বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের মাঠে সরিষার ক্ষেতগুলো ফুলে ফুলে ভরে উঠেছে। মাঠজুড়ে যত দূর চোখ যায়, তত দূর দেখা যায় হলদে রঙের সরিষা ফুল। বিশাল এ মাঠ দূর থেকে দেখতে মনে হয় বিশাল আকৃতির হলুদ চাদর বিছানো।সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, এলাকার এই মাঠজুড়ে এখন সরিষার আবাদ। হলদে রঙের সমারোহে চোখ জুড়িয়ে যায় মন জুড়ে আসে। মাঠের পর মাঠজুড়ে সরিষা ফুলের নয়নাভিরাম দৃশ্যে মন ভরে ওঠে। ফুলে ফুলে মধু আহরণে ভিড়ছে মৌমাছি। সরিষা চাষী শফিকুল ইসলাম জানান, ভালো ফলনের সম্ভাবনার দেখা দিচ্ছে। সবমিলিয়ে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।সাধারণত রবি মৌসুমে কার্তিকের মাঝামাঝি থেকে অগ্রহায়ণ মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত সরিষার বীজ বপনের সময়।শীতকালে ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি সরিষা ফুলে ফুলে ছেয়ে থাকে চারদিক। তবে কতেক এলাকায় অগ্রীম জাতের সরিষা আবাদ করা হয়েছে। এছাড়া যে জমিতে সরিষা আবাদের পর বোরো ধানের চাষ করা হবে সেসব জমিতে আগাম সরিষা চাষ করা হয় সেসব স্থানে এ মৌসুমে সরিষার আবাদ লক্ষ্য করা গেছে। আমন ধান ঘরে তোলার পরই কৃষকরা ওই জমিতে সরিষা চাষ করেন। ইতোমধ্যে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মাঠে সরিষার আবাদ নব্বই ভাগ শেষ হয়েছে কিছুদিন আগে। বিশেষ করে বালুয়া ও কুশারঘোপ মাঠ পুরোদমে সরিষার ফুল ফুটেছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা মাঠ ঘুরে সরিষা ক্ষেতে গিয়ে দেখা যায়, সরিষা মাঠে ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসছে বিভিন্ন বয়সের নারী,পুরুষ,শিশুসহ বিনোদনপ্রেমীরা। আবার কেউ বা এসেছেন পোঁচকরে ছবি তুলে ফেসবুকে বিভিন্ন স্ট্যাটাস দেয়ার জন্য।প্রকৃতিপ্রেমীদের ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়বে এসব ছবি। ছবি, ভিডিও ধারণের জন্য শিবগঞ্জ এলাকা থেকে আরজে তৌহিদ নামের এক ছাত্র এসেছে। তার সাথে কথা হলে সে বলল,আমি কিচক থেকে এসেছি শুধু মাত্র ছবি তুলতে ও ভিডিও ধারণ করতে। সত্যিই এখানে এসে মন ভরে গেছে। মনজুড়ানো দৃশ্য। চারদিকে শুধু হলুদ আর হলুদ রঙে ছেয়ে গেছে পুরো মাঠ। সাদ্দাম হোসেন নামের স্থানীয় এক যুবকের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, অনেক দূর-দূরান্ত থেকে অনেকেই আসে ছবি তুলতে ও মজা করতে। কুশারঘোপ এলাকার কয়েকজন সরিষাচাষী জানান, এবার আবহাওয়া খুবই ভালো থাকায় আগাম চাষ করায় জমিতে সরিষা গাছে ফুল এসেছে। প্রায় সব জমিতে পুরোপুরি ফুলে ফুলে ভরে গেছে। এ বছর সরিষা ক্ষেতে ভালো ফলন হবে বলে তারা আশাবাদী। এখন পর্যন্ত জমিতে কোনো সমস্যা দেখা যায়নি। বরং গাছগুলো সুন্দর আর স্বাস্থ্যবান হয়ে উঠেছে। সোনাতলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সোহরাব হোসেন জানান, ১৬৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ছিল।কিন্তু এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। তিনি আরো বলেন, এবার কৃষকদের আগাম চাষ করা সব জমিতে ফুল ফুটেছে। অবহাওয়া অনুকূল থাকায় এ বছরে এই উপজেলায় সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনাও রয়েছে।