কর্মক্ষেত্রে বা ব্যক্তিগত জীবনে মানসিক অবসাদ এবং উদ্বেগের মুখোমুখি হয়েছেন, এমন মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়। কিন্তু এই বিষয়ে কথা বলার মানুষ থাকলেও এখনও সচেতনতার অভাব রয়ে গিয়েছে। সাধারণ কিছু লক্ষণ যা দেখে প্রাথমিক ভাবে ক্লান্তি মনে হলেও, পরবর্তী কালে সেখান থেকেই গভীর সমস্যার সূত্রপাত হতে পারে। মনোবিদদের মতে, ক্লান্তি বাহ্যিক বিষয় হলেও উদ্বেগ কিন্তু পুরোপুরি মনের অন্তঃস্থলের জটিল সমস্যা। দুটি ক্ষেত্রেই লক্ষণগুলি অনেকটা এক রকম। তাই চটজলদি বুঝে ওঠা সম্ভব নয়। বাহ্যিক কিছু সমস্যা ছাড়াও শরীরে কিছু পুষ্টির অভাব থাকলে কিন্তু উদ্বেগ বাড়তে পারে।
শরীরে কোন কোন পুষ্টির অভাবে বাড়তে পারে উদ্বেগ? ১) ভিটামিন ডি এবং কে: শরীরে ভিটামিন ডি এবং ভিটামিন কে-এর অভাবে বাড়তে পারে মানসিক চাপ। প্রাকৃতিক ভাবে এই দুই ভিটামিন তৈরির উৎস হল সূর্যের আলো। পর্যাপ্ত রোদ গায়ে না লাগলে এই দুই ভিটামিন স্বাভাবিক ভাবে শরীরে তৈরি হতে পারে না।
২) জিঙ্ক এবং তামা: জিঙ্ক এবং তামার মতো দুটি যৌগ মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ ভাবে প্রয়োজনীয়। উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণে এই দুটি যৌগের ভূমিকাও কম নয়। শরীরে এই দুটি যৌগের মাত্রা ঠিক আছে কি না, তা জানার জন্য নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
৩) ম্যাগনেশিয়াম: মানসিক অবসাদের আরও একটি কারণ হতে পারে শরীরে ম্যাগনেসিয়ামের ঘাটতি। কুমড়োর বীজ, সূর্যমুখী ফুলের বীজ, তিসির বীজ ছাড়াও প্রতি দিন বিভিন্ন রকমের বাদাম খেলেও পর্যাপ্ত ম্যাগনেশিয়াম পাওয়া যায়।
৪) ওমেগা৩ ফ্যাটি অ্যাসিড: মনোবিদদের মতে, শরীরে এই যৌগের অভাব থাকলে আত্মহত্যা করার প্রবণতা বাড়তে পারে। তাই প্রতি দিন খাবারের তালিকায় সামুদ্রিক মাছ, বিভিন্ন রকমের বাদাম রাখতেই হবে।
৫) ভিটামিন বি কমপ্লেক্স: মন ভাল রাখে এমন কিছু হরমোন, যেমন সেরোটোনিন, ডোপামাইনের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স। তাই এই যৌগের অভাব যেন শরীরে না থাকে। কোন কোন খাবার উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে? ১) হলুদ: গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, হলুদে থাকা ‘কারকিউমিন’ নামক যৌগটি মস্তিষ্কের স্নায়ুর স্বাস্থ্যরক্ষায় যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। টানা ৮ সপ্তাহ ধরে হলুদ খেলে বয়সকালে ডিমেনশিয়াতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়।
২) ডার্ক চকোলেট: মাঝেমধ্যেই উদ্বেগে ভোগেন এমন ১৪ হাজার মানুষের উপর সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গিয়েছে, তৎক্ষণাৎ ডার্ক চকোলেট তাদের মানসিক ভাবে ভারাক্রান্ত অবস্থা কাটিয়ে তুলতে পারে। ৩) ইয়োগার্ট: প্রোবায়োটিকযুক্ত খাবারে এমন অনেক স্বাস্থ্যকর ব্যাক্টেরিয়া থাকে, যা পেটের সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী।