কাতারে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল বিশ্বকাপ ফুটবল ২০২২। খেলার সময় ফুটবলাররা বারবার মাঠে থুতু ফেলছেন, এ দৃশ্য কমবেশি সবাই দেখেছেন! এবারের বিশ্বকাপজয়ী ফুটবল দলের অধিনায়ক লিওনেল মেসিও খেলার সময় বারবার থুতু ফেলেন। এই দৃশ্য কমবেশি সবাই দেখেছেন! তবে এর কারণ কী?
অনেকেই ধারণা করেন এটি বোধ হয় তাদের বদঅভ্যাস! আসলে কিন্তু তা নয়, এর পেছনে কিছু বৈজ্ঞানিক যুক্তি ও ব্যাখ্যা আছে। এ বিষয়ে ভারতের ফরিদাবাদের এশিয়ান হসপিটালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. উদিত কাপুরের মতে, ফুটবল ম্যাচের সময় শারীরিকভাবে কঠোর কসরত করেন ফুটবলাররা। এ সময় মুখের লালা ঘন হয়ে যায়, ফলে খেলোয়াড়রা বারবার থুতু ফেলেন।
বিশেষ করে ‘এমইউসি৫বি’ নামক এক ধরনের মিউকাস আছে, যা লালাকে ঘন করে। এ পর্যায়ে লালা গিলে ফেলা কঠিন। তাই থুতু ফেলে দেওয়াই ভালো, বলে জানান ডা. কাপুর। শুধু ফুটবলার নন, ক্রিকেটার, টেনিস ও বাস্কেটবল খেলোয়াড়রা লালা ঘন হয়ে যাওয়ার কারণেই বারবার মাটিতে থুতু ফেলেন। এই বিশেষজ্ঞের মতে, কোনো ব্যায়াম বা শারীরিক কার্যকলাপের সঙ্গে সঙ্গেই ঘন হয়ে যায়। লালায় এ ধরনের মোট প্রোটিন অ্যামাইলেজ, লাইসোজাইম, ল্যাক্টোফেরিন, ক্রোমোগ্রানিন এ বা এমইউসি৫বি হতে পারে, যা স্বায়ত্তশাসিত স্নায়ুতন্ত্র ও ইমিউন সিস্টেম দ্বারা মধ্যস্থতা করে। তিনি আরও জানান, এর আরেকটি কারণ হতে পারে ডিহাইড্রেশন। যা মুখের শ্বাস-প্রশ্বাসের কারণে হতে পারে। ডিহাইড্রেশন পানির বাষ্পীভবন ঘটায়।
সাধারণ ঘামও ডিহাইড্রেশনের কারণ হতে পারে। ফলে লালা ঘন হয়ে যায়। তাই বেশি থুথু ফেলার প্রবণতা বাড়ে। এ সময় অনেক খেলোয়াড়রা লালা গিলে ফেলতে পারলেও পরিমাণ খুব বেশি হলে তারা সাধারণত থুতু ফেলে দেয়। আরও এক কারণ হলো কার্ব রিন্সিং ড্রিংকস গ্রহণ। খেলার আগে মাঝে বা পরবর্তী সময়ে খেলোয়াররা একটি কার্ব পানীয় পান করেন। এর থেকেও থুতু ঘন হতে পারে। অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, এই ধরনের কার্ব রিন্সিং পানিতে চুমুক দিলে অ্যাথলেটিক কর্মক্ষমতা বাড়ে। তবে এটি পেট ফাঁপার মতো গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যার কারণ হতে পারে।
বিশেষজ্ঞের মতে, কার্ব রিন্সিং প্রধানত এমন ক্রিয়াকলাপের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ব্যবহৃত হয় যেগুলোর জন্য দৌড়ানোর প্রয়োজন হয়। এটি গ্রহণের পর মুখের নেট প্রোটিনের ঘনত্ব কমায়, আর এ কারণে লালা ঘন হয়ে যায়। তবে এর সঙ্গে শারীরিক কোনো অস্বস্তিরি সম্পর্ক নেই। সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস