সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ০৭:১১ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
পুঁইশাক চাষে সফল সুফিয়া, আগ্রহী হচ্ছে অন্য কৃষকরাও অতিরিক্ত টোল আদায় করলেই ইজারা বাতিল-ভোলায় উপদেষ্টা সাখাওয়াত কৃতি ফিরোজীকে বাঁচাতে সাভারে চ্যারিটি কনসার্ট আওয়ামী লীগের সাথে দ্বন্দ্ব নাই, যারা অন্যায় করেছে তাদের বিচার চাই-আব্দুল আউয়াল মিন্টু জলঢাকায় গণঅধিকার পরিষদের গণসমাবেশ সোনারগাঁওয়ে মাসব্যাপি লোককারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব শুরু শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানে ৮৯তম জন্মদিন উপলক্ষে আগৈলঝাড়া বিএনপি’র উদ্যোগে আনন্দ র‌্যালি পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্ষতিগ্রস্তুদের অবস্থান কর্মসূচি জামালপুর পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড বিএনপির আয়োজনে দুস্থদের মাঝে কম্বল বিতরণ ভুট্টা চাষে দেশের শীর্ষে চুয়াডাঙ্গা: ৫৯,৬৫৬ হেক্টর জমিতে আবাদ

বিজয়ের মাস ডিসেম্বর

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২২

আজ ৮ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের এই দিনে যুদ্ধ পরিস্থিতি পুরোটাই পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর প্রতিকূলে চলে যায়। সকল দিক থেকে মিত্র ও মুক্তিবাহিনী এগিয়ে আসতে থাকে। তাদের লক্ষ্য রাজধানী ঢাকা। বিভিন্ন স্থানে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে পাকিস্তানী সৈন্যরা। কোন কোন দল চেষ্টা করছিল ঢাকার দিকে ফেরার। কোথাও তারা পরাজিত বা নিরুপায় হয়ে আত্মসমর্পণ করে। এ অবস্থায় আজকের দিনে আকাশবাণী থেকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের পাকিস্তানি বাহিনীর উদ্দেশে আত্মসমর্পণ করার আহ্বান প্রচার শুরু হয়। ঢাকায় ভারতীয় জঙ্গী বিমানের হামলা তীব্রতর করার পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে বিমান থেকে আত্মসমর্পণের আহ্বান সম্বলিত লিফেলেট ছড়িয়ে দেয়া হয়। এ অবস্থার প্রেক্ষিতে ঢাকার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
পাকিস্তানের নয়া প্রধানমন্ত্রী নুরুল আমিন এদিন বার্তা সংস্থার সাথে তার প্রথম সাক্ষাৎকারে বলেন, পাকিস্তান ধৈর্য ও পরিকল্পনা নিয়ে শত্রুর উপর চরম আঘাত হানবে। বেসামরিক প্রতিরক্ষা জোরদার করার লক্ষ্যে এদিন ঢাকায় একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করা হয়। প্রতিরক্ষা তহবিলে উদারহস্তে দান করার জন্য প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের আবেদন রেডিও-টিভিতে প্রচার করা হতে থাকে।
এদিন সন্ধ্যায় সর্বশেষ সামরিক ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির আলোকে ভারতের সরকারি মুখপাত্র ঘোষণা করেন, “পাকিস্তান যদি পূর্ব বাংলায় তাদের পরাজয় স্বীকার করে নেয়, তবে অন্যান্য সকল অ লেই ভারত যুদ্ধ বন্ধ করবে; বাংলাদেশ ও পশ্চিম পাকিস্তানের কোনো অ লেই কোনো ভূখন্ড দখল করার অভিপ্রায় ভারতের নেই।”
বাংলা একাডেমি প্রকাশিত কবি আসাদ চৌধুরী তার ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ’ গ্রন্থে একাত্তরের এ দিনের ঘটনাপ্রবাহ বর্ণনা করেন এভাবে- “ভারতের চিফ অব আর্মি স্টাফ জেনারেল এসএইচএফ মানেক্শ’ পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর অবস্থা লক্ষ্য করে মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধের পরিকল্পনা গ্রহণ করলেন। তার ভাষণ বেতারে ঘন ঘন প্রচারিত হতে থাকে। তার বাণী প্রচারপত্রের মাধ্যমে বিমানের সহায়তায় পাকিস্তানী অবস্থানের ওপর বিলি করা হয়।’ মানেক্শ বলেন, ‘অস্ত্র সংরক্ষণ করো, নইলে মৃত্যু অবধারিত। যৌথবাহিনী তোমাদের চারদিকে ঘিরে ফেলেছে। তোমাদের বিমানবাহিনী সম্পূর্ণ ধ্বংস, ও দিয়ে আর কোনো সাহায্য পাবে না। বন্দরগুলোও এখন অবরুদ্ধ, তাই বাইরে থেকেও কোনো সাহায্য পাওয়ার আশা বৃথা। মুক্তিবাহিনী এবং জনগণ এখন প্রতিশোধ নিতে উদ্যত। তোমাদের ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে গেছে। … সময় থাকতে অস্ত্র সংবরণ করলে তোমাদের সৈনিকদের যোগ্য মর্যাদা দেয়া হবে।’ পূর্ব সীমান্তে জেনারেল সগত সিং এর সব কয়টি ডিভিশনই তখন পশ্চিমে এগোচ্ছিলো। একটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া দখল করে আশুগঞ্জের দিকে এগোয়।”
আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র, পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধে নিজেদের জড়িত না করার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এদিন ওয়াশিংটনে তৎকালীন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নিক্সন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিসিঞ্জারের মধ্যকার আলোচনায় মার্কিন সপ্তম নৌবহরকে বঙ্গোপসাগরে প্রেরণ নিয়ে প্রথম আলোচনা হয়। পাকিস্তান সরকারের বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে জুলফিকার আলী ভুট্টো জাতিসংঘে পাকিস্তানের পক্ষে কথা বলার জন্য নিউইয়র্ক রওনা হন এদিন। মার্কিন সিনেটর কেনেডি সব পরিস্থিতির জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেন।
এদিন মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী যৌথভাবে পাক সেনাদের প্রতিহত করে কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া মুক্ত করে। ‘পূর্ব পাকিস্তান’ রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত পাক সেনাবাহিনীর পূর্বা লীয় কমান্ডের জিওসি লেফট্যানেন্ট জেনারেল একে নিয়াজীর সাথে পরামর্শের ভিত্তিতে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গবর্নর ডা. এম এ মালিক বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে স্বীকার করে বার্তা পাঠিয়েছিলেন। তার জবাব এসেছিল ৮ ডিসেম্বর। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান এক টেলেক্স বার্তায় যুদ্ধ অব্যাহত রাখার জন্য গবর্নরকে নির্দেশ দেন। এরপর কুমিল্লার ময়নামতি সেনানিবাসে পাকসেনারা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। পাকবাহিনীর দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিভিশন অকেজো হয়ে পড়ে। দেশের দক্ষিণে খুলনাতেও আটকে পড়ে পাকসেনারা। উত্তরে ব্রহ্মপুত্র ও পদ্মার মধ্যবর্তী বেশ কয়েকটি এলাকায় তারা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। জামালপুর, ময়মনসিংহ এবং চট্টগ্রামেও পাকসেনারা শোচনীয় পরাজয়বরণ করে। ( গ্রন্থনা: ইবরাহীম খলিল )




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com