তৃণমূল পর্যায়েও সৃজনশীল ও গঠনমূলক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কিশোর-কিশোরীদের অবস্থান দৃঢ় করাসহ নারীর প্রতি সমাজের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি দূর করে আত্মনির্ভরশীল ও দক্ষ মানবসম্পদে রূপান্তর করার প্রত্যয়ে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় স্থাপতি কিশোর-কিশোরী ক্লাব। জীবন গড়ার অনুপ্রেরণায় সমাজের বিভিন্ন স্তরে এবং তৃণমূলে কিশোর-কিশোরীরা জেন্ডার সমতায়ন, নারীনির্যাতন, বাল্যবিবাহ, মাদকমুক্ত সহ সামািজিক সচেতনতা রোধে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একটি বিশেষ প্রকল্প এটি। এ প্রকল্পে সমস্যার প্রতিকার ও প্রতিরোধে কিশোর-কিশোরীদের সচেতনতা বৃদ্ধি এবং নারীদের আয় বর্ধক কার্যক্রমের আওতায় আনার জন্যই প্রত্যন্ত অঞ্চলে কিশোর-কিশোরী ক্লাব স্থাপন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। আদমদীঘি উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় ৬ টিইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় মোট ৭টি কিশোর-কিশোরী ক্লাব রয়েছে। ২০২০ সাল হতে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর কতৃক একটি বিশেষ প্রকল্পের আওতায় শুরু হয় এসব কিশোর-কিশোরী ক্লাব। শুরুর কয়েক মাসের মধ্যেই মহামারী করোনার কারনে মাঝ পথে থেকে যায় এর কার্যক্রম। এরপর করোনা কিছুটা কমলে আবারও শুরুহয় কার্যক্রম। প্রতিটি কিশোর-কিশোরী ক্লাবে ২ জন প্রশিক্ষক, ১ জন সংগীত শিক্ষক, ১জন আবৃতি শিক্ষকনিয়োজিত রয়েছে। এছাড়ার উপজেলার ৭টি কিশোর-কিশোরী ক্লাব পরিচালনার জন্য ১জন সুপার ভাইজার নিয়োজিত রয়েছে। ক্লাব গুলোতে সংগীত, আবৃত্তি সহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সাংস্কৃতিকপরিমন্ডল গড়ে তুলে আত্মনির্ভরশীল ও দক্ষ মানব সম্পদে রূপান্তর করার প্রত্যয়ে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে এই কিশোর-কিশোরী ক্লাব। ১০ বছর থেকে ১৯ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের কিশোর-কিশোরী ক্লাবে প্রশিক্ষন দেয়া হয়। সপ্তাহের দুই দিন শুক্রবার ও শনিবার ক্লাশ হয়। প্রতিটি ক্লাবে ২০জন ছাত্রী ও ১০জন ছাত্র রয়েছে। প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষনের বিরতির সময় নাস্তা বাবদ ২৩ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। সারা দেশেই কিশোর-কিশোরী ক্লাবের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। যে কার্যক্রমের মধ্য দিয়েই পরিবর্তনের ধারক বা চেঞ্জ এজেন্ট হিসেবে কিশোর-কিশোরী ও নারীদের প্রতি সহিংস আচরণের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধির ফলে সমাজ থেকে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি দূর হবে। সৃজনশীল ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের মাধ্যমে সমাজের বিভিন্নস্তরে এবং তৃণমূলে জেন্ডার বেইজড ভায়োলেন্স প্রতিরোধে সক্ষম করে তোলা, সেক্সুয়াল অ্যান্ড রিপ্রোডাক্টিভ হেলথ অ্যান্ড রাইটস (এসআরএইচআর) বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কিশোর-কিশোরীদের অবস্থানকে দৃঢ় করাই দেশজুড়ে স্থাপিত কিশোর-কিশোরী ক্লাবের উদ্দেশ্য। এ বিষয়ে আদমদীঘি উপজেলা মহিলা বিষয়ক অফিসার বরুন কুমার পাল জানান, জেন্ডার ভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে সমাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে কিশোর-কিশোরীদের জন্য কর্মকৌশল গ্রহণ করতে হবে। যাতে সমাজের প্রত্যাশিত পরিবর্তন ঘটে। আর এসব ক্লাবের মাধ্যমে পরিচালিত বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কাজে লাগিয়ে কিশোর-কিশোরীরা নিজেদের সচেতন করে গড়ে তুলতে পারবে। এছাড়া ইভটিজিং বন্ধ, বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ, জন্মনিবন্ধন, বিবাহ নিবন্ধন, যৌতুক প্রতিরোধ, শিশু অধিকার, নারী অধিকার, যৌন নির্যাতন ওনিপীড়ন প্রতিরোধ সহ ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বিয়য়েও ক্লাব গুলোতে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কিশোর-কিশোরীদেরসচেতন করা হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার টুকটুক তালুকদার বলেন, সমাজের বিভিন্ন স্তরে এবং তৃণমূলে কিশোর-কিশোরীরা জেন্ডার বৈষম্য, সেক্সুয়াল হেরেজমেন্ট রোধে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একটি বিশেষ প্রকল্প এটি। এ প্রকল্পে সমস্যার প্রতিকার ও প্রতিরোধে কিশোর-কিশোরীদের সচেতনতা বৃদ্ধি এবং নারীদের আয় বর্ধক কার্যক্রমের আওতায় আনার জন্য প্রত্যন্ত অঞ্চলে কিশোর-কিশোরী ক্লাব প্রকল্পবাস্তবায়ন করা হয়। সংগীত, আবৃত্তি সহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক পরিমন্ডল গড়ে তুলেআত্মনির্ভশীল ও দক্ষ মানব সম্পদে রূপান্তর করার দৃঢ় প্রত্যয়ে দেশের তৃণমূল পর্যায়ে প্রান্তিক কিশোর-কিশোরীদের সম্পর্ককে সুদৃঢ় করার মাধ্যমে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনয়নের কার্যক্রম চলছে।