কিছুটা নাটকীয়ভাবেই প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবাকে সরিয়ে নেপালের নতুন প্রধানমন্ত্রী হলেন সিপিএন (মাওবাদী) নেতা পুষ্পকুমল দহল প্রচন্ড। তিনি শপথ নেয়ার আগেই এই খবর দিল্লিতে পৌঁছোনো মাত্র সোমবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাকে ভারত-নেপাল সুদূর অতীতের ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংযোগের কথা মনে করিয়ে উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়েছেন। মোদি বলেছেন, ‘দ্বিপক্ষীয় মৈত্রীকে আরো পোক্ত করার জন্য তিনি প্রচন্ডের সাথে কাজ করতে উন্মুখ।’
বছরের শেষে কূটনৈতিক শিবির বলছে, প্রতিবেশী প্রশ্নে আসলে আরো একটি কাঁটা তৈরি হলো ভারতের পররাষ্ট্র দফতরে। এই নেপাল সরকারের ‘কিং মেকার’ কে পি শর্মা ওলি ভারতের জন্য যে বিপজ্জনক, তা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত। চীনকে নিয়ে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় যখন জেরবার ভারত, তখন নেপাল প্রশ্নে এই নতুন সরকার ভারতকে অদূর ভবিষ্যতে যথেষ্ট বেগ দিতে পারে। ভারতের চিন্তার কারণ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলির দলের সাথে চুক্তি হয়েছে প্রচন্ডের দলের। দুই দল থেকেই ভাগাভাগি করে হবেন প্রধানমন্ত্রী। প্রচন্ডের দাবি মেনে তাকে প্রথম দফায় প্রধানমন্ত্রী করার ক্ষেত্রে সায় দিয়েছেন ওলি। তাই এখন প্রচন্ডই হচ্ছেন নেপালের নতুন প্রধানমন্ত্রী। ২০২৫ সালে প্রধানমন্ত্রী হবেন ওলি।
নয়াদিল্লির আশঙ্কা, ওলি রাজনৈতিক ক্ষেত্রে যে ধরনের ধুরন্ধর নেতা, তাতে তিনি আগেই মসনদে বসতে পারেন। পূর্ব লাদাখে যখন চীন প্রচ- চাপে রেখেছিল ভারতকে, ওই ২০২০ সালের জুনেই ভারতের আপত্তি উড়িয়ে দেশের নতুন মানচিত্রে সিলমোহর লাগানোর উদ্দেশে সংবিধান সংশোধনের বিল পাশ করিয়েছিল ওলি সরকার। দিল্লির দাবি, ভারতের প্রায় ৪০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকাকে নতুন মানচিত্রে নিজেদের বলে দাবি করে নেপাল। স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টতে মুখ পোড়ে মোদি সরকারের। চীনের সাথে সুসম্পর্ক রক্ষা করে চলা ওলি বেইজিংয়ের নির্দেশেই এমনটা করছেন কি না, সেই প্রশ্ন উঠেছিল। নেপালের দুই বড় কমিউনিস্ট দলের এই নতুন জোট, চীনকে ভবিষ্যতে কৌশলগতভাবে সুবিধাজনক জায়গায় রাখতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা