ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, চীনের সঙ্গে বিরোধপূর্ণ একটি সীমান্ত এলাকায় তাঁর দেশ নজিরবিহীন মাত্রায় সেনা মোতায়েন বাড়িয়েছে। গতকাল সোমবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে আয়োজিত অনুষ্ঠানে করা প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেছেন। খবর বিবিসির।
অরুণাচল প্রদেশ সীমান্তসংলগ্ন বিরোধপূর্ণ এলাকায় দুই দেশের সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষের কয়েক দিনের মাথায় তিনি এ মন্তব্য করলেন। ভারত ও চীনের মধ্যে ৩ হাজার ৪৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ বিরোধপূর্ণ সীমান্ত রয়েছে। একে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি) নামে অভিহিত করা হয়। এ সীমান্ত এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে ভারত ও চীনের সেনারা প্রায়ই মুখোমুখি হয়ে পড়েন। মাঝেমধ্যেই দুই পক্ষের মধ্যকার উত্তেজনা সংঘর্ষে রূপ নেয়। সবশেষ ৯ ডিসেম্বর দুই পক্ষের মধ্যে অরুণাচলের তাওয়াং সীমান্তে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে কয়েক সেনা হালকা আহত হয়েছেন।
ভারত বলছে, চীনা সেনাদের অনধিকারপ্রবেশের কারণে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, তাদের জানামতে, সীমান্ত পরিস্থিতি স্থিতিশীল আছে এবং দুই পক্ষ এ ইস্যুতে আলোচনা করছে।
গত সোমবার জয়শঙ্কর বলেন, ‘আজ চীন সীমান্তে ভারতীয় সেনাদের এমন মোতায়েন হয়েছে, যা আগে কখনো হয়নি। চীনা আগ্রাসন মোকাবিলায় এমনটা করা হয়েছে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখাকে একতরফাভাবে পরিবর্তনের প্রচেষ্টা রুখে দিতে আজ ভারতীয় সেনাদের মোতায়েন করা হয়েছে।’
তবে জয়শঙ্করের এ বক্তব্য নিয়ে চীন এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
সম্প্রতি ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধী অভিযোগ করেছেন, সরকার চীনের হুমকির ব্যাপারে উদাসীন। তিনি আরও অভিযোগ করেন, সীমান্তে চীনা সেনারা ভারতীয় সেনাদের পরাস্ত করছেন।
চীন সীমান্তে ভারতের অরুনাচল প্রদেশ রাজ্যের বুমলায় একটি সাইনবোর্ড। ছবিটি ২০০৯ সালে তোলা
এর প্রতিক্রিয়ায় সোমবার ভারতের পার্লামেন্টে দেওয়া এক বক্তব্যে জয়শঙ্কর বলেছেন, রাহুল গান্ধী তাঁর বক্তব্যের মধ্য দিয়ে ভারতীয় সেনাদের ‘অসম্মান’ করেছেন। পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের নির্বিকার থাকার অভিযোগও অস্বীকার করেছেন তিনি।
জয়শঙ্কর বলেন, ‘আমরা যদি চীনের ব্যাপারে নির্বিকার থাকতাম, তাহলে সীমান্তে ভারতীয় সেনা কে পাঠাল? আমরা যদি নির্বিকার হতামই, তাহলে কেন আমরা চীনকে উত্তেজনা নিরসনের জন্য চাপ দিচ্ছি?’