বাউফলে একটি সরকারি প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষকদের ক্লাস ফাঁকির অভিযোগ পাওয়া গেছে।স্কুল চলাকালীন সময় শিক্ষকদের কাউকে পাওয়া যায়নি।ছাত্রছাত্রীরা উপস্থিত থাকলেও তাদের দেখা গেছে আশে-পাশের বাড়িতে খেলতে। নিয়ম অনুযায়ী ১১টার ৫০ মিনিট থেকে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির পাঠদান শুরু করার কথা থাকলেও সাড়ে ১২টায়ও কোন শিক্ষকদের ক্লাশরুমে দেখা যায়নি।। সরেজমিন ঘুরে এমনই চিত্র দেখাগেছে বুধবার (৩০ নভেম্বর) পটুয়াখালীর বাউফলের দক্ষিণ ভরিপাশা মুন্সী হাসান আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে । বিদ্যালয়ের মাঠে কথা হয় পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. ফরাদ, তানজিলা ও মরিয়মসহ কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে। শিক্ষকেরা কোথায় জানতে চাইলে তাঁরা বলেন,‘ হেড স্যার সকালে আসছিলেন, পরে চলে গেছে। ম্যাডামেরাও বাড়িতে গেছেন।’ এদিকে বিদ্যালয়ে সাংবাদিকের উপস্থিতি টের পেয়ে বিদ্যালয়ে ছুটে আসেন সহকারী শিক্ষক মোসা. জেবুন্নেছা। তড়িঘড়ি করে বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় তলায় চলে যান। ঘন্টা বাজিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে আসার সংকেত দেন। বিদ্যালয় চলাকালীন সময় কোথায় ছিলেন জানতে চাইলে তিনি কোনো সদত্তোর দেননি। অন্য শিক্ষকেরা কোথায় জানতে চাইলে বলেন,‘হেড স্যার অফিসিয়াল কাজে শিক্ষা অফিসে গেছেন। একজন শিক্ষক ছুটি রয়েছেন অপরজন নিচে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৭৯জন শিক্ষার্থীদের বিপরীতে ৮জন শিক্ষক রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে সাজেদা খানম নামের এক শিক্ষক ছুটিতে রয়েছে। প্রধান শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমান বিদ্যালয়ের বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকেন। জেবুন্নেছা ও রমিজা আক্তার নামের দুই সহকারী পাঠদান করেন। অভিযোগ উঠেছে, বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা তাঁদের ইচ্ছেমত যাওয়া- আসা করেন। প্রধান শিক্ষকও নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকনে না। অফিসিয়াল কাজের দোহাই দিয়ে তাঁর ব্যক্তিগতে কাজে ব্যস্ত থাকনে। সহকারী শিক্ষক মোসা. জেবুন্নেছা বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. মঞ্জুরুল ইসলাম তৈয়বের বোন। বিদ্যালয় চলাকালীন সময় তাঁর ভাইয়ের বাড়িতে গিয়ে সময় কাটান। বিদ্যালয়ে ঠিকমতো হয় না পাঠদান।এতে শিশুদের শিক্ষা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন অভিভাবকেরা। এবিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমান বলেন,‘ ক্লাস বাদ দিয়ে কেনো তাঁরা বাড়িতে গেছেন তা আমি জানি না। আমি থাকাকালীন এমন হয় না। একপ্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,‘ আমি কারন ছাড়া স্কুল বাদ দেই না।’ বিষয়টি ওই বিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার সুজন হালদারের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন,‘ আপনার মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ অভিভাবক এবং সচেতন মহল মনে করেন, এমন পরিস্থতির কারণে প্রাথমিক শিক্ষায় প্রভাব পড়ছে।শিক্ষকরা যদি তাদের দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন না করে থাকেন তখন ওই স্কুলের অবস্থা কি হয় তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।