অন্যান্য দেশের তুলনায় বর্তমানে দেশে চিনির দাম বেশি। এ অবস্থায় রমজানকে সামনে রেখে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) আমদানি শুল্ক কমাতে চিঠি দেওয়া হবে। একই সঙ্গে বর্তমান অবস্থা বিবেচনায় ভোজ্যতেলের দাম বাড়বে না বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। গতকাল বুধবার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত টাস্কফোর্সের ৫ম সভা শেষে তিনি এ তথ্য জানান।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, চিনির দাম অন্যান্য দেশের তুলনায় একটু বেশি। এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা চিন্তা করছি একটা চিঠি পাঠাবো, যাতে করে যে ডিউটি (শুল্ক) আছে সেটা যেন রিকন্সিডার (পুনর্বিবেচনা) করা হয় রমজান মাসকে সামনে রেখে। সবমিলিয়ে এখন পেঁয়াজ, ছোলা- এগুলো ভালো (দাম সহনীয়) আছে। এসব পণ্যের দামও আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়েনি। ভোজ্যতেল সয়াবিন, পাম তেলের আন্তর্জাতিক বাজারে যে দাম বেড়েছে, তেমনটা নয়। ভালো অবস্থায় আছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে দাম আগামীতে বাড়বে না।
এক্ষেত্রে ডলারের বিপরীতে টাকার রেটের বিষয় স্থির থাকতে হবে বলেও জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, তবে যে প্রবৃত্তিটা আমরা দেখছি বিনিময়ের, সেটা ভালোর দিকেই আছে।
টিপু মুনশি আরও বলেন, আমরা সাতটি আইটেম নিয়ে কথা বলেছি। আজকে মূলত রমজান মাসকে সামনে রেখেই আলোচনা করেছি। তাতে করে দেখা যাচ্ছে যে, মোটামুটিভাবে যে অবস্থা আছে তাতে করে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। এলসি খোলার বিষয়ে কিছু সমস্যা আছে উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, সেটা নিয়ে আজকে আলোচনা হয়েছে। আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে কথা বলবো। সেটাও আশা করি ওভারকাম করতে পারবো। এলসি খোলার ক্ষেত্রে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করবে। এটা কীভাবে করা হবে- জানতে চাইলে বানিজ্যমন্ত্রী বলেন, যেমন আপনি যদি এলসি খুলতে করতে চান, কিন্তু আপনারটা খুলছে না- আপনি আমাদের জানালেন। আমাদের সচিব ওই এলসির ব্যাপারে অনুরোধ করবেন, আপনারটা যাতে খুলে দেওয়া হয়।
এসময় পাশে থাকা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, এটা একটা বিষয়। আরেকটা হচ্ছে অনেক সময় এলসিবিহীনও আমরা অনুমতি দিতে পারি। এলসিবিহীন আনা যায়। সেরকম পরিস্থিতি হলে আমরা অনুমতি দিয়ে দেবো, এলসি লাগবে না। এলসি ছাড়া কীভাবে (আমদানি) করা যাবে- জানতে চাইলে সিনিয়র সচিব বলেন, এটা যায়। ছোটখাটো খুব প্রয়োজনীয় হলে আমরা দিতে পারি। বাজারে পর্যাপ্ত পণ্যের সরবরাহ আছে। মূলত বাজার ব্যবস্থাপনায় সমস্যা। এ ব্যবস্থাপনায় এক ধরনের কালোবাজারি এবং অতিমুনাফা লাভের প্রত্যাশা আছে। এ বিষয়টি আজকের সভায় আলোচনা হয়েছে কি না? যদি হয়ে থাকে তাহলে সেটি কীভাবে? এ বিষয়ে একজন সাংবাদিক দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রী বলেন, আমরা আলোচনা করেছি। এ সমস্যাগুলো আছে বলেই সেটা নিয়েই প্রথম পর্যায়ে দাম নির্ধারণ করা। দ্বিতীয়ত হচ্ছে সেই দামটা বাজারে কার্যকর হচ্ছে কি না, তৃতীয়ত হলো কেউ উচ্চ লাভের আশায় মজুতদারি করেছে কি না। এসব আমরা মনিটরিং করছি। তিনি আরও বলেন, এ কথা ঠিক যখন একটু সংকট হয় তখন অনেক সময় বড় করে সেটাকে দেখিয়ে কেউ কেউ সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করে। আপনাদের মাধ্যমে বলতে চাই, যথেষ্ট পরিমাণ (মজুত) রয়েছে। সামনের দিকে এলসি খোলার যথেষ্ট চেষ্টা চলছে। রমজান মাসে সমস্যা হবে না বলেই আমরা মনে করছি।