কোনো অবস্থাতেই আশাহত হতে নেই। দ্বিধাবোধ, দ্বিধাগ্রস্ত, হতাশা, সমস্যা, দুঃস্বপ্ন আর দুঃসময়ের কঠিন সময়েও ভেঙে পড়া চলবে না। পবিত্র কোরআনের আয়াত ও রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিস এ বিষয়ে মানুষকে প্রচুর দিকনির্দেশনা দিয়েছে। বারবার বলা হচ্ছে, সবরের কথা, ভেঙে না পড়ার কথা। ইসলামের শিক্ষা হলোদুর্দিন পেরিয়ে সুদিনের হাতছানি আসবে, মনেপ্রাণে এটা বিশ্বাস করা। আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ না হওয়া। আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘আল্লাহর অনুমতি ছাড়া কোনো বিপদ আসে না। যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস করে, তিনি তার অন্তরকে সুপথ প্রদর্শন করেন। আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সম্যক অবগত।’ সুরা তাগাবুন : ১১ পবিত্র কোরআনের অন্যত্র আরও ইরশাদ হচ্ছে, ‘হে মুমিনরা! তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করো। নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে রয়েছেন।’ সুরা বাকারা : ১৫৩
হাদিসে হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘পরীক্ষা যত কঠিন হয়, পুরস্কারও তত বড় হয়। আল্লাহতায়ালা যখন কোনো জাতিকে ভালোবাসেন, তখন তিনি তাদের পরীক্ষা করেন। এতে যে ব্যক্তি সন্তুষ্ট থাকে, তার জন্য রয়েছে সন্তুষ্টি। আর যে ব্যক্তি অসন্তুষ্ট হয়, তার প্রতিও রয়েছে অসন্তুষ্টি।’ জামে তিরমিজি : ২৩৯৬ নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন, ‘মানুষের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন মুসিবতের শিকার হয়েছেন নবীরা, অতঃপর ক্রমানুসারে পরবর্তী ধাপের সৎব্যক্তিরা, ব্যক্তি পরীক্ষা বা কষ্টের সম্মুখীন হবে তার দ্বীনদারি অনুসারে; সুতরাং সে যদি তার দ্বীনের ব্যাপারে দৃঢ়তার সঙ্গে অটল থাকে, তাহলে তার বিপদ-আপদও কঠোর থেকে কঠোরতর হবে; আর যদি সে তার দ্বীনের ব্যাপারে আপসকামী হয়, তাহলে সে পরীক্ষা বা কষ্টের সম্মুখীন হবে তার দ্বীনদারি অনুসারে; সুতরাং বান্দা বালা-মুসিবতে আক্রান্ত হতেই থাকবে যতক্ষণ না তা তাকে জমিনের ওপরে গোনাহবিহীন অবস্থায় চলাফেরা করাতে পারবে।’ জামে তিরমিজি : ২৩৯৮
হাদিসে হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন, ‘যখন আল্লাহতায়ালা কোনো মুসলিম বান্দাকে তার শারীরিক দুঃখ-কষ্ট বা রোগ-ব্যাধির দ্বারা পরীক্ষা করেন, তখন আল্লাহ বলেন, তার সৎকাজগুলো লেখো, যে কাজগুলো সে (সুস্থ অবস্থায়) করত; অতঃপর তিনি যদি তাকে রোগমুক্ত করেন, তাহলে তিনি (রহমতের পানি দ্বারা) ধুয়ে-মুছে তাকে পবিত্র করে দেন; আর যদি তাকে মৃত্যুর মাধ্যমে উঠিয়ে নেন, তাহলে তিনি তাকে ক্ষমা করে দেন এবং তার প্রতি রহম করেন।’ আহমাদ : ৩/১৪৮