উল্লেখ করা হয়নি। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ৭১ জন থেকে ফেরত আসেন এবং তাদের সকলেই পুরুষ। কাজ নেই তাই ফেরত এসেছেন। নেপাল থেকে ফেরত আসেন ৫৫ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ৪০ জন ও নারী ১৫ জন)। কী কারণে ফেরত আসেন তার উল্লেখ নেই। কম্বোডিয়া থেকে ৪০ জন ফেরত আসেন এবং তারা সকলেই পুরুষ। কাজ নেই তাই ফেরত এসেছেন তারা। মিয়ানমার থেকে ফেরত এসেছেন ৩৯ জন। তাদের সবাই পুরুষ। কাজ নেই তাই ফেরত এসেছেন। মরিশাস থেকে ফেরত এসেছেন ৩৬ জন। (পুরুষ ১৬ হাজার ১৫৩ জন ও নারী ২০ জন)। কাজের মেয়াদ শেষে তারা দেশে ফিরে আসেন। থাইল্যান্ড থেকে ফেরত এসেছেন ৩২ জন (পুরুষ ৩০ জন ও নারী দুইজন)। কাজ নেই তাই ফেরত এসেছেন। হংকং থেকে ফেরত আসেন ১৬ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ১২ জন ও নারী চারজন। কী কারণে ফেরত আসেন তার উল্লেখ নেই।
জাপান থেকে ফিরে আসেন আটজন। তারা সকলেই পুরুষ। আইএম জাপানের মাধ্যমে যাওয়া প্রথম ব্যাচের আটজন তিন বছর মেয়াদ শেষে ছুটিতে আসেন। লন্ডন থেকে ফেরত আসেন ৪৩ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ৩০ জন ও নারী ১৩ জন। কী কারণে ফেরত আসেন তার উল্লেখ নেই।