বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:৪৯ অপরাহ্ন

কথা এক দফা এক, শেখ হাসিনার পদত্যাগ

এম এ মতিন সিলেট:
  • আপডেট সময় শনিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২২

সিলেট বিভাগীয় গণসমাবেশে মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। আমাদের কথা এক দফা এক, শেখ হাসিনার পদত্যাগ। আমরা দেশে শান্তি চাই, অশান্তি চাই না। আমাদের দাবি এক- সরকারের পতন। রাজপথেই এর ফয়সালা হবে। এ সরকারকে পরাজিত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তাই শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে। তিনি বলেন, সংসদ ভেঙে দিয়ে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। শেখ হাসিনাকে সংসদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ ভেঙে দিতে হবে এবং নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।
গতকাল শনিবার (১৯ নভেম্বর) সিলেট সরকারি আলিয়া মাদরাসা মাঠে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল একথা বলেন। সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী ও মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মিফতাহ সিদ্দিকী,কাউন্সিলর রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, ফরহাদ চৌধুরী শামীম এর পরিচালনায় শুরু হওয়া সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মহানগর মহিলা দলের সভাপতি রোকসানা বেগম শাহনাজ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেবেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, এ জেড এম জাহিদ হোসেন,বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুকতাদির,বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈযদ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বিএনপির কেন্দ্রিয় নেতা সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী,ফজলুর রহমান,বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনা,ড.এনামুল হক চৌধুরী,ব্যারিষ্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন,শাখাওয়াত হোসেন জীবন,মৌলভী বাজার জেলা বিএনপির সভাপতিও বিএনপির কেন্দ্রিয সদস্য এম নাছের রহমান,হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি জি,কে গৌছ,সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি বিএনপির কেন্দ্রিয়সহ সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক এমপি কলিম উদ্দিন আহমেদ মিলন,হেলেন জেরিন খান,আব্দুর রাজ্জাক শাম্মি আক্তার,মিজানুর রহমান চৌধুরী,আব্দুর কাইয়ুম জালালি পংকি,আবুল কাহের চৌধুরী শামীম প্রমুখ। গতকাল শনিবার দুপুর ২টায় সিলেট আলিয়া মাদ্রাসার মাঠে সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বেলা সাড়ে ১১টায় কোরআন তিলাওয়াত ও মোনাজাতের মধ্য দিয়ে সমাবেশ শুরু হয়েছে। কোরআন তেলাওয়াত করেন সিলেটে জেলা ওলামা দলের সভাপতি নুরুল হক। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সিলেট বাসি ভোট ও ভাতের অধিকার আদায়ে এক নতুন যুদ্ধ শুরু করেছেন। হযরত শাহজালাল ও শাহপরানসহ ৩৬০ আউলিয়ার পূণ্যভূমি সিলেট শান্তি সাম্যের পথ দেখিয়েছে । সিলেট থেকে মহান স্বাধীনতা যুদ্বের নেতৃত্ব দিয়েছেন এম এ জি ওসমানী। এই সিলেটের দামান্দ আমাদের নেতা তারেক রহমান বিএনপির নেতৃত্বে দিচ্ছেন। আওয়ামী লীগ সব অর্জনকে ধ্বংস করে দিয়েছে,তাকে পরাজিত করে জনগনের সরকার প্রতিষ্টা করতে হবে। জনগনের সরকার প্রতিষ্টায় এই সংসদকে বিলুপ্ত করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করে তত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্টা করতে হবে। দেশে ৩৫ লাখ লোকের বিরুদ্ধে মিথ্যা গায়েবি মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।ইলিয়াস আলীসহ ঘুমের স্বীকার সকল নেতৃবৃন্ধকে ফিরিয়ে দিতে হবে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে আর হবে না। গতকাল শনিবার সিলেটের আলীয়া মাদ্রাসা মাঠে বিএনপির বিভাগীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই ভোট চুরি করে জনগনের অধিকার হরণ করে। এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন আর নয়। এই সরকারকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে; পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে হবে। এরপর নতুন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হবে, আর তাদের অধীনেই নির্বাচন হবে। আমরা দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলাম; যা আওয়ামী লীগ ধ্বংস করে এক দলীয় শাসন কায়েম করেছে।তিনি দাবি করেন,আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে, আবার নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধেই মামলা দিচ্ছে। সরকার উন্নয়নের কথা বলে বাহাদুরি দেখায়, দেশের ৪২ শতাংশ মানুষ চরম দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাস করছে।এ সরকারের কাছে কেউ নিরাপদ নয়। কুইক রেন্টাল বিদ্যুতের নামে আওয়ামী লীগ হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছে। বিএনপির এ আন্দোলন জাতি ও দেশের প্রয়োজনে সমগ্র জাতিকে রক্ষা করার জন্য। এ সমাবেশকে কে কেন্দ্র করে আমাদের সকল নেতাকে দ্রুত গ্রেফতার করা হচ্ছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন,দেশ এখন যেখানে এসে দাঁড়িয়েছে- তা আমরা চাই না। কোথায় গেল আপনার উৎপাদিত বিদ্যুৎ। দুর্নীতির মাধ্যমে হাজার কোটি টাকা আয় করেছেন। এমন কোনো জায়গা নাই যেখান থেকে আওয়ামী লীগ টাকা লুট বা চুরি করে না’। প্রতি দিন চিনির দাম, তেলের দাম বেড়েছে। মানুষ এখন খেতে পারে না। তিন কোটি মানুষ বেকার। অথচ তারা ১০টাকা দামে চাল খাওয়াবে বলেছিলো।‘গত ১৪ বছরে এই সরকার বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করেছে। এই সরকারের বিচার হবে জনগনের আদালতে। মানুষের সব অধিকার কেড়ে নেয়ার অপরাধে এই বিচার হবে। আপনারা একটি যুদ্ধ শুরু করেছেন। এই যুদ্ধ মুক্তির যুদ্ধ, অধিকার ফিরে পাওয়ার যুদ্ধ, ভোটের অধিকার ফিরে পাওয়ার যুদ্ধ। সিলেটের ইতিহাস হচ্ছে যুদ্ধের ইতিহাস, যুদ্ধ জয়ের ইতিহাস। আজকে এই সৈরচারী আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে এবং গণতন্ত্র ফেরাতে এই সিলেট থেকেই আবার যুদ্ধ শুরু হলো।’ফখরুল বলেন, ‘সরকার এখন মামলা খেলা করছে। কোনো কিছুই ঘটে নাই। তবু তারা নাশকতার কথা বলে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা করে। আবার হুমকি দেয়, হেফাজতের মতো অবস্থা হবে।’ তিনি বলেন,‘আমি বলতে চাই, হুমকি ধামকিতে কাজ হবে না। জনগণ আজ জেগে উঠেছে। জনগণ বিজয় ছাড়া ঘরে ফিরে যাবে না।‘প্রধানমন্ত্রী কেবল সংবিধানের দোহাই দেন। এই সংবিধান তো তিনি সংশোধন করিয়েছেন। এই সংবিধান আমরা মানি না। আর যদি একটি মিথ্যে মামলা দেয়া হয় তবে জনগন তা প্রতিহত করবে।’ ফখরুল বলেন, ‘আমরা দেশে শান্তি চাই। অশান্তি চাই না। আমাদের দাবি এক- সরকারের পতন চাই। রাজপথেই এর ফয়সালা হবে। এই দানবীয় সরকারকে পরাজিত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তাই অভিলম্বে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে। মধ্যবর্তী সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। ‘সকল দলকে আমরা আহ্বান জানাই, আসুন আমরা একাত্তরের মতো এক হই। এই দানবীয় সরকারকে সবাই মিলে পরাজিত করি।’ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির ও নেতা-কর্মীদের হত্যার প্রতিবাদ, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবি এ গণসমাবেশ থেকে। মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা নতুন যুদ্ধে নেমেছেন। এ যুদ্ধ মুক্তির যুদ্ধ। এ যুদ্ধ নিজের অধিকার ফিরিয়ে আনার যুদ্ধ। এ যুদ্ধ নিজের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার যুদ্ধ। শাহজালাল (রহ.) যেভাবে যুদ্ধ করে সিলেটে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছিলেন আপনাদের সিলেট থেকেই নতুন যুদ্ধ শুরু হলো। এ যুদ্ধ শেখ হাসিনা সরকারকে হটিয়ে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার যুদ্ধ। তিনি বলেন, এ যুদ্ধ সব রাজনৈতিক দলের সমান অধিকার নিশ্চিত করার যুদ্ধ। মুক্ত চিন্তার বিকাশের যুদ্ধ। সবাই নিজের বাকস্বাধীনতা নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস নিশ্চিতের যুদ্ধ। এ যুদ্ধে আমাদের জিততে হবে। মির্জা ফখরুল বলেন, খেটে খাওয়া মানুষ, কৃষক-শ্রমিক এখন শান্তিতে নেই। গতকালও চিনির দাম, তেলের দাম বেড়েছে। সবকিছুর দাম বেড়েছে। মানুষ এখন খেতে পারে না। তিন কোটি মানুষ বেকার। অথচ তারা ১০ টাকা দামে চাল খাওয়াবে বলেছিল। আওয়ামী লীগ সরকার মিথ্যাবাদী সরকার। ফখরুল বলেন, সরকার এখন মামলা খেলা করছে। কোনো কিছুই ঘটেনি। তবু তারা নাশকতার কথা বলে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা করে। আবার হুমকি দেয়, হেফাজতের মতো অবস্থা হবে। খেলাফত-জমিয়তের মতো অবস্থা হবে। আমি বলতে চাই হুমকি-ধমকিতে কাজ হবে না। জনগণ আজ জেগে উঠেছে। জনগণ বিজয় ছাড়া ঘরে ফিরে যাবে না।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com