শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:০৩ পূর্বাহ্ন

বিজয়ের মাস ডিসেম্বর

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় রবিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২২

আজ ১২ ডিসেম্বর। একাত্তরের এই দিনে মুক্তিবাহিনী পাবনার ডেমরা এলাকা পাকিস্তানী বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত করেছিল। রংপুর ও সৈয়দপুরের দু’টো ক্যান্টনমেন্ট ছাড়া বৃহত্তর রংপুর অ ল মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। ফরিদপুরের ভাটিয়াপাড়া ও সিলেটের হরিপুরে মুক্তিযোদ্ধারা শত্রু সেনাদের ওপর চূড়ান্ত হামলা চালায়। এদিন বাংলাদেশের দক্ষিণে গভীর সমুদ্রে এসে থেমে ছিল মার্কিন সপ্তম নৌবহর। এদিন ভারতীয় সৈন্যদের সাথে নিয়ে ঢাকার দিকে এগিয়ে আসেন মুক্তিযোদ্ধারা।
কবি আসাদ চৌধুরীর ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ’ শীর্ষক গ্রন্থে এ দিনের ঘটনা তুলে ধরে বলা হয়, বিদেশীদের নিয়ে তিনটি বিমান ঢাকা থেকে কলকাতা যায়। ছত্রীসেনা টাঙ্গাইলে নেমেছে। এদের কাছেই আত্মসমর্পণ করলো পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। ছোট্ট বিমান বন্দরটি দখল করতে না করতেই ক্যারিব বিমানের অবতরণ শুরু হলো। এলো আরো সৈন্য আর অস্ত্র। ৫৭ ডিভিশন ভৈরব পেরিয়েছে আগের দিন। এবার নরসিংদী হয়ে ঢাকার দিকে। সেদিন ঢাকায় ভারতীয় কামানের গর্জন শোনা গেলো। মানেকশ’র আবেদন বেতারে বার বার প্রচারিত হচ্ছে- ‘বাঁচতে চাইলে আত্মসমর্পণ করো। আত্মসমর্পণ করলে সব পাকসেনা জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী মর্যাদা পাবে।
এদিন লন্ডনের সান্ডে টাইমস পত্রিকায় তৎকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়। সাংবাদিক নিকোলাস ক্যারল-এর নেয়া ঐ সাক্ষাৎকারে ইন্দিরা গান্ধী বলেন, আমি সংসদে এবং জনসভায় অনেকবার পরিষ্কারভাবে বলেছি, আমাদের কারো কোনো ভোগ- দখল করার ইচ্ছা নেই। পাকিস্তান যে সকল অ ল জোর করে দখল করে রেখেছে, তুমি নিশ্চয়ই জানো, তা ভারতেরই অংশ সে অ লগুলোর ওপরও একই নিয়ম বর্তাবে। ….বাংলাদেশে, তাদের নেতা শেখ মুজিবকে বিশেষভাবে প্রয়োজন। ভারত কি করছে জানো, তাকে মুক্ত করার চেষ্টা করছে।
বিজয়ের মাসের এদিন টাঙ্গাইলের অব্যবহৃত বিমানবন্দর ব্যবহার করে নামানো হয় ভারতীয় সেনা। ঢাকায় চারদিক ঘিরে মুক্তিযোদ্ধারা, মুক্তিসেনারা ঢাকা দখলের জন্য অবস্থান নেয়। বিমান থেকে অবতরণ করা ছত্রীসেনারা নাগরার বাহিনীর সাথে মিলিত হয়। মুক্তি ও মিত্রবাহিনীর সঙ্গে হানাদারদের প্রচ- যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে পাকিস্তান সেনাদের হাতে ১৫ জন ভারতীয় সৈন্য এবং ৭ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হয়। এ সময় মুক্তি ও মিত্রবাহিনীর হাতে এক মেজরসহ শত্রুবাহিনীর ১৯ জন ধরা পড়ে। এদিন ফেনী থেকে চট্টগ্রাম যাবার পথে কুমীরা শত্রু ঘাঁটি থেকে মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্রবাহিনীর ওপর আক্রমণ করে। মুক্তিযোদ্ধাদের আগমনের খবর পেয়ে বগুড়া শহরের এতিমখানা থেকে এলোপাতাড়ি গোলাবর্ষণ করে। বেশ কিছু নিরীহ মানুষ প্রাণ হারায় এই বেপরোয়া গুলীবর্ষণে। এদিন নীলফামারীও মুক্ত হয়।
এদিকে নবনিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী নূরুল আমিন এদিন অত্যন্ত কঠোর ভাষায় ভারতকে পাকিস্তান ছেড়ে যেতে বলেন। তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপ করতে গিয়ে বলেন, পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ মাতৃভূমি রক্ষায় শেষ পর্যন্ত লড়ে যেতে সংকল্পবদ্ধ। তিনি ঘোষণা করেন, কোনো শক্তি নেই পাকিস্তানকে ধ্বংস করতে পারে। (গ্রন্থনা: ইবরাহীম খলিল )




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com