প্রায় চার মাস আগে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার ইউনিয়নের ছাতনী আশ্রয়ন প্রকল্প থেকে উচ্ছেদ হওয়া ক্যান্সারে আক্রান্ত নারী রোজিনা বেগমকে(৪০) তাঁর বসতঘর ফিরিয়ে দিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার টুকটুক তালুকদার। বসত বাড়িতে অনিয়মিত ভাবে বসবাসের অপরাধে তৎকালীন ইউএনও শ্রাবণী রায়ের নির্দেশে সান্তাহার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাহিদ সুলতানা তৃপ্তি আশ্রয়ন প্রকল্প থেকে রোজিনা বেগমসহ চারটি দরিদ্র পরিবারকে উচ্ছেদ করে দেন। রোজিনা বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার দমদমা গ্রামের শাহাদত হোসেনের স্ত্রী। এরপর থেকে রোজিনা গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় উপজেলার দমদমা গ্রামে অন্যের বাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন। অনুসন্ধানে জানা যায়, উচ্ছেদ ঘটনার পর রোজিনা বেগম তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শ্রাবণী রায়’সহ বিভিন্ন জন-প্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে থাকেন। কিন্তু কেউ রোজিনার আবেদনে সাড়া দেননি। দুই মাস আগে শ্রাবণী রায় নাটোরে বদলী হয়ে গেলে আদমদীঘি উপজেলায় টুকটুক তালুকদার ইউএনও হিসেবে যোগদান করেন। রোজিনার বাড়ি ফেরৎ দেয়ার আবেদন নিয়ে স্থানীয় গণমাধ্যেম কর্মিরা রোজিনাকে নিয়ে ইউএনও টুকটুক তালুকদারের সাথে সাক্ষাৎকার করেন এবং সার্বিক বিষয়টি তাঁকে জানান। বিষয়টি জানার পর গত মঙ্গলবার বিকেলে ইউএনও টুকটুক তালুকদার সরেজমিন অসুস্থ রোজিনাকে দেখতে উপজেলার দমদমা গ্রামে যান এবং রোজিনার সাথে কথা বলেন। এ সময় রোজিনা ইউএনওকে জানান, অসুস্থতার কারনে তিনি বিভিন্ন সময় হাসপাতালে অবস্থান করার কারনে তাকে সরকারিভাবে দেওয়া বাড়িতে নিয়মিত বসবাস করতে পারতেন না। তিনি বলেন, আমি হাসপাতালে থাকা অবস্থায় জানতে পারি গত১০ সেপ্টেম্বর বর্তমান সান্তাহার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাহিদ সুলতানা তৃপ্তির লোকজন নিয়ে আমার বাড়িসহ চারটি বাড়িতে তালা ভেঙে ঢুকে সমস্ত আসবাবপত্র বাড়ির বাইরে ফেলে দিয়েছে এবং আমার ঘরে তালা লাগিয়েছে। পরে তাঁর সাথে দেখা করলে চেয়ারম্যান আমাকে বলেন, তুমি বাড়িতে নিয়মিত থাকো না তাই ইউএনও স্যারের নির্দেশে বাড়িতে তালা দেওয়া হয়েছে। পরে তৎকালীন ইউএনও শ্রাবণী রায়ের সাথে দেখা করি তিনি আমাকে বলেন, চেয়ারম্যান সুপারিশ করলে তোমার বাড়ি ফিরে দেওয়া হবে। বিষয়টি নিয়ে সদ্য যোগদান করা উপজেলা নির্বাহী অফিসার টুকটুক তালুকদার বলেন, ঘটনাটি জানার পর আমি রোজিনার সাথে দেখা করেছি এবং তাঁর সকল কাগজপত্র যাচাই করে দেখেছি। মানবিক কারনে আমি দ্রুত রোজিনাকে তাঁর বাড়ি ফেরৎ দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে। অন্য তিনটি বাড়ির বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।