পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, দেশে ২২টি এয়ারপোর্ট পড়ে আছে, সেগুলো পর্যটনের জন্য সংস্কার প্রয়োজন। আমরা অর্থনৈতিক চাপে আছি, সেজন্য টাকা ধার করছি। ধার করা কোনো পাপ নয়। এছাড়া যারাই ক্ষমতায় আসুক, তারা যেন আত্মবিলাসী প্রকল্প হাতে না নেয়। গতকাল বুধবার (২১ ডিসেম্বর) বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে ‘ট্যুরিজম: এ প্যানাল্টি শুট ফর দ্য ইকোনমি অব বাংলাদেশ পোস্ট কোভিড ট্যুরিজম: কি টুলস টু এচিভ দ্য এসডিজিস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের এসডিএফের চেয়ারপারসন সাবেক সিনিয়র সচিব আব্দুস সামাদের সভাপতিত্বে ও স ালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন- বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, সচিব মোকাম্মেল হোসেন, বাংলাদেশ ট্যুরিজম পুলিশের ডিআইজি মো. ইলিয়াস শরিফ, এভিয়েশন অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের মহাসচিব মফিজুর রহমান, ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি শিবলুল আজম কোরেশি।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, পরিকল্পনার একটি বৈপরীত্য আছে। এখন মুক্তবাজার অর্থনীতিতে চলছে বিশ্ব। আমাদের রাষ্ট্রীয় সম্পদ বেশি নয়। অনেক সময় ধার-কর্জ করতে হয়। পর্যটনে হোটেল-মোটেলে ব্যক্তিখাতেই এগিয়ে আসতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে ব্যক্তিরা বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন এসব সমাধান করা দরকার। অভ্যন্তরীণ পর্যটন স্থানে সাধারণ কাজ যেমন- টয়লেট, বসার স্থান, পানি পান, কাপড় বদলানো ও শিশুদের দুধ খাওয়ানোর জায়গা তৈরি করেন।
তিনি বলেন, বর্তমানে অর্থনৈতিক চাপ যাচ্ছে। পার হতে আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। যতটুকু ক্ষতি হওয়ার কথা ছিল, তা হয়নি। ঋণের টাকা কোথায় কাজে লাগাচ্ছে, সেটি দেখতে হবে। ঋণের টাকায় কফি খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লে হবে না। প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেন, পর্যটনে প্রণোদনা দিতে হবে। আমাদের অনেক অপরিকল্পিত কাজ হয়েছে। এসবের কোনো অর্থ নেই। পর্যটনে উদার হতে হবে। অর্থাৎ যাদের যা দরকার তা দিতে হবে। আব্দুস সামাদ বলেন, বিশ্বে পর্যটনের আয়ের ক্ষেত্রে এশিয়ার মধ্যে চীন, থাইল্যান্ড এগিয়ে। প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের কারণে অনেক দেশ লাভবান ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এনার্জি ক্রাইসিসের কারণে ইউরোপীয়দের আগমনকে প্রাধান্য দেওয়া দরকার। শ্রীলঙ্কা বিভিন্ন প্যাকেজ সুবিধা দিয়ে গত মাসে একশ কোটি ডলার আয় করেছে।
বেসামরিক বিমান ও পর্যটন সচিব মোকাম্মেল হোসেন বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নে ২০১৭ সালে বিশ্বে অনেক দেশের মধ্যে এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ। বর্তমানে দেশকে পরিকল্পিত পর্যটন স্থানে পরিণত করতে কাজ করা হচ্ছে। আমাদের জিডিপিতে পর্যটনের অবদান তিন থেকে চার শতাংশ অথচ বিশ্বে ১০ শতাংশ। ব্লু-ইকোনমিতে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে সব প্রকার সহযোগিতা করা হবে।
বাংলাদেশ ট্যুরিজম পুলিশের ডিআইজি মো. ইলিয়াস শরিফ বলেন, ট্যুরিস্ট পুলিশ ২০১৩ সাল থেকে পর্যটকদের জান-মালের নিরাপত্তা দিতে কাজ করছে। আমরা কাঙ্ক্ষিত অর্থনীতি অর্জনে প্রচেষ্টা চালাচ্ছি।
শিবলি আজম কোরেশি বলেন, উন্নয়নের সঙ্গে বিনিয়োগের সম্পর্ক রয়েছে। পর্যটন সম্পদগুলো সচেতনভাবে ব্যবহার করতে হবে। যেন পরবর্তীসময়ে প্রজন্ম ব্যবহার করতে পারে। পর্যটনের ক্ষতি একশ ভাগ পূরণ করা সম্ভব। আবু সুফিয়ান বলেন, পর্যটন ১০৯টি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। ১১৩টি উপখাত এটিতে জড়িত। বাংলাদেশের পর্যটন ১১টি এসডিজির সঙ্গে যুক্ত। দেশে দুই হাজার ৩৪৬টি পর্যটন স্থান আছে, এর মধ্যে ১৬টি সমুদ্র সৈকত। ১০টির অবস্থা বিশ্বে ভিন্ন যা অন্য কোথাও নেই। দেশের চার কোটি যুবক আছে আর ২০৩৩ সালে ৩৫ লাখ কাজ সৃষ্টি হবে পর্যটনে। ২০১৯ সালে প্যারিসে নয় কোটি পর্যটক গেছে।তিনি বলেন, দেশে এক লাখ নয় হাজার কোটিপতি আছে। ২০২১ সালে তিন কোটির ওপরে ডোমেস্টিক ট্যুরিস্ট গেছে। ২৯ লাখ মানুষ ভারতে যায়। শ্রীলঙ্কায় বছরে ২২ লাখ রাশিয়ানরা আসে। দেশের ২২টি এয়ারপোর্টের মধ্যে ১৫টি ব্যবহৃত হয় না। এসব এয়ারপোর্টকে ব্যবহার করা যায়। গত ৫০ বছরে বাংলাদেশে ২০ বছরে ১০ জন মন্ত্রী ও ১৮ জন সচিব বদল হয়েছে। তারা কীভাবে কাজ করবে?